প্রমাণ সংগ্রহে ব্যর্থ পুলিশ, কড়েয়া গণধর্ষণ মামলায় ১১ বছর পর বেকসুর খালাস ৩
হিন্দুস্তান টাইমস | ১৬ জুলাই ২০২৫
সাড়ে তিন বছরের শিশুকে যৌন নির্যাতন, ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই ৩ মাস পর ধৃত যুব এক দশকের বেশি সময় ধরে চলা মামলায় চাঞ্চল্যকর রায় দিল আলিপুর আদালত। ২০১৪ সালের কড়েয়া গণধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত তিন যুবককে প্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস দিল আদালত। তদন্তে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ত্রুটি থাকায় দোষীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি বলে অভিযোগ নির্যাতিতার আইনজীবীদের।
বিচারক রায়ে জানান, যে গাড়িতে ধর্ষণের অভিযোগ ছিল, তা বাজেয়াপ্ত করতে পারেনি পুলিশ। ঘটনাস্থলের কোনও ছবি তোলা হয়নি, এমনকি ফরেন্সিক রিপোর্টও সঠিকভাবে আদালতে উপস্থাপন করা যায়নি। বিচারক স্পষ্ট ভাষায় বলেন, তদন্তে গাফিলতির কারণেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত প্রমাণ উপস্থাপন করা সম্ভব হয়নি।
ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৪ সালের ২০ জুন রাতে। নির্যাতিতা মহিলা জানান, তিনি কড়েয়ার বন্দেল গেট এলাকা থেকে রুটি কিনতে বেরিয়েছিলেন। সেই সময় তিন যুবক জোর করে তাঁকে গাড়িতে তুলে বন্দুক দেখিয়ে ধর্ষণ করে এবং পরে রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যায়। মামলার প্রধান অভিযুক্ত পরে গ্রেফতার হলেও জামিনে মুক্তি পায়। অভিযোগ, জামিনে ছাড়া পেয়ে সে নির্যাতিতার এক আত্মীয়াকেও ধর্ষণ করে। এরপর ফের তাকে গ্রেফতার করা হয়।
সরকারি আইনজীবী আদালতে জানান, পুলিশের তরফে তদন্তে একাধিক ঘাটতি রয়েছে ঘটনাস্থলের ছবি, গাড়ি বাজেয়াপ্ত, ফরেন্সিক প্রমাণ সংগ্রহ সব কিছুতেই ঘোর গাফিলতি ছিল। তাঁর বক্তব্য, এ ধরনের স্পর্শকাতর মামলায় অভিজ্ঞ ও সিনিয়র অফিসারের তত্ত্বাবধানে তদন্ত হওয়া উচিত ছিল।
এই রায়ের পর নির্যাতিতা জানিয়েছেন, তিনি রায় মেনে নিতে পারছেন না। নিজেকে নিরাপত্তাহীন বলে বোধ করছেন তিনি। তাঁর আশঙ্কা, অভিযুক্তরা জেল থেকে বেরিয়ে এসে আবারও তাঁকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতে পারে। তাই তিনি উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন। এই রায়কে কেন্দ্র করে পুলিশের তদন্ত প্রক্রিয়া ও প্রমাণ সংগ্রহের দক্ষতা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। সমাজকর্মী ও মহিলা সংগঠনগুলি দাবি তুলেছে, এ ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে যাতে অপরাধীরা আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে যেতে না পারে, তার জন্য আরও পেশাদার, নিরপেক্ষ ও প্রযুক্তিনির্ভর তদন্তের ব্যবস্থা করতে হবে।