• নিম্নমানের সার, বেচাকেনায় নিষেধাজ্ঞা জারি কৃষিদপ্তরের
    বর্তমান | ১৭ জুলাই ২০২৫
  • সংবাদদাতা, ইসলামপুর: একটি কোম্পানির নিম্নমানের রাসায়নিক সার সরবরাহের হদিশ মিলেছে উত্তর দিনাজপুরে। ল্যাব টেস্টে নিম্নমান প্রমাণ হতেই ওই সার চাষিদের কাছে বিক্রি না করার নির্দেশ দিয়েছে কৃষিদপ্তর। 

    কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত মাসের শেষে স্টেশনের রেক পয়েন্টে একটি মালগাড়িতে দুই রকমের সিঙ্গেল সুপার ফসফেট (এসএসপি) রাসায়নিক সার এসেছিল। জেলার বিভিন্ন ডিলার ও বিক্রেতারা সেখান থেকে সার সংগ্রহ করেছেন। জেলা কৃষি আধিকারিক প্রিয়নাথ দাসের নেতৃত্বে ইসলামপুর মহকুমা কৃষি দপ্তরের দুই আধিকারিক ওই সারের গুণগতমান যাচাই করার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবরেটরিতে পাঠিয়েছিলেন। সেই নমুনা পরীক্ষার পর রিপোর্ট দেখে চক্ষু চড়কগাছ আধিকারিকদের। রিপোর্ট অনুসারে ওই রাসায়নিক সার অত্যন্ত নিম্নমানের। জমিতে ব্যবহার করে ভালো ফল পাবেন না চাষিরা বলে মত বিশেষজ্ঞদের। তাই সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে সমস্ত ধরনের পাইকারি এবং খুচরো রাসায়নিক সার বিক্রেতাদের বলা হয়েছে যাতে চাষিদের কাছে বিক্রি করা না হয়।

    কৃষি দপ্তরের জেলা অধিকারিক বলেন, চাষিরা যাতে গুণমান সম্পন্ন সার পান, সেদিকে আমাদের নজর আছে। ২২ জুন রেক পয়েন্ট থেকে আমরা একটি কোম্পানির সারের নমুনা সংগ্রহ করে ভিন জেলার একটি ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছিলাম। রিপোর্টে বলা হয়েছে ওই সার অত্যন্ত নিম্নমানের। দু’রকমের সার মিলিয়ে মোট ৯৮১ মেট্রিকটন এসএসপি নিম্নমানের। ওই সার যাতে চাষিদের কাছে বিক্রি করা না হয়, সেবিষয়ে বিক্রেতাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

    কৃষি দপ্তরের জেলা অধিকারিকের বক্তব্য, একাধিক কোম্পানি এসএসপি সার তৈরি করে। তবে আমরা যে কোম্পানির, যে ব্যাচ নম্বরের সারের নমুনা সংগ্রহ করেছিলাম এবং নিম্নমানের রিপোর্ট এসেছে, কেবলমাত্র সেই সারই বিক্রি বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি রাজ্যে জানানো হয়েছে। বাকি পদক্ষেপ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নেবে।

    দপ্তর সূত্রে খবর,এসএসপি’র পরিমাণ ১৬ শতাংশ থাকার কথা। কিন্তু পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, পাঁচ, চার, আট কিংবা ১০ শতাংশ আছে। সারের নমুনা সংগ্রহ আগেও হতো। তবে তখন সেটা ডিলার কিংবা খুচরো দোকান থেকে। চলতি অর্থবর্ষে রেক পয়েন্টে থেকেই নমুনা সংগ্রহ করার নির্দেশ এসেছে। প্রিয়নাথবাবু বলেন, আটটির মধ্যে চারটি রেক থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম দুটির ক্ষেত্রে গুণমান ঠিকই ছিল। তৃতীয়টিতে  নিম্নমান পাওয়া গিয়েছে। বুধবারও ডালখোলা স্টেশনের একটি রেক থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।

    ইসলামপুর মহকুমা সহ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) মহফুজ আহমেদ বলেন, যেসমস্ত দোকানে নিম্নমানের সার মজুত আছে, সেখানে গিয়ে সেই  বস্তাগুলিকে সিল করে রাখা হচ্ছে। যাতে তা বিক্রি করতে না পারেন ব্যবসায়ীরা। চাষিদের কাছে যাতে কোনও ভাবেই নিম্নমানের সার না যায়, সেবিষয়ে আমরা তৎপর। নিয়মিত নমুনা সংগ্রহের কাজ চলছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)