নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: ধারালো ছুরি দিয়ে গলার নলি কেটে স্ত্রীকে খুন করে আত্মঘাতী এক প্রৌঢ়। জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া খড়িয়া পঞ্চায়েতের গদাধর কলোনি এলাকার এই ঘটনায় আলোড়ন ছড়িয়েছে। বুধবার সকালে বাড়ি থেকে ওই দম্পতির নিথর দেহ উদ্ধার করে পুলিস। মৃতদের নাম সন্তোষ বর্মন (৫৫) ও নীলা বর্মন (৪৯)। কিছুদিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন ওই প্রৌঢ়। স্ত্রীকে সন্দেহ করতেন। তারই জেরে এই ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দম্পতির দেহ উদ্ধার করে পুলিস জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের অধীন সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পাঠায়।
জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আইসি সঞ্জয় দত্ত বলেন, বুধবার সকালে খড়িয়া পঞ্চায়েতের গদাধর কলোনি থেকে এক প্রৌঢ় ও তাঁর স্ত্রীর দেহ উদ্ধার হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, গলার নলি কেটে স্ত্রীকে খুনের পর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই প্রৌঢ়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
মৃত দম্পতির তিন ছেলে। বড় ছেলের বয়স ২৫ বছর। বাকি দুই ছেলে ২২ বছর ও ১৯ বছরের। তাঁরা পাশের ঘরে ঘুমোলেও কিছুই টের পাননি। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য রত্না ধর বলেন, এদিন সকালে কাজে যাওয়ার আগে ছোট ছেলে মাকে ডাকতে যায়। দরজা খুলে ঘরে ঢুকতেই বাবা-মাকে ওই অবস্থায় দেখে চিৎকার করে ওঠে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিসকে খবর দিলে দেহ দু’টি উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
খড়িয়া পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মনোজ ঘোষ বলেন, খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। স্ত্রীর দেহ খাটে ছিল। ফল কাটার ছুরি দিয়ে তাঁর গলার নলি কাটা হয়েছে। রক্তে ভেসে গিয়েছিল বিছানা। পাশেই প্যান্ডেলে বাঁশ বাঁধার কাপড়ে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় স্বামীকে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সন্তোষ গাছ কাটার কাজ করতেন। মাস ছ’য়েক আগে গাছ কাটতে গিয়ে পড়ে যান তিনি। তারপর থেকে তেমন কাজকর্ম করতেন না। দিনদিন মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছিলেন। ছেলেরা অবশ্য তাঁর চিকিৎসা করান। মাস দু’য়েক ধরে মাঝেমধ্যেই দা, বটির মতো ধারালো অস্ত্র নিয়ে বাড়িতে ঘোরাঘুরি করতেন। কখনও দড়ি নিয়ে গাছে বাঁধতেন। এসব দেখে পরিবারের লোকজন সন্তোষের উপর নজর রাখতেন সারাক্ষণ। কিন্তু ঠাকুরঘরে থাকা ফল কাটার ছুরি দিয়ে যে তিনি এমন ঘটনা ঘটাবেন, তা ভাবতে পারেননি ওই প্রৌঢ়ের ছেলেরা। মৃতদের বাড়ির সামনে ভিড়। - নিজস্ব চিত্র।