• গয়না বন্ধক রেখে, ঋণ করেও পাঞ্জাবে জেলবন্দি শ্রমিকদের ছাড়াতে ব্যর্থ পরিবার
    বর্তমান | ১৭ জুলাই ২০২৫
  • সংবাদদাতা, চাঁচল: বাংলাদেশি সন্দেহে বাঙালিদের ভিনরাজ্যে নিগ্রহের প্রতিবাদে পথে নেমেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে, ‘আপ’ শাসিত পাঞ্জাবে পশুহত্যা সহ পাঁচটি ধারায় মামলায় লুধিয়ানা সেন্ট্রাল জেলে বন্দি মালদহ চাঁচলের ছয় শ্রমিককে নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ নেই পরিবারগুলির। বাংলাভাষী শ্রমিকদের জেলবন্দি হওয়ার খবরে কার্যত ভেঙে পড়েছে বেলপুকুর ও ধঞ্জনা গ্রামের ছ’টি পরিবার। কারণ সেখান থেকে ছাড়িয়ে আনার মতো আর্থিক সামর্থ্য পরিবারগুলির নেই। কেউ গয়না বন্ধক রেখে গিয়েছিলেন, কেউ ধারদেনা করে। কিন্ত আইনজীবীকে ফি দেওয়ার টাকাও আর তাঁদের কাছে নেই। এই অবস্থায় বুধবার আশ্বস্ত করতে পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়িতে যায় মালদহ জেলা পরিযায়ী শ্রমিক ওয়েলফেয়ার কমিটি।

    পুলিস ও পরিবার সূত্রে খবর, তিন সপ্তাহ আগে জাকির হোসেন, রাইহান আলম, কুরবান আলি, আজম আলি, মিনজার আলি ও মুক্তার আলম কাজের খোঁজে পাঞ্জাবে যান। সেখানে লুধিয়ানায় একটি পোল্ট্রিফার্মে মুরগির মাংস প্যাকেজিংয়ের কাজ করছিলেন তাঁরা। অভিযোগ, সেই কারখানায় তারা অন্য মাংস প্যাক করছেন সন্দেহ করে স্থানীয় বাসিন্দারা ছয় শ্রমিকের উপর গণপ্রহার চালায়। ২ জুলাই লুধিয়ানা পুলিস গিয়ে এই ছয় শ্রমিককে গ্রেপ্তার করে। কুরবান নাবালক হওয়ায় তাকে হোমে রাখা হয়েছে।

    ধৃত কুরবান আলির এক আত্মীয় মনোয়ারুল আলম লুধিয়ানার সেন্ট্রাল জেলে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। 

    তিনি বলেন, মারধরের জেরে ভাইয়ের মুখ ও চোখে কালশিটে দাগ পড়েছে। ছয় পরিবারের লোকজন লুধিয়ানা গিয়েছিলাম। আইনজীবীর প্রয়োজনীয় সাহায্য পাওয়া যায়নি। সব টাকা শেষ। ধৃত রাইহানের মা রুমা খাতুন বলেন, ছেলেকে ছাড়াতে গিয়েছিলেন স্বামী। কিন্তু কাজ হয়নি। টাকাও শেষ। সরকার পাশে না দাঁড়ালে কী হবে জানি না। খবর পেয়ে বেলপুকুর গ্রামে যান মালদহ জেলা ওয়েলফেয়ার কমিটির সদস্য রফিকুল হোসেন। তিনি বলেন, সবাইকে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি রাজ্য পরিযায়ী শ্রমিক কমিটির চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলামকে জানানো হয়েছে। চাঁচল ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহসভাপতি জাকির হোসেন বলেন, পরিবারগুলির অবস্থা শোচনীয়। তাদের প্রাথমিকভাবে ত্রাণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জেলাশাসক নীতিন সিঙ্ঘানিয়া জানান, প্রশাসনের তরফ থেকে বিষয়টি দেখা হচ্ছে।  কান্নায় ভেঙে পড়েছে পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবার। নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)