• মমতার নির্দেশে ঘাটালে প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি, ত্রাণ পেতে লম্বা লাইন
    বর্তমান | ১৭ জুলাই ২০২৫
  • রাজদীপ গোস্বামী  ঘাটাল

    লাগাতার বৃষ্টির পাশাপাশি বিভিন্ন জলাধার থেকে বিপুল পরিমাণে জল ছাড়া অব্যহত রয়েছে। তাতেই বিভিন্ন নদীর জলস্তর বিপদ সীমা ছুঁয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ঘাটাল মহকুমা নিয়ে উদ্বিঘ্ন প্রশাসন। সেই কথা মাথায় রেখে বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ঘাটাল পরিদর্শন করলেন রাজ্যের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি সুরেন্দ্র গুপ্তা, মন্ত্রী মানস ভূঁইয়া, জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি, পুলিস সুপার ধৃতিমান সরকার, জেলার সিএমওএইচ সৌম্যশঙ্কর ষড়ঙ্গী সহ প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ আধিকারিক ও জন প্রতিনিধিরা। 

    এদিন তাঁরা এলাকা পরিদর্শনের পাশাপাশি ঘাটালের বিভিন্ন এলাকার মানুষের হাতে ত্রাণ তুলে দেন। প্রশাসনের আধিকারিকরা জানান, নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় ঘাটালের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। ফলে এখনও পর্যন্ত প্রায় আড়াই হাজার মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রায় ১২০০ জনকে ঘাটাল রিলিফ ক্যাম্পে থাকার ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। বন্যা পরিস্থিতির জেরে দেড় হাজারের বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার মধ্যে ১৩৮টি বাড়ি পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। ৫৬টি মেডিক্যাল ক্যাম্প খোলা হয়েছে। সেই সব শিবির থেকে দুর্গত মানুষকে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য কর্মীদের তৎপরতায় ২৪৫ জন প্রসূতিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। 

    এদিন প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে গোটা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রশাসনের আধিকারিকরা সর্বদা তৎপর রয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ রয়েছে, একজন মানুষও যাতে সমস্যায় না পড়েন। রাজ্যের মন্ত্রী মানসবাবু বলেন, নদীর জল দ্রুত বাড়ছে। তবে প্রশাসনের আধিকারিকদের ওখানে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাতেও নজরদারি চালানো হচ্ছে। নদীর জলস্তর ‘ডেঞ্জার জোনে’ প্রবেশ করেছে। কেউ আতঙ্কিত হবেন না। কোনও এলাকার মানুষ অসুবিধায় পড়লে প্রশাসন সেই এলাকায় সঙ্গে সঙ্গে যাচ্ছে। 

    প্রসঙ্গত, গত ১৮ জুন থেকেই লাগাতার বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টির জেরে প্রথমে গড়বেতা-১ ও ২ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। তবে ওই এলাকা থেকে জল তাড়াতাড়ি নেমে গেলেও সমস্যায় পড়ে ঘাটাল মহকুমার মানুষ। কিন্তু, জুন মাসের শেষের দিকে দিন কয়েক বৃষ্টি না হওয়ায় জল নামতে শুরু করেছিল ঠিকই। পরে ফের প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়। জানা গিয়েছে, বর্তমানে ঘাটাল পুরসভার ১৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১২টি ওয়ার্ড জলমগ্ন রয়েছে। এছাড়া খড়ার পুরসভার ৪টি ওয়ার্ড একেবারে জলমগ্ন হয়ে গিয়েছে। অপরদিকে ঘাটাল ব্লকের ১২টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মধ্যে ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েত জলমগ্ন হয়ে পড়ায় মানুষ সমস্যায় পড়েছেন। 

    একইসঙ্গে বন্যা পরিস্থিতির জেরে দাসপুর-১ ব্লকের একটি ও চন্দ্রকোণা-১ ব্লকের ২টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় মানুষ সমস্যায় পড়েছেন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝুমি, শীলাবতী, কংসাবতী ও কেঠিয়া খালের জল দ্বিগুণ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিন প্রশাসনের আধিকারিক ও জন প্রতিনিধিরা প্রথমে ঘাটালের মহকুমা শাসকের কার্যালয়ে বৈঠক করেন। পরে তাঁরা ঘোলসাই এলাকা পরিদর্শনে যান। এদিন ঘোলসাই এলাকার বাসিন্দা রীনা খাঁ, সোমা দোলই বলেন, রাস্তায় এক কোমর জল। সেই জল ঠেলে ত্রাণ নিতে এসেছি। ত্রাণ পেয়ে খুবই উপকার হল।
  • Link to this news (বর্তমান)