• ঝাড়খণ্ডের গালুডির জলেই বানভাসি ঝাড়গ্রামের মালঞ্চ
    বর্তমান | ১৭ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম:  সুবর্ণরেখা নদী ফের ফুঁসতে শুরু করেছে। বুধবার সকালে ঝাড়খন্ডের গালুডি ড্যাম থেকে ১ লক্ষ ৪৭ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। জলস্রোতে গোপীবলভপুর -২ ব্লকের মালঞ্চ গ্ৰামের হেল্থ সেন্টার সহ পাড়ের  বিস্তৃর্ণ এলাকা তলিয়ে গিয়েছে। নদী লাগোয়া গ্ৰাম বাসীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পাড় ভাঙনের জেরে বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। 

    রাজ্যের সেচ মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া বলেন, গ্ৰামটির বিষয়ে অবগত আছি। ধ্বস নামার খবর পেয়েই সুপারিনটেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার আশীষ দত্তকে ওই এলাকায় পাঠানো হয়েছে। টেম্পোরারি কোন কাজ করে ধ্বস রোধ করা যাবেনা। বালিমাটি থাকার কারণে পাড়ে দ্রুত ধ্বস নামছে। স্থায়ী পরিকাঠামো গড়ে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা চলছে। সুবর্ণরেখা নদী দিন দিন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে। নদীর একদিকে পাড় বাঁধানো হলে অন্য দিক ধ্বসিয়ে দিচ্ছে। বালিমাটির নরম পাড়ে শালবল্লা , পাথর টিকিয়ে রাখা সম্ভব  হচ্ছেনা। গোপীবল্লভপুর, নয়াগ্ৰামের নদীতীরবর্তী জনবসতি এলাকা এখন নদীর গর্ভে তলিয়ে যাওয়ার মুখে পড়েছে। গোপীবল্লভপুর -২ ব্লকের মালঞ্চ গ্ৰামের খুব কাছে নদী চলে এসেছে। গত মঙ্গলবার রাত থেকে খড়িপাড়ায়া থেকে মালঞ্চ শিবমন্দির পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকা নদী গর্ভে চলে গিয়েছে। পাড় ভেঙে স্থানীয় হেল্থ সেন্টার ধ্বসে গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের নিকটবর্তী নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। নদী কিছুটা এগোলে হাজারের উপর বাসিন্দার গ্ৰামটি তলিয়ে যাবে। রাজ্যের সেচ মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া সপ্তাহ খানেক আগে গ্ৰামটি পরিদর্শনে এসেছিলেন। জেলাশাসক সহ সেচ দপ্তরের আধিকারিকরাও উপস্থিত ছিলেন। গ্ৰামেই সেচমন্ত্রী জরুরী ভিত্তিতে প্রাথমিক পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশও দিয়েছিলেন। যদিও সেই কাজে সেচ দপ্তরকে বেগ পেতে হচ্ছে। গ্ৰামবাসীরা জরুরী ভিত্তিতে পাড় বাঁধানোর দাবি জানাচ্ছেন । গ্ৰামের বাসিন্দা রাজকুমার রানা এদিন বলেন, দুই বছর আগেও নদী পাঁচশো ফুট দূরে ছিল। নদী এখন আমার বাড়ির দশফুটের কাছে চলে এসেছে । নদীর দক্ষিণ অংশে পাড় বাঁধানোর পর থেকেই জলস্রোত উত্তরদিক দিকে ঘেষে বয়তে শুরু করেছে। সেচমন্ত্রী স্বয়ং গ্ৰামে এসে ব্যাবস্থা নেওয়ার কথা বলেছিলেন। তারপরেও কোন কাজ হয়নি। আতঙ্কের মধ্যে এখন দিন কাটছে। গৃহবধূ সুষামা রানা বলেন , নদী বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ছে।  আমাদের বাড়ি যেকোনো মুহূর্তে নদী গর্ভে তলিয়ে যেতে পারে। নদী থেকে কিছুটা দূরে একটি ক্লাবে উঠে এসেছি।  গ্ৰামের অপর এক বাসিন্দা বলেন, নদীর পাড় যেভাবে ভাঙছে তাতে পুরো গ্ৰামটাই এখন নদীর গ্ৰাসে চলে যাবার মুখে। প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ নিক এটাই চাইছি। কুলিয়ানা গ্ৰাম পঞ্চায়েতের প্রধান সাবিত্রী মুদী বলেন, গতকাল সন্ধে বেলা থেকেই নদী লাগোয়া বাসিন্দাদের সতর্ক করা হচ্ছে। কয়েকজন বাসিন্দকে গ্ৰামের  স্লেফ হেল্প মহিলাদের একটি ভবনে নিয়ে আসা হয়েছে। খাবারের ব্যাবস্থা করা হয়েছে। নদীর পাড় বাঁধানো না গেলে এবার পুরো গ্ৰাম তলিয়ে যেতে পারে। সেচ দপ্তরের এক আধিকারিক এদিন বলেন, গালুডি থেকে দফায় দফায় জল ছাড়া হচ্ছে। যার জের পাড় ভাঙন বেড়ে গিয়েছে। পরিস্থিতির কথা সেচ মন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। এদিন সেচ দপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররা এলাকা পরিদর্শন করেছেন। দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)