নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: নামী ব্র্যান্ডের সামগ্রী বিক্রি করা হচ্ছে খুব অল্প দামে। সস্তার জিনিস হলেও ডিজাইন ও প্যাকেজিং হুবহু এক। ঝলকে দেখলে খুব বেশি পার্থক্য চোখে পড়বে না। কিন্তু, পণ্যগুলি আদৌ নামী ব্র্যান্ডের নয়। জেলাজুড়ে এভাবেই ভুয়ো সামগ্রীকে নামী ব্র্যান্ডের মোড়কে বিক্রি করা হচ্ছে সস্তায়। ব্র্যান্ডেড জামাকাপড়ের পাশাপাশি বিভিন্ন যন্ত্রের পার্টস, স্টিল সহ সবকিছুরই ‘কপি কাট’ বাজারে বিক্রি করছেন এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী। কোম্পানির সামগ্রী সস্তায় মেলায় তার চাহিদাও ব্যাপক সাধারণ মানুষের মধ্যে। কখনো আবার সেই ভুয়ো প্রোডাক্টকে আসল দামেও বিক্রি করা হচ্ছে। নামী ব্র্যান্ডের আড়ালে এই ভুয়ো প্রোডাক্ট বিক্রি করে জেলাজুড়ে ক্রেতাদেরকে প্রতারিত করছেন ওই ব্যবসায়ীরা। এবার সেই অবৈধ ব্যবসা উপর নজর পড়েছে পুলিসের। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি কপিরাইট কেস করা হয়েছে। জেলার বাকি অংশের পাশাপাশি কৃষ্ণনগর শহরেও এইভাবে ভুয়ো প্রোডাক্টকে ব্র্যান্ডেড কোম্পানি দেখিয়ে বোকা বানানো হচ্ছে ক্রেতাদের।
কৃষ্ণনগর পুলিস জেলার অতিরিক্ত পুলিস সুপার (হেড কোয়ার্টার) মাকওয়ানা মিটকুমার সঞ্জয়কুমার বলেন, বেশ কয়েকটি কপিরাইট কেস করা হয়েছে। নামী ব্র্যান্ডকে ব্যবহার করে বিভিন্ন ভুয়ো সামগ্রী অবৈধভাবে বিক্রি করা হচ্ছে। আমাদের কাছে অভিযোগ আসছিল। সেইমতো জেলার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানো হয়েছে। উদ্ধার হওয়া সামগ্রীর নমুনা সংশ্লিষ্ট কোম্পানির কাছে পাঠানো হচ্ছে। আগামী দিনেও এই অভিযান চলবে।
অনেক সময় দেখা যায় বিভিন্ন শপিংমল ও দোকানে নামীদামি বিদেশি কোম্পানির জামা কাপড় মিলছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়। অথচ বাস্তবে তার দাম ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা। সেই জামার গায়েও কোম্পানির লোগো সাঁটানো থাকে। কিন্তু তাতে কোম্পানির প্রকৃত লোগোর সঙ্গে সূক্ষ্ম পার্থক্য থাকে। যা শপিং মল বা দোকানের আলোয় কেনাকাটার তাড়াহুড়োয় ক্রেতাদের চোখে না। এমনকী ডিজাইনেও খুব বেশি হেরফের থাকে না। সেই সুযোগকেই কাজে লাগাচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। তাঁরা সেই সমস্ত জামা কাপড়ের গুণগতমান ভালো বলেই দাবি করেন। কিন্তু বাড়িতে এসে বেশ কয়েকবার ধোয়ার পর দেখা যায়, রঙ উঠতে শুরু করেছে। সেই নিয়েই সম্প্রতি জেলা পুলিসের কাছে একাধিক অভিযোগ আসছিল।
পুলিসের তরফ থেকে বিভিন্ন থানায় এলাকায় অভিযান শুরু হয়েছে। চাপড়া, নাকাশিপাড়া এলাকা মিলিয়ে মোট তিনটি কপিরাইট কেস হয়েছে। যেখানে একটি ব্র্যান্ডেড স্টিল কম্পানি এবং স্পেয়ার পার্টসের কোম্পানির ভুয়ো সামগ্রী বিক্রি করা হচ্ছিল। পুলিসের তরফ থেকে সেই সামগ্রীর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তা সংশ্লিষ্ট কোম্পানির কাছে পর্যবেক্ষণের জন্য পাঠানো হয়েছে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, কৃষ্ণনগর শহরেও জামাকাপড়ের এক ব্র্যান্ডেড কোম্পানির সামগ্রী নকল করে বিক্রি করা হচ্ছে। দাম সস্তা হওয়া সত্বেও লোকজন তা কোম্পানির জামা ভেবেই কিনছে। কিন্তু আদতে সেগুলো কোম্পানির জামাকাপড়ই নয়। এবার তার জন্য কৃষ্ণনগর শহরেও অভিযান চালানো হবে বলে জানা গিয়েছে।
কৃষ্ণনগর পুলিস জেলার এক আধিকারিক এর কথায়, ক্রেতাদের জিনিসপত্র কেনার সময় সচেতন হতে হবে। ব্যবসায়ীরা বললেই তা চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করা যাবে না। তা ভালোভাবে পরখ করে দেখতে হবে।