রামকুমার আচার্য, খানাকুল: মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে জলমগ্ন খানাকুলের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এলেন নবান্নের শীর্ষ কর্তারা। বুধবার খানাকুল-১ ও ২ ব্লকের কয়েকটি এলাকা তাঁরা ঘুরে দেখেন। তাঁরা খানাকুল-২ ব্লকের জগদীশতলা এলাকায় গেলে বাসিন্দারা ত্রাণ, জল নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। প্রশাসনের কর্তারা দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। নিম্নচাপের বৃষ্টি ও ডিভিসির ছাড়া জলে খানাকুলের একাংশ জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। অনেক জায়গাতেই রাস্তার উপর জল বইতে থাকায় বাসিন্দাদের যাতায়াতে সমস্যা হয়।
এদিন নবান্ন থেকে আসেন শিক্ষাদপ্তরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি বিনোদ কুমার, ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অভিষেককুমার তিওয়ারি। এছাড়া ছিলেন আরামবাগের সাংসদ মিতালি বাগ, হুগলির জেলাশাসক মুক্তা আর্য, হুগলি গ্রামীণের পুলিস সুপার কামনাশিস সেন প্রমুখ। তাঁরা খানাকুল-২ ব্লকের জগদীশতলা এলাকায় যান। সেখানে মায়াপুর গড়েরঘাট রাজ্য সড়কের একাংশের উপর দিয়ে জল বইছে। বাস যাতায়াত করলেও নৌকা চলতেও দেখা গিয়েছে। জগৎপুর পঞ্চায়েতের ধর্মতলা এলাকার বাসিন্দা কয়েকজন মহিলা প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁরা জানান, রূপনারায়ণ নদের জল গ্রামে ঢুকেছে। তারফলে রাস্তা ও টিউবওয়েলগুলি ডুবে রয়েছে। তাতে পানীয় জলের সমস্যা হচ্ছে। এছাড়া স্থানীয় বাসিন্দারা পারাপারের জন্য নৌকার দাবিও জানান। জেলাশাসক, সাংসদ তাঁদের আশ্বস্ত করেন। স্থানীয় বাসিন্দা রাজনন্দিনী দে বলেন, বাড়িতে বৃষ্টির জল পড়ছে। এলাকা জলমগ্নও হয়ে পড়েছে। ত্রিপল দেওয়ার জন্য প্রশাসনকে জানালাম।
বিনোদবাবু বলেন, বাসিন্দারা নৌকা ও জলের ব্যবস্থার অনুরোধ জানিয়েছেন। তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাসিন্দাদের যাতে কোনও ধরনের অসুবিধা না হয় প্রশাসন তা নিশ্চিত করছে। আপাতত খুব বেশি সমস্যা নেই।
সাংসদ বলেন, পর্যাপ্ত ত্রিপল রয়েছে। তা দুর্গতদের দেওয়া হবে। পানীয় জলের ব্যবস্থার জন্য ইতিমধ্যে বিশেষ গাড়ি এসে পৌঁছেছে। বাসিন্দাদের তা দেওয়া হবে। খানাকুল-২ বিডিও মহম্মদ জাকারিয়া বলেন, বেশ কিছু জায়গায় জল কমেছে। নিচু জায়গার একাংশে জল রয়েছে। ধান্যঘোরী, জগৎপুর ও মারোখানা পঞ্চায়েত এলাকায় তিনটি ত্রাণ শিবির চলছে। সেখানে দুর্গতদের খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
নবান্নের কর্তারা খানাকুল-১ ব্লকের সাতপৈঠা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যান। তাঁরা বাসিন্দাদের ত্রাণ, ত্রিপল বিলি করেন। সেখানে প্রায় ৫০টি পরিবারকে ত্রাণ ও খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। খানাকুল-১ বিডিও অরিন্দম মুখোপাধ্যায় বলেন, মঙ্গলবার রাত থেকেই কয়েকটি জায়গায় দুর্গতদের খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আপাতত সব জায়গায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রূপনারায়ণ নদ এখনও বিপদ সীমার উপর দিয়েই বইছে। আরও জল বাড়লে জলস্তর চরম সীমাও ছুঁয়ে ফেলতে পারে। এছাড়া দ্বারকেশ্বর নদ, দামোদর ও মুণ্ডেশ্বরীও ফুলে ফেঁপে রয়েছে। এদিন ডিভিসির তরফে ৫০ হাজার ৮৭৫ কিউসেক হারে জল ছাড়া হচ্ছে। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে প্রশাসন। বাঁধ নিয়েও সতর্ক রয়েছে সেচদপ্তর। -নিজস্ব চিত্র