কুণ্ডপুকুরের মাছ বাঁচাতে ক্লোরিন নয়, জল শোধনে ব্যবহার হবে ইউভি রশ্মি
বর্তমান | ১৭ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: জলে থাকা মাছ বাঁচাতে কালীঘাট মন্দিরের কুণ্ডপুকুরের জলের গুণগত মান বজায় রাখতে চায় কলকাতা পুরসভা। এ জন্য ক্লোরিনের বদলে আলট্রাভায়োলেট (ইউভি) রশ্মির সাহায্য নিতে চলেছে পুর কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে ভূগর্ভ থেকে তোলা জল কুণ্ডপুকুরে পড়ার আগে আয়রন মুক্ত করতেও বসানো হচ্ছে ফিল্টার।
এই কাজে খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা। এই টাকায় আগামী পাঁচ বছরের রক্ষণাবেক্ষণের খরচও ধরা আছে। খুব শীঘ্রই এ কাজে টেন্ডার ডাকা হবে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। কালীঘাট স্কাইওয়াকের উদ্বোধনে এসে মন্দির ঘুরে দেখার সময় কুণ্ডপুকুর দেখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, পুকুরের জল রিসাইকল করার। এর ফলে জল পরিশুদ্ধ থাকবে। নির্দেশ পাওয়ার পর সে কাজের পরিকল্পনা করে পুরসভা।
কালীঘাট মন্দির চত্বর সংস্কারের দায়িত্বে থাকা পুরকর্তারা জানিয়েছেন, আগে কুণ্ডপুকুর স্বাভাবিক পুকুরের মতো ছিল। নীচের অংশে ছিল মাটি। ফলে পাড় বাঁধানো থাকলেও মাটির সংস্পর্শে থাকার কারণে জল খারাপ হওয়ার আশঙ্কা কম ছিল। রিলায়েন্স সংস্থা কুণ্ডপুকুরের নীচের অংশ মার্বেল দিয়ে মুড়ে দিয়েছে। ফলে সুইমিং পুলের মতো হয়ে গিয়েছে পুকুরটি। তাই নির্দিষ্ট সময় অন্তর পুরনো জল বের করতে হবে। নতুন জল ভরতে হবে। অথবা ক্লোরিন দিয়ে জল পরিষ্কার রাখতে হবে। না হলে দীর্ঘদিন একই জল থাকলে তা মানুষের ব্যবহারের ফলে নোংরা হয়ে পড়ার আশঙ্কা। কিন্তু ক্লোরিন ব্যবহারের ক্ষেত্রে সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে পুকুরে থাকা মাছ। কালীঘাট টেম্পল কমিটি জানায়, পুকুরে প্রচুর মাছ রয়েছে। ফলে ক্লোরিন দিলে মাছ মরে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সে বিষয়ে ভাবনা চিন্তার পর ইউভি ফিল্টারের পরিকল্পনা করে পুরসভা। কুণ্ডপুকুরে জল দেওয়ার জন্য পাশে রয়েছে একটি ডিপ টিউবওয়েল বা গভীর নলকূপ। সেখান থেকে জল পাইপের মাধ্যমে পুকুরে দেওয়া হয়। সেই জায়গায় একটি আয়রন ফিল্টার লাগানোর পরিকল্পনা হয়েছে। যাতে মাটির তলার জল সরাসরি পুকুরে না পড়ে। এর ফলে আয়রন জমবে না। ফলে মাছেদের সমস্যা হবে না। এছাড়া যে পাইপলাইন দিয়ে জল পুকুরে ঢুকবে তার মুখে বসানো হবে আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মির ফিল্টার। যার মাধ্যমে জল জীবাণুমুক্ত হবে। তারপর অন্য একটি পাইপের মাধ্যমে জল বেরিয়ে যাবে। সেই জলই ফের ঘুরপথে আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মির দ্বারা ফিল্টার হয়ে ঢুকবে পুকুরে। এভাবেই চলবে রিসাইকল প্রক্রিয়া। যে কারণে কুণ্ডপুকুরের জলের শুদ্ধতা বজায় থাকবে।