• ৪৭ নাবালিকার বিয়ে রুখল প্রশাসন
    বর্তমান | ১৭ জুলাই ২০২৫
  • সংবাদদাতা, বনগাঁ: বাল্যবিবাহ রুখতে জিরো টলারেন্স নীতি। অনিয়মের খবর পেলেই তৎপর হয়েছে প্রশাসন। সবমিলিয়ে গত ছ’মাসে বনগাঁ মহকুমায় ৪৭ নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। 

    জানা গিয়েছে, বনগাঁ ব্লকে ৩০টি বাল্যবিবাহ বন্ধ করে সফলতা পেয়েছে প্রশাসন। বনগাঁ পুরসভা এলাকায় চলতি বছরে তিনটি বিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। বাগদা ব্লকে গত ছ’মাসে ১০ টি এবং গাইঘাটা ব্লকে চারটি বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হয়েছে। ব্লক, পুরসভা ও পুলিস প্রশাসন, এই তিন দপ্তরের সমন্বয়ে সাফল্য এসেছে বলে দাবি আধিকারিকদের। তবে অনেকের আক্ষেপ, সরকার একাধিক পদক্ষেপ নিলেও সকলের নজর এড়িয়ে বাল্যবিবাহ হয়ে চলেছে। কারণ অভিভাবকরা সচেতন নন। তাই এই সামাজিক ব্যাধি পুরোপুরি বন্ধ করা যাচ্ছে না। বাল্যবিবাহ সংগঠিত হওয়ার কারণ হিসেবে বেশ কয়েকটি কারণকে দায়ি করেছেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা। তাঁদের মতে, সাধারণভাবে ১৩-১৪ বছর বয়সে মেয়েদের মধ্যে পরিবর্তন আসে। সে বয়সে অনেকে প্রেমের জালে জড়িয়ে পড়ে। তারপর কিছুদিনের মধ্যে তা বিবাহের ঘটনায় গড়ায়। সন্তান কমবয়সে প্রেমে পড়লে পরিবার অনেক সময় মেনে নিতে পারে না। তখন তাঁরা তড়িঘড়ি অন্যত্র বিয়ে ঠিক করে ফেলেন। আবার আর্থিক কারণেও অনেক পরিবার ভালো পাত্রের সন্ধান পেলে মেয়ের ভবিষ্যতের নিশ্চয়তার কথা ভেবে বিয়ে দিয়ে দেন। এবং মেয়ের সম্মতি না থাকলেও বহু ক্ষেত্রে জোর করে বিয়ে দিয়ে দেন। এছাড়া ভালো কাজের প্রলোভন দেখিয়েও অনেকসময় বিয়ে করে নিয়ে যায় আড়কাঠিরা। তারপর নাবালিকাকে পাচার করে দেওয়া হয়। 

    বনগাঁ ব্লক চাইল্ড ম্যারেজ প্রিভেনশন দপ্তরের আধিকারিক সঞ্জয় পোদ্দার বলেন, ‘মূলত উঠতি বয়সে অনেকসময় ভুল সিদ্ধান্ত নেয় মেয়েরা। ফলে অনেকে প্রতারণার শিকার হয়। কিছু ক্ষেত্রে বাবা-মা আর্থিক অসহায়তার কারণেও অল্পবয়সে মেয়েদের বিয়ে ঠিক করে ফেলেন। তবে প্রশাসন এ সব ক্ষেত্রে বাল্যবিবাহ রোধ করতে সতর্ক থাকে। যদিও জানা গিয়েছে, গত ছ’মাসে বনগাঁ মহকুমায় টিনএজ মাদার হয়েছেন ৬৭১ জন। এঁদের বেশিরভাগের বয়স ১৮-১৯ বছর। এর পাশাপাশি একাধিক নাবালিকাও মা হয়েছে। বনগাঁ ব্লকে ৩১৫ জন টিনএজ মাদার আছেন। বাগদা ও গাইঘাটা ব্লকে এই সংখ্যা ১৭৬ ও ১৫৮। বনগাঁ পুরসভা এলাকায় টিনএজ মাদার হয়েছেন ২২ জন।
  • Link to this news (বর্তমান)