• এসএসসির নয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে হস্তক্ষেপ নয়, হাইকোর্টের রায়ে বাধা নেই অভিজ্ঞদের বাড়তি নম্বরে
    বর্তমান | ১৭ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কলকাতা হাইকোর্টে বড়সড় স্বস্তি পেল স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। নয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে হস্তক্ষেপ করল না ডিভিশন বেঞ্চ। হাইকোর্টের এই রায়ের ফলে অভিজ্ঞদের অতিরিক্ত ১০ নম্বর দেওয়ার ক্ষেত্রে আর কোনও বাধা রইল না। সেইসঙ্গে বিজ্ঞপ্তিতে বয়সের ক্ষেত্রে ছাড়ের যে কথা বলা হয়েছিল, বুধবারের রায়ে তাও স্বীকৃতি পেল। 

    ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের পর এসএসসিকে নয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারির নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই মতো বিজ্ঞপ্তি জারি করে এসএসসি। কিন্তু তারপরই বিজ্ঞপ্তির একাধিক অংশ তুলে ধরে মামলা দায়ের হয়েছিল হাইকোর্টে। সেসব আবেদনের মধ্যেই আদালত জানিয়ে দিয়েছিল, চিহ্নিত অযোগ্যদের বাদ রেখে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। এরপরও ওই বিজ্ঞপ্তির বাকি কিছু অংশ নিয়ে প্রশ্ন তুলে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মামলাকারীরা। তাঁদের দাবি ছিল, চাকরির অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে কেন আলাদা করে ১০ নম্বর দেওয়া হবে? পাশাপাশি নয়া নিয়োগবিধিতে শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রে একাধিক বদল নিয়েও আপত্তি জানানো হয়েছিল। বুধবার সেই সব আবেদন খারিজ করে দিয়েছে বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি স্মিতা দাস (দে)-র ডিভিশন বেঞ্চ। 

    গত সোমবার মামলার শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রেখেছিল ডিভিশন বেঞ্চ। মামলায় রাজ্যের হয়ে সওয়ালে অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত দাবি করেছিলেন, ২০১৬ সালের পর ২০১৯ সালে নিয়োগবিধি তৈরি করা হয়েছিল। এখনকার নিয়োগবিধি ২০২৫ সালের। ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের রায় ২০১৯ সালের নিয়োগবিধির পরে এসেছিল। তখন সেই বিধিকে কেউ চ্যালেঞ্জ করেনি। ফলে এই নিয়োগবিধিকে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না। করতে পারে না। তাছাড়া যে কোনও চাকরিতে অভিজ্ঞতাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রেও তাই শিক্ষকতার অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।  এসএসসি-র তরফে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি ছিল, কমিশনের আইনকে চ্যালেঞ্জ করা যায় না। কোন বিধি মেনে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে, তা নিয়ে কোনও নির্দেশ নেই। পাশাপাশি তিনি আরও দাবি করেছিলেন, ২০১৬ সালের বিধি মেনে বয়সে ছাড় দেওয়া কার্যত সম্ভব ছিল না। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে মান্যতা দিয়ে ওই বিধি সংশোধন করতেই হতো।

    অন্যদিকে, মামলাকারীদের আইনজীবী অনিন্দ্য মিত্র ও বিকাশ ভট্টাচার্যদের দাবি ছিল, এসএসসির ভুলেই এই পরিস্থিতি। ইচ্ছাকৃতভাবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ লঙ্ঘন করা হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্ট কোথাও বলে দেয়নি নতুন নিয়োগ শুরু হলে এসএসসি যোগ্যতামান বদল করতে পারবে। 

    উল্লেখ্য, নয়া বিধিতে বলা হয়েছিল, ৫৫ নম্বরের বদলে এবার ৬০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে। শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রে ৩৫ নম্বরের পরিবর্তে রাখা হয়েছিল সর্বোচ্চ ১০ নম্বর। ইন্টারভিউয়ের ক্ষেত্রে ১০ নম্বর, শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা এবং ‘লেকচার ডেমনস্ট্রেশন’-এর উপর সর্বোচ্চ ১০ নম্বর করে রাখা হয়েছিল। এছাড়াও ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারির হিসেবে যাঁদের বয়স সর্বোচ্চ ৪০ বছর, তাঁরাই নিয়োগের জন্য আবেদন জানাতে করতে পারবেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল এসএসসি। বুধবার এসএসসির জারি করা এই বিধিতেই মান্যতা দিয়েছে হাইকোর্ট। এদিন রায় ঘোষণার পর কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘এটা রাজ্যের বড় জয়! রাজ্যের অধিকারকে মান্যতা দিল আদালত।’ 
  • Link to this news (বর্তমান)