হিন্দুস্তান মোটরসের জমি রাজ্যের অধীনে, রায় বহাল সুপ্রিম কোর্টে, আরও মসৃণ হল নতুন কারখানা স্থাপনের পথ
বর্তমান | ১৭ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা ও নয়াদিল্লি: মেট্রো রেলের কোচ এবং বন্দে ভারত কোচ নির্মাণ ইউনিটের সম্প্রসারণ করা হবে। এই উদ্দেশ্যে হুগলির উত্তরপাড়ায় হিন্দুস্তান মোটরসের বন্ধ কারখানা এবং তার সংলগ্ন এলাকার ৪০ একর জমি সম্প্রতি টিটাগড় রেল সিস্টেমস লিমিটেডকে (পূর্বতন টিটাগড় ওয়াগন) দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। বুধবার এই বন্ধ কারখানার বাকি ৩৫৫ একর জমিতেও নতুন শিল্পস্থাপনের পথ আরও মসৃণ হল। কারণ, এই জমি নিয়ে হওয়া মামলা এদিনই খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। অর্থাৎ, এই জমি রাজ্যের অধীনে থাকা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ই বহাল রইল। এমতাবস্থায় রাজ্যের তরফে এই জমি নতুন কোনও শিল্প সংস্থাকে দেওয়ার ক্ষেত্রে আর বিশেষ বাধা রইল না। মনে করছে প্রশাসনিক মহল।
২০১৪ সালের ২৪ মে অ্যাম্বাসেডর প্রস্তুতকারক সংস্থা হিন্দুস্তান মোটরসের তরফে সাসপেনশন অফ ওয়ার্ক নোটিস ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। তারপর থেকে দীর্ঘকাল এই কারখানার জমি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে ছিল। ১৯৫৩ সালের ওয়েস্ট বেঙ্গল এস্টেট অ্যাকুইজিশন আইনের ৬(৩) ধারায় সেই জমি ফেরত নেয় রাজ্য। তার বিরুদ্ধে প্রথমে ওয়েস্ট বেঙ্গল ল্যান্ড অ্যান্ড টেনেন্সি ট্রাইবুনালে এবং তারপরে ট্রাইবুনালের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে যায় হিন্দুস্তান মোটরস। দুই ক্ষেত্রেই রায় যায় রাজ্যের পক্ষে। ২০২৫ সালের মে মাসে কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে তারা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। মঙ্গলবার হিন্দুস্তান মোটরসের দায়ের করা এই আবেদন খারিজ করে দেয় বিচারপতি বি ভি নাগরত্ন এবং কে ভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ। ফলে স্বাভাবিকভাবেই অব্যবহৃত জমি পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে রাজ্যের অধিকার বহাল রইল। প্রথম দিনের শুনানিতেই মামলা খারিজ করে দেওয়া হল। এর আগে ২৪ জুন মামলার শুনানির দিন থাকলেও সেদিন তা পিছিয়ে দেওয়ার জন্য আবেদন করেছিল হিন্দুস্তান মোটরস।
বুধবার সকাল থেকেই এই মামলার দিকে নজর ছিল নবান্নের। সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্তে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে রাজ্য। প্রশাসনিক মহল মনে করছে, এই জমিতে নতুন করে ব্যাপক বিনিয়োগ হবে। তাতে প্রচুর কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি হবে। এই ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে হিন্দুস্তান মোটরসের আইনজীবী দিব্যাংশুকুমার শ্রীবাস্তব জানান, এই বিষয়ে তাঁর মক্কেলের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, সেক্ষেত্রে তাঁদের কাছে রিভিউ পিটিশন এবং কিউরিটিভ পিটিশন করার পথ খোলা রয়েছে।