মঙ্গলবার রূপনারায়ণ নদের জল বেড়ে চরম বিপদসীমার (৭.৪৬ মিটার) দোরগোড়ায়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ খানাকুলের বন্দরে ৭.০৬ মিটার উচ্চতায় জল বইছে। এখনও কোথাও বাঁধ না ভাঙলেও গত দিন তিন ধরেই খানাকুল ২ ব্লকের দক্ষিণপ্রান্ত তথা শেষ সীমা দিয়ে যাওয়া এই নদের বাঁধ ও পার উপচে সংলগ্ন তিনটি পঞ্চায়েত এলাকা— মাড়োখানা, জগৎপুর ও ধান্যগড়িতে জল ঢুকছিল। এ দিন সেই জলের স্তর বেড়ে বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ফুট তিনেক জল।
জেলা সেচ দফতরের এগ্জ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার দেবেন্দ্রকুমার সিংহ বলেন, “নদের জল বাড়ছে। এখনও কোথাও বাঁধ ভাঙেনি। দফতর সতর্ক আছে, নজরদারি চলছে।”
বাস চলাচল বন্ধ হয়েছে আরামবাগ থেকে মাড়োখানার পানসিউলি ও জগৎপুরের গড়েরঘাট যাওয়ার শেষ দিকের প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তায়। জল জমে যাওয়ায় মাড়োখানা হাইস্কুল স্কুল সোমবার থেকে বন্ধ বলে জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক দেবাশিস বেজ। সংলগ্ন গ্রাম চাঁদকুন্ডু, ঢলডাঙা, বনহিজলি প্রাথমিক স্কুলও বন্ধ। মাড়োখানা পঞ্চায়েতের প্রধান টিঙ্কু দোলুই বলেন, “পানসিউলি, ঢলডাঙা চাঁদকুন্ডু গ্রাম জলমগ্ন হয়েছে। ওই সব জায়গার মূল রাস্তায় প্রায় এককোমর জল। দুর্গতদের চিহ্নিত করে ত্রাণের ত্রিপল ও চাল দেওয়া হচ্ছে।”
জগৎপুর পঞ্চায়েত এলাকায় গড়েরঘাট রাস্তার শেষ দিকটা এবং মাঠ-ঘাট ডুবে থাকা ছাড়া গ্রামগুলিতে এখনও বিশেষ প্রভাব পড়েনি। ধান্যগড়ি পঞ্চায়েত এলাকার তিনটি মৌজা— ধান্যগড়ি, ঘোড়াদহ এবং কাগনানের মাঠ এবং গ্রামীণ রাস্তাগুলির উপর ফুটখানেক জল বইলেও গ্রামে এখনও জল ঢোকেনি বলে পঞ্চায়েত সূত্রের খবর।
খানাকুল ২ বিডিও মহম্মদ জ়াকারিয়া বলেন, “দুর্যোগ মোকাবিলার যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে পঞ্চায়েতগুলি থেকে ত্রাণের কাজ শুরু হয়েছে। যদি ত্রাণকেন্দ্র করে রান্না করে খাওয়ানোর দরকার পড়ে, সেই প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে।” তিনি জানান, পানীয় জলের ঘাটতি মেটাতে এ দিন জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের ভ্রাম্যমাণ জল পরিশোধন ইউনিট আনানো হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরও নজরদারি শুরু করেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় খানাকুলের দু’টি ব্লকে সংশ্লিষ্ট সমস্ত দফতর এবং জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করেন আরামবাগের সাংসদ মিতালি বাগ।