রান্নার গ্যাস সংস্থার তরফে ভর্তুকি দেওয়ার নাম করে হাওড়ায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে একটি অনলাইন প্রতারণা-চক্র। বিভিন্ন গ্যাস সংস্থার গ্রাহকদের ফোন করে অনলাইনে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ওই প্রতারণা-চক্রটি। একের পর এক অভিযোগ পেয়ে ওই চক্রের পান্ডাদের ধরতে তদন্তে নেমেছে হাওড়া সিটি পুলিশের সাইবার অপরাধ দমন শাখা। পাশাপাশি, ওই প্রতারণা-চক্রের ফাঁদে যাতে কেউ না পড়েন, তার জন্য পুলিশের তরফে সতর্কও করা হচ্ছে। এ ছাড়া, গ্যাস সংস্থাগুলিও শহর জুড়ে গ্রাহকদের এ বিষয়ে সতর্ক করতে ভ্যানে মাইক লাগিয়ে প্রচার শুরু করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, অচেনা কোনও মোবাইল নম্বর থেকে গ্রাহকদের কাছে ফোন আসছে। গ্যাস সংস্থার স্থানীয় ডিস্ট্রিবিউটরের প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে বলা হচ্ছে, ওই গ্রাহক ভর্তুকির টাকা পাচ্ছেন কিনা জানতেই ফোন করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, ভর্তুকি পেতে হলে কেওয়াইসি আপডেট করতে হবে, যার জন্য গ্রাহকের ব্যাঙ্কের সমস্ত তথ্য লাগবে। যাঁরা সেই সব তথ্য জানিয়ে দিচ্ছেন, তাঁদের একটি কিউআর কোড পাঠানো হচ্ছে। বলা হচ্ছে, সেটি স্ক্যান করলেই ভর্তুকির টাকা অ্যাকাউন্টে চলে আসবে। গ্রাহকেরা ওই কোড স্ক্যান করলেই মুহূর্তের মধ্যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খালি হয়ে যাচ্ছে। এর পরে গ্যাস সংস্থার স্থানীয় ডিস্ট্রিবিউটরের অফিসে খোঁজ নিয়ে গ্রাহকেরা জানতে পারছেন, সেখান থেকে কোনও ফোন করা হয়নি।
এই প্রসঙ্গে হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন গ্যাস সংস্থার ১০ জন গ্রাহক এই চক্রের ফাঁদে পড়েছেন। ওই গ্রাহকেরা অনলাইনে ভর্তুকি পেতে গিয়ে ১০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত খুইয়েছেন। এঁরা সকলেই হাওড়া সিটি পুলিশের সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। আমরা প্রতারকদের ধরতে তদন্ত শুরু করেছি।’’ হাওড়ার সাইবার থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত হাওড়া কমিশনারেট এলাকার ডোমজুড় ও সাঁকরাইল এলাকার বাসিন্দারাই বেশি সংখ্যায় প্রতারিত হয়েছেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, ডোমজুড় ও সাঁকরাইলের পাশাপাশি শহরের অন্যান্য এলাকার রান্নার গ্যাসের গ্রাহকদেরও ফোন করছে প্রতারকেরা। যেমন, শিবপুর ও বটানিক্যাল গার্ডেন এলাকার গ্রাহকদের নম্বর জোগাড় করেও ফোন করেছে প্রতারকেরা।
গ্যাস সংস্থার নাম করে চলা এই প্রতারণা-চক্রের ফাঁদে পা না দেওয়ার জন্য হাওড়া সিটি পুলিশের তরফে ইতিমধ্যেই নাগরিকদের সতর্ক করা হয়েছে। পুলিশের সাইবার অপরাধ দমন শাখা থেকেও এই সতর্কবার্তা দেওয়া হচ্ছে। এমনকি, গ্যাস সংস্থাগুলিও নিজেদের উদ্যোগে শহর জুড়ে মাইকে প্রচার চালাচ্ছে। বলা হচ্ছে, তাদের স্থানীয় ডিস্ট্রিবিউটরের অফিস থেকে এই ধরনের কোনও ফোন করা হচ্ছে না। এই ধরনের ফোন কারও কাছে এলেই সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের শরণাপন্ন হতে বলা হচ্ছে সংস্থাগুলির তরফে।