আপ শাসিত পঞ্জাবে আক্রান্ত বাঙালি শ্রমিক! মালদহের ৬ জনকে লুধিয়ানা সেন্ট্রাল জেলে আটকে রাখার অভিযোগ
আনন্দবাজার | ১৭ জুলাই ২০২৫
বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলার শ্রমিকদের হেনস্থার প্রতিবাদে পথে নেমেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তাঁর দল তৃণমূল। উচ্চ আদালত প্রশ্ন তুলেছে, সারা দেশে একই সময়ে কেন বাংলাদেশিদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু হল? এটা কি পূর্ব পরিকল্পিত? কেন জুন মাসকেই বেছে নেওয়া হল? ঠিক সেই সময়ে সামনে এল আম আদমি পার্টি (আপ) শাসিত পঞ্জাবে বাংলার ছ’জন শ্রমিককে জেলবন্দি করে রাখার অভিযোগ।
সপ্তাহ তিনেক আগে মালদার চাঁচল-১ ব্লকের বেলপুকুর এলাকার ছ’জন গিয়েছিলেন পঞ্জাবের লুধিয়ানায়। অভিযোগ, ওই পরিযায়ী শ্রমিকদের পঞ্জাবের লুধিয়ানার সেন্ট্রাল জেলে বন্দি করে রাখা হয়েছে। শ্রম দফতর সূত্রে খবর, তাঁদের বিরুদ্ধে পশুহত্যা-সহ তিনটি ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। রাজ্যের তরফে এ নিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে পঞ্জাব প্রশাসনের সঙ্গে।
অন্য দিকে, উদ্বেগে ওই শ্রমিকদের পরিবার। ছয় পরিবারই জানাচ্ছে, বাড়ির একমাত্র রোজগেরে সদস্য তাঁরা। বুধবার ওই পরিবারগুলিকে আশ্বাস দিতে গ্রামে যান মালদহ জেলা ওয়েলফেয়ার কমিটির সদস্য তথা সহকারী সভাধিপতি রফিকুল হোসেন। তিনি শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনার জন্য রাজ্য পরিযায়ী শ্রমিক কমিটির চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলামকে বিষয়টি জানিয়েছেন। জেলা প্রশাসনও ছ’জনকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা শুরু করেছে।
পরিবার সূত্রে খবর, লুধিয়ানার জেলে বন্দি থাকা মালদহের ছয় বাসিন্দার নাম জ়াকির হোসেন, রাইহান আলম, কুরবান আলি, আজ়ম আলি, মিনজ়ার আলি এবং মুক্তার আলম। তাঁরা পঞ্জাবের একটি বড় হোটেলে মাংস কাটার কাজ করতেন। মাত্র তিন সপ্তাহ আগে কাজ করতে যাওয়া ছয় শ্রমিককে পশুহত্যার অপরাধে কেন এবং কী ভাবে জেলে ভরে দেওয়া হল, মাথায় ঢুকছে না স্থানীয়দের। বাড়ির লোকজন বলছেন, তাঁরা খবর পেয়েছেন পুলিশি হেফাজতে শারীরিক অত্যাচার করা হচ্ছে ওই ছ’জনকে। এমনকি, আদালতে লড়ার জন্য আইনজীবী ঠিক হলেও তাঁরা মাথাপিছু ১০ হাজার টাকা করে ‘ফি’ নিয়ে আইনি সহায়তা করেননি বলে অভিযোগ।
বুধবার বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের ভিন্রাজ্যে আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ নিয়ে সুর চড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তিনি বলেন, “বাংলায় আমার সমস্যা করলে আমি গোটা ভারতে ঘুরব। আমাকে আপনারা আটকে রাখতে পারবেন না। আমি দেখব, কতগুলি ডিটেনশন ক্যাম্পে আমাকে নিয়ে যেতে পারেন। সেখানে গিয়েও আমি বাংলাতেই কথা বলব। বাংলার লোকেদের ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখলে বাংলার মানুষও বিজেপিকে নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক ভাবে ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখবে।”