বন্ধুদের সঙ্গে কলকাতায় নিক্কো পার্কে ঘুরতে গিয়ে বুধবার মৃত্যু হয়েছিল রাহুল দাস নামে এক যুবকের। ওই ঘটনায় এ বার ছেলের অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্ত চেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হল পরিবার।
বুধবারই বিধাননগর (দক্ষিণ) থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন নিহত রাহুলের বাবা সত্যজিৎ দাস। তাঁর দাবি, সকালে সম্পূর্ণ সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন তাঁর ছেলে। কলেজের বন্ধুদের সঙ্গে নিক্কো পার্কে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু দুপুর ১টা ২০ মিনিট নাগাদ হঠাৎই তাঁর স্ত্রীর ফোনে একটি ফোন আসে। ফোনের ওপার থেকে জানানো হয়, তাঁর ছেলে অচৈতন্য হয়ে পড়েছেন। বন্ধুদের উদ্যোগেই রাহুলকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছোন বাবা-মাও। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখেন, আগেই মৃত্যু হয়েছে ছেলের। এর পরেই নিক্কো পার্ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ এনেছে নিহতের পরিবার। ঘটনায় পূর্ণাঙ্গ তদন্তও দাবি করেছেন তাঁরা।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, বুধবার সকালে কলেজের ছয় বন্ধুর সঙ্গে নিক্কো পার্কে ঘুরতে গিয়েছিলেন উল্টোডাঙা এলাকার বাসিন্দা রাহুল। নিক্কো পার্কের ভিতরে ওয়াটার পার্কে স্নান করতে নেমেছিলেন তাঁরা। সেই সময়েই আচমকা সংজ্ঞা হারান রাহুল। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। কী ভাবে ওই যুবকের মৃত্যু হল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ইতিমধ্যে ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে স্থানীয় থানার পুলিশ।
নিক্কো পার্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, দুপুর ১টার কিছু পরে ঘটনাটি জানতে পারেন তাঁরা। কর্তৃপক্ষই জানিয়েছেন, নিক্কো পার্কের ভিতরে ‘নায়গ্রা ফল’ নামে একটি প্রমোদস্থল রয়েছে। পার্কের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজেশ রায় সিঙ্ঘানিয়ার কথায়, তাঁরা দেখতে পান ওই ‘নায়গ্রা ফল’ থেকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় এক যুবককে নামানো হচ্ছে। প্রথমে পার্ক চত্বরেই প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। পরে নিক্কো পার্কের অ্যাম্বুল্যান্সে করে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। যদিও এ কথা মানছেন না নিহতের বাবা। তাঁর অভিযোগ, যখন কর্তৃপক্ষ রাহুলকে পান, তখনও তাঁর হৃদ্স্পন্দন চলছিল। তা হলে কেন তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হল না? অভিযোগ, অত বড় চত্বরে ন্যননতম অক্সিজেনের ব্যবস্থাও ছিল না। তাঁর আরও দাবি, ছেলের মৃতদেহে একাধিক আঘাত রয়েছে। পায়ের বুড়ো আঙুলে একটি গভীর ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। বাঁ হাতেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। রাহুলের শরীর নীল হয়ে গিয়েছিল বলেও দাবি। নিক্কো পার্কের সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখার আর্জি জানিয়েছেন তিনি। তদন্তে সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত ওয়াটার পার্ক বন্ধ রাখারও দাবি করেছে নিহতের পরিবার।