বিনামূল্যে সাধারণ পড়ুয়াদেরও প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রস্তুতির সুযোগ, ‘যোগ্যশ্রী’তে বড় বদল রাজ্যে
প্রতিদিন | ১৭ জুলাই ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার: যোগ্যশ্রী প্রকল্পের অধীনে এতদিন পর্যন্ত শুধুমাত্র রাজ্যের দুঃস্থ মেধাবীরা বিনামূল্যে প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারতেন। এবার থেকে সাধারণ পড়ুয়ারাও এর সুবিধা পাবেন বলে অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ ও আদিবাসী উন্নয়ন দপ্তর সূত্রে খবর। আইআইটিতে ১৫, এনআইটিতে ২০ এবং সর্বভারতীয় মেডিক্যালে ১৬ জন। চলতি বছরে সর্বভারতীয় স্তরে এটাই এক নজরে এ রাজ্যের দুঃস্থ মেধাবীদের যোগ্যতা অর্জনের পরিসংখ্যান।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চেয়েছিলেন তফসিলি ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের দুঃস্থ মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের প্রতিভাকে তুলে ধরতে। যাতে তাঁরা দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের পরীক্ষায় সফল হতে পারেন। সেই লক্ষ্যেই যোগ্যশ্রী প্রকল্প চালু করেন তিনি। যাতে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারেন তাঁরা। সেই প্রকল্পই এমন নজিরবিহীন সাফল্য এনে দিয়েছে। তবে এতদিন শুধুমাত্র তফসিলি ও আদিবাসী পরিবারের ছেলেমেয়েরা এর সুবিধা পেতেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে চলতি বছর থেকে সাধারণ ছাত্রছাত্রীরাও এই সুবিধা পাবেন বলে খবর। যোগ্যশ্রী প্রকল্পের প্রোজেক্ট অধিকর্তা অমিতকুমার কর জানান, চলতি বছর থেকে সাধারণ পড়ুয়ারাও যোগ্যশ্রী প্রকল্পের আওতায় আসবেন, এই নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেইমতো যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
তবে চলতি বছরই শুধু নয়, গত কয়েক বছর ধরেই যোগ্যশ্রী প্রকল্পে বিনামূল্যে প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে সর্বভারতীয় স্তরে সাফল্যের ছাপ রেখেছেন অনেকেই। গত তিন বছরে তফসিলি ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের ৩৬ জন ছাত্রছাত্রী আইআইটি, ১৯০ জন সর্বভারতীয় জয়েন্ট, ১৪২৪ জন রাজ্য জয়েন্ট এবং ৩৪৩ জন নিট অর্থাৎ সর্বভারতীয় মেডিক্যাল পঠনপাঠনে যোগ্যতা অর্জন করেছেন। অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ ও আদিবাসী উন্নয়ন দপ্তর যোগ্যশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে বিনামূল্যে এই সব সর্বভারতীয় পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতির প্রশিক্ষণ দেয়। ২০২৪ সালে ১,৪৪০ জন তফসিলি ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের পড়য়াকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরে ২ হাজার পড়ুয়াকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে অনগ্রসর উন্নয়ন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, একাদশ ও দ্বাদশের পড়ুয়াদের এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। শনিবার স্কুল ছুটির পর এবং রবিবার প্রতি জেলায় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। বছরে মোট ৩৫০ ঘণ্টা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ৩৫০ ঘণ্টার মধ্যে ৩২০ ঘণ্টার ক্লাস ও ৩০ ঘণ্টার টেস্ট নেওয়া হয়ে থাকে। এই প্রশিক্ষণ পেতে হলে পড়ুয়াকে মাধ্যমিকে ৬০ শতাংশ বা তার বেশি নম্বর পেতে হবে এবং পড়ুয়ার পরিবারের বছরে ৩ লক্ষ টাকার নিচে আয় থাকতে হবে। যোগ্যশ্রী প্রকল্পের প্রোজেক্ট অধিকর্তা অমিতকুমার কর জানান, “প্রশিক্ষণ নেওয়ার সময় প্রতি পড়ুয়াকে মাসে ৩০০ টাকা করে ভাতা দেওয়া হয়। পড়ুয়াদের বই ও অন্যান্য রেফারেন্স বই নামী কোচিং সেন্টার থেকে আনা হয় এবং পড়ুয়াদের বিনামূল্যে সেই বই দেওয়া হয়। সারা রাজ্যে ৫০টি কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। দপ্তরের উদ্যোগে এই প্রশিক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে একটি বেসরকারি সংস্থাকে।”