• পুলিশি তদন্তে ফাঁকফোকর! স্ত্রীকে খুন ও দেহ টুকরো কাণ্ডে ১১ বছর পর বেকসুর খালাস স্বামী-সহ ৩
    প্রতিদিন | ১৮ জুলাই ২০২৫
  • গোবিন্দ রায়: পরকীয়া সম্পর্কের জেরে স্ত্রীকে খুন করে দেহ টুকরো টুকরো করে পার্কিং লটে ফেলে দেয় স্বামী! এমনই অভিযোগে রুজু হওয়া মামলায় মৃতার স্বামী সুরজিৎ দেব ও তাঁর বান্ধবী লিপিকা পোদ্দার এবং সঞ্জয় বিশ্বাস নামে এক যুবককে ফাঁসির সাজা শুনিয়ে ছিল শিয়ালদহ আদালত। ঘটনার ১১ বছর পর বৃহস্পতিবার তিন আসামিকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি সব্বর রশিদীর ডিভিশন বেঞ্চ রায়ে জানিয়েছে, “তদন্তে বহু ফাঁক-ফোকর রয়েছে, সাক্ষ্যপ্রমাণ যথেষ্ট নয়। এমন তদন্তের ভিত্তিতে দোষী সাব্যস্ত করা যায় না।”

    ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৪ সালের ২০ মে। শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরে পড়ে ছিল দড়ি বাঁধা একটি লেপ, একটি বড় ট্রলি ব্যাগ আর একটি স্কুল ব্যাগ। ট্রলি থেকে এক মহিলার খণ্ডবিখণ্ড মৃতদেহ উদ্ধার করে জিআরপি। জানা যায়, মৃত ওই মহিলার নাম জয়ন্তী দেব। সে সময় পুলিশ ওই খুনের ঘটনার মূল চক্রী হিসেবে স্বামী সুরজিৎ দেবকে দাবি করে। সঙ্গে তাঁর বান্ধবী লিপিকা পোদ্দার এবং এক যুবক সঞ্জয় বিশ্বাসকে অভিযুক্ত করা হয়। অভিযোগ ছিল, পরকীয়ার জেরে স্ত্রীকে খুন করে দেহ টুকরো টুকরো করে পার্কিং লটে ফেলে দেওয়া হয়। মামলায় শিয়ালদহ ফাস্ট ট্র্যাক আদালত ৩ জনকেই দোষী সাব্যস্ত করে এবং ফাঁসির সাজা ঘোষণা করে। পরে ২০১৯ সালে ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন সাজাপ্রাপ্তরা। ৬ বছর দীর্ঘ শুনানি শেষে এদিন রায় দেয় আদালত।

    আদালতের এদিনের রায় ঘিরে আবারও মুখ পুড়ল তদন্তকারী সংস্থার। প্রশ্ন উঠল বিচার ব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রতা নিয়ে। সাজা ঘোষণার পর থেকে একটানা ১১ বছর জেল খেটেছেন সাজাপ্রাপ্তরা। আইনি মহলের একাংশ বলছে, এই রায় শুধু ৩ জনের মুক্তি নয়, পুলিশের তদন্তের গাফিলতির নগ্ন চিত্র উঠে এল। আবার কি নতুন করে তদন্ত শুরু হবে তা নিয়েও ধন্দ তৈরি হয়েছে।
  • Link to this news (প্রতিদিন)