• বাংলা ভাষায় কথা বললেই বাংলাদেশি? কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মমতার তোপের পর তৃণমূল সাংসদদের বাংলাতে বক্তৃতার ডাক বিমানের
    আনন্দবাজার | ১৭ জুলাই ২০২৫
  • বাংলা ভাষায় কথা বললেই বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে মানুষকে বাংলাদেশি তকমা দেওয়া হচ্ছে— এই অভিযোগে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় শাসকদল বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বৃহস্পতিবার তিনি জানান, বাংলা ভাষাকে অবজ্ঞা ও অপমান করার যে প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, তা মেনে নেওয়া যায় না। এর প্রতিবাদেই তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের সব সাংসদকে সংসদে বাংলা ভাষাতেই বক্তৃতা করার আহ্বান জানিয়েছেন। স্পিকার বলেন, “বাংলা ভাষার বিরুদ্ধে যে ভাবে ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছে, তা নিন্দনীয়। আমি অনুরোধ করব, আমাদের দলের সাংসদেরা সংসদে সমস্ত বক্তৃতা বাংলাতেই করুন। বাইরে গেলেও বাংলায় কথা বলুন। এটা আমাদের আত্মসম্মান ও সাংস্কৃতিক স্বাধিকার রক্ষার লড়াই।”

    বিজেপিশাসিত রাজ্য ওড়িশা, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়-সহ একাধিক রাজ্যে বাংলা ভাষাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর হেনস্থা ও নির্যাতনের অভিযোগ ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে। এর প্রতিবাদে আসন্ন বাদল অধিবেশনে এই ইস্যু তুলে ধরতে পারেন তৃণমূল সাংসদেরা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ২১ জুলাই শহিদ দিবসের সমাবেশ থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলবেন বলে জানা যাচ্ছে। সম্প্রতি ওড়িশার ঝাড়সুগুদা জেলার একটি অবৈধ ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে আটক করা হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের বাংলা ভাষাভাষী ৪৪৪ জন পরিযায়ী শ্রমিককে। বিজেপির আইটি সেল প্রধান অমিত মালবীয় দাবি করেছিলেন, এঁদের মধ্যে ৩৩৫ জনের নথি নাকি জাল এবং তাঁরা বাংলাদেশি।

    কিন্তু সেই দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। ওড়িশা সরকার নিজেই আদালতকে জমা দেওয়া তথ্যে জানিয়েছে, ধৃত প্রত্যেকেই ভারতীয় নাগরিক এবং পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। পরে তাঁদের মুক্তিও দেওয়া হয়েছে। এই প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ সামিরুল ইসলাম এক টুইটে বিজেপিকে কটাক্ষ করে লেখেন, “মিথ্যার গতি আছে, কিন্তু সত্যর সহনশক্তি রয়েছে। আজ সেই সত্যই প্রমাণিত হয়েছে। কয়েকদিন আগে বিজেপির মিথ্যাচারের কর্তা অমিত মালবীয় দাবি করেছিলেন যে, ওড়িশায় আটক ৪৪৪ জন বাংলা ভাষাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকের মধ্যে ৩৩৫ জনের নথিপত্র নাকি ভুয়ো, এবং এরা সকলেই বাংলাদেশি।” সামিরুল আরও লেখেন,

    কিন্তু বিস্ময়ের বিষয়, ওডিশা সরকার নিজেই — এমনকি কলকাতা হাই কোর্টে দাঁড়িয়ে স্বীকার করেছে যে ঝাড়সুগুদা জেলার অবৈধ ডিটেনশন ক্যাম্পে আটক যাঁদের বাংলাদেশি সন্দেহে ধরা হয়েছিল, তাঁদের সকলকে পরে মুক্তি দেওয়া হয়েছে কারণ তাঁদের ভারতীয় নাগরিকত্ব এবং পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে যোগ নিশ্চিত হয়েছে।”
  • Link to this news (আনন্দবাজার)