ডিজিটাল গ্রেফতারি ও বিনিয়োগ জালিয়াতির চক্রের ফাঁদে পড়ে হাওড়ার বাসিন্দা এক তরুণী ও এক প্রবীণ প্রায় ৬৭ লক্ষ টাকা প্রতারণার শিকার হলেন। এপ্রিল ও মে মাসে হওয়া এই দু’টি প্রতারণার ঘটনায় অভিযোগ পাওয়ার পরে তদন্তে নামে হাওড়া সিটি পুলিশ। তাদের সাইবার শাখা কানপুর থেকে বিশাল সিংহ নামে ডিজিটাল গ্রেফতারি চক্রের এক পান্ডা এবং পশ্চিম দিল্লি থেকে সুরজিৎ কামার নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। এখনও পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে ১ লক্ষ ৯ হাজার টাকা। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, দু’টি চক্রের সঙ্গে বহু লোক জড়িত। সেই অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত এপ্রিলে বটানিক্যাল গার্ডেন এলাকার বাসিন্দা আইআইইএসটি-র পিএইচ ডি-র এক ছাত্রী সাইবার থানায় অভিযোগে জানান, কয়েক জন ব্যক্তি সিবিআই অফিসার পরিচয় দিয়ে তাঁকে ১৫-১৯ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়িতেইডিজিটাল গ্রেফতার করে রেখেছিল। সেই সময়ে তাঁকে ভয় দেখিয়ে তাঁর কাছ থেকে দফায় দফায় ২৭ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ওই চক্রটি। এই অভিযোগ পাওয়ার পরেই হাওড়া সিটি পুলিশের সাইবার শাখা তদন্তে নামে। গত বুধবার কানপুর থেকে বিশাল সিংহ নামে ডিজিটাল গ্রেফতারির চক্রের এক পান্ডাকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতের থেকে ১ লক্ষ ৯ হাজার টাকা উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ জানায়, অন্য ঘটনাটিতে টাকা গচ্ছিত রেখে বেশি মুনাফা লাভের আশা করেছিলেন শিবপুরের নবীন সেনাপতি লেনের বাসিন্দা এক প্রবীণ। তাঁর অভিযোগ, বিনিয়োগ করলে প্রচুর টাকা মুনাফা হবে, এই টোপ দিয়ে এক ব্যক্তি তাঁকে ফোন করে একটি অ্যাপে যুক্ত হতে বলে। অ্যাপে যোগ দিতেই সেখান থেকে তাঁকে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলে অর্থ বিনিয়োগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। প্রচুর টাকা মুনাফার লোভে গত মে মাসে ওই ব্যক্তি ৩৯ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেন। কিন্তু কিছু দিন পরেই অ্যাপটির আর কোনও অস্তিত্ব নেই দেখে তিনি বুঝতে পারেন, প্রতারণার কবলে পড়েছেন। এর পরেই হাওড়া সিটি পুলিশের শরণাপন্ন হন।
হাওড়ার উপ-নগরপাল (উত্তর) বিশপ সরকার বলেন, ‘‘বিনিয়োগ প্রতারণার তদন্তে নেমে গত রবিবার পশ্চিম দিল্লির উত্তমনগর থেকে সুরজিৎকে ধরা হয়। ৩৯ লক্ষ টাকার মধ্যে তার অ্যাকাউন্টেই ১৬ লক্ষ টাকা ঢুকেছিল। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বাকি টাকার খোঁজ করা হচ্ছে। এর পিছনে একটি বড় চক্র রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।’’