এই সময়: হৃদযন্ত্র বিকল হয়েই নিক্কো পার্কে মৃত্যু হয়েছে উল্টোডাঙার বসিন্দা রাহুল দাসের (১৮)। বিবিএ–র দ্বিতীয় বর্ষের ওই পড়ুয়ার মাথার পিছনে আঘাতের চিহ্ন (হেমাটোমা) মিলেছে ময়নাতদন্তে।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, সল্টলেকের ওয়াটার পার্কে স্নান করার সময়ে হৃদযন্ত্র বিকল হয় রাহুলের। মাথায় অক্সিজেন না–পৌঁছনোর কারণেই পড়ে যান তিনি। তা থেকেই মাথায় চোট।
ওই তরুণের শরীরের ভিতরে ও বাইরে কোথাও আঘাত নেই বলেও জানা গিয়েছে। যদিও ছেলের মৃত্যুর পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চেয়ে বৃহস্পতিবার বিধাননগর দক্ষিণ থানায় মামলা দায়ের করেছেন রাহুলের বাবা সত্যজিৎ দাস।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সহপাঠীর জন্মদিন সেলিব্রেট করতে কলেজের ছয় বন্ধুর সঙ্গে রাহুল বুধবার নিক্কো পার্কে যান। দুপুর একটা নাগাদ স্নান করার সময়ে আচমকা জ্ঞান হারান। বন্ধুরাই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
এর পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। প্রকাশ্যে আসা সিসিটিভি ফুটেজেও দেখা যাচ্ছে, অ্যাম্বুল্যান্সে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে রাহুলকে। সত্যজিতের অভিযোগ, ‘ছেলে একেবারে সুস্থ ছিল। হাসিমুখে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। আচমকাই দুপুরে ফোন আসে, ছেলে অচৈতন্য হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। গিয়ে দেখি, ছেলে আর বেঁচে নেই।’
এর পিছনে নিক্কো পার্ক কর্তৃপক্ষের গাফিলতি রয়েছে বলেই দাবি রাহুলের পরিবারের। অভিযোগ, পর্যাপ্ত নজরদারি বা সুরক্ষা ছিল না বলেই এই মর্মান্তিক ঘটনা।
এদিন নিক্কো পার্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন মৃতের পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের দাবি, বুধবারের দুর্ঘটনাস্থল ঘিরে রাখতে হবে এবং নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। দুর্ঘটনার মুর্হূতের সিসিটিভি ফুটেজও তাঁরা পার্ক কর্তৃপক্ষের থেকে চান। পরিবারের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের কেউ সহযোগিতা করেননি।
বুধবারের এত বড় দুর্ঘটনার পরেও বৃহস্পতিবার পার্ক খোলা থাকা নিয়ে সরব মৃতের পরিবার। যদিও নিক্কো পার্কের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজেশ রায় সিংহানি বলেন, ‘ওই ছেলেটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়েছে সবরকম ভাবে। সুরক্ষার জন্য যা প্রয়োজন, সবই রয়েছে বিনোদন পার্কে।’
বিধাননগর কমিশনারেটের এক অফিসার বলেন, ‘মৃতের পরিবারের অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার সময়ে উপস্থিত রাহুলের কয়েকজন বন্ধুদেরও সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। তবে এখনও অস্বাভাবিক কিছু মেলেনি।’