• ‘বাঙালি অস্মিতাকে অগ্রাধিকার...’, ২০০-র টার্গেট ফেলের ক্ষতে প্রলেপ দিতে বঙ্গ আবেগে শান মোদীর?
    এই সময় | ১৮ জুলাই ২০২৫
  • একুশের নির্বাচনের আগে বঙ্গ সফরে এসে ‘২০০ পার’-এর হুঙ্কার দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যদিও মোদীর বেঁধে দেওয়া টার্গেটের ধারেকাছেও যেতে পারেনি বিজেপি। রাজনৈতিক মহলের দাবি ছিল, বাংলার ‘পালস’ বুঝতে পারেনি ‘ভাজপা’। ২৬-এ বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। ২১-এর অসম্পূর্ণ টার্গেট পূরণ করতে শুক্রবার দুর্গাপুর থেকে নতুন মার্গ দর্শন করবেন মোদী, সেই প্রত্যাশাই ছিল দলীয় কর্মীদের মধ্যে।

    শুক্রবার মেঘলা দিনে তৃণমূলের বিরোধিতায় গর্জে উঠলেন মোদী। কিন্তু তৃণমূল বিরোধী গর্জনের থেকেও তাঁর বাংলায় কথা বলা এবং বাঙালি আবেগে শান দেওয়া নজর কাড়ল রাজনীতিকদের। দুর্গা এবং কালীর নাম নিয়ে এ দিন ভাষণ শুরু করেন তিনি। ঝরঝরে বাংলায় বলেন, ‘বাংলা পরিবর্তন চায়। বাংলা উন্নয়ন চায়।’ এখানেই শেষ নয়, বাঙালি অস্মিতাতে বিজেপি অগ্রাধিকার দেয়, সেকথাও জানান তিনি।

    এ দিকে মোদীকে এক ইঞ্চি জায়গা ছাড়তে নারাজ তৃণমূলও। রাজ্যের শাসক দলের অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডল থেকে লেখা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বাংলায় কথা বলতে দেখে ভালো লাগছে। এ বার কি আপনাকে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো নিয়ে আমাদের চিন্তা করতে হবে?’ গত কয়েক দিন ধরেই বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাঙালি হেনস্থা নিয়ে সরব তৃণমূল। মোদীর বাংলায় কথা বলার পর সুচারু ভাবে আক্রমণ ফিরিয়ে খোঁচা দিয়েছে মমতার দলও।

    রাজ্য সরকার তথা তৃণমূলকে তোপ দাগার জন্য কসবা আইন কলেজে ছাত্রীকে গণধর্ষণ থেকে শুরু করে অনুপ্রবেশ ইস্যুকে সামনে রেখেছিলেন মোদী। কিন্তু তাঁর বক্তব্যে আক্রমণের ঝাঁঝের থেকে বাংলা ও বাঙালির আবেগকে ছোঁয়ার চেষ্টা বেশি ছিল, দাবি রাজনৈতিক মহলের। বঙ্গ আবেগকে স্পর্শ করেই কি ২৬-এর ভোট বৈতরণী পার করতে চায় বিজেপি? মোদীর বেঁধে দেওয়া ‘টোন’ নিয়ে জোর চর্চা রাজনৈতিক মহলে।

    এ দিন মোদী বলেন, ‘বিজেপি বিকশিত বাংলা চায়। একসময়ে বাংলা সমৃদ্ধ ছিল। বিকাশের কেন্দ্র ছিল। কিন্তু এখন আর তা নেই। আমরা সেই অবস্থান বদল করতে চাইছি।’ অসম, ত্রিপুরা এবং ওডিশাতে বিজেপি সরকার ‘সফল’, এই দাবি করে মোদী বলেন, ‘বাংলায় সৎ, কর্মঠ এবং দমদার সরকার তৈরি করতে চায় বিজেপি।’

    বাংলার বর্তমান প্রশাসনিক পরিস্থিতি বিনিয়োগ বিরোধী, এই অভিযোগে সুর চড়ান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘যেখানে মুর্শিদাবাদের মতো ঘটনা ঘটে, ছোট ছোট ঘটনায় হিংসা হয় এবং পুলিশ একতরফা কাজ করে, সেখানে কে বিনিয়োগ করবে?’

    প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীর চাকরি যাওয়া নিয়েও তৃণমূল সরকারকে বিঁধেছেন তিনি। পাশাপাশি আরজি কর এবং কসবা আইন কলেজে নারী নির্যাতনের অভিযোগেও মোদীর নিশানায় ছিল তৃণমূল প্রশাসন। যদিও এ দিন কোনও টার্গেট বেঁধে দেননি মোদী। বিজেপির একাংশের কথায়, ‘এ দিন ২৬-এর সুর বেঁধে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। চমক এখনও অনেক বাকি।’

  • Link to this news (এই সময়)