• রাম নাম ছেড়ে কালী-দুর্গা, রজনীগন্ধার মালা, বাঙালির আপন হওয়ার চেষ্টায় BJP?
    আজ তক | ১৯ জুলাই ২০২৫
  • দৃশ্য ১- দুর্গাপুরের সভায় প্রধানমন্ত্রীকে রজনীগন্ধার মালা পরালেন শমীক ভট্টাচার্য।

    দৃশ্য ২- পোড়ামাটির দুর্গামূর্তি মোদীকে উপহার দিলেন শমীক।

    দৃশ্য ৩- জয় মা কালী, জয় মা দুর্গা... বলে ভাষণ শুরু করলেন

    দৃশ্যপটগুলি পরপর সাজালে চুম্বকে একটাই শব্দ উঠে আসে, তা হল 'বাঙালিয়ানা'। হঠাৎ বাঙালিয়ানার চর্চার দরকার কেন পড়ল বিজেপির?

    একটা সময় বিজেপিকে বলা হত 'বড়বাজারের দল'। সাকুল্যে ২-৩ শতাংশ ভোট জুটত। বিজেপির পরিচিত মুখ বলতে তপন শিকদার, রাহুল সিনহা, তথাগত রায়রা। সংগঠন বলতেও কিছুই ছিল না। তৃণমূলের সঙ্গে জোট বেঁধে রাজ্যে প্রথম লোকসভা আসন দমদম জয়। সালটা ১৯৯৮। কালের নিয়মে শাখা-প্রশাখা ছড়িয়েছে সেই বিজেপির। ভোটের হার ৪০ শতাংশ পেরিয়েছে। বাম-চর্চার বঙ্গে এখন তারাই রাজ্যে প্রধান বিরোধী দল। কিন্তু জয় শ্রী রাম ধ্বনি, মাথায় পাগড়ি থেকে রংবেরংয়ের নেহরু জ্যাকেট, 'কারিয়াকর্তা'র মতো শব্দকোষ- সবমিলিয়ে এখনও 'গোবলয়ের দলের' তকমা মোছেনি। গত বিধানসভা ভোটে 'বহিরাগত' বনাম 'বাংলার মেয়ে'-র প্রচার করেছিল তৃণমূল। তার সুফলও মিলেছে ইভিএমে। সেই বহিরাগত তকমা ঝেড়ে বাঙালি হতে চাইছে বিজেপি? অন্তত তারই আভাস মিলল শুক্রবারের দুর্গাপুরের।

    এবারও বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলাভাষীদের বাংলাদেশি বলে নির্যাতন করা হচ্ছে 'রাজনৈতিক আখ্যান' পেয়ে গিয়েছে তৃণমূল। খোদ তৃণমূল নেত্রী বৃষ্টিস্নাত রাজপথে নেমে প্রতিবাদ করেছেন। বাঙালি অস্মিতা নিয়ে বিজেপিকে বিঁধেছেন। অভিযোগ করেছেন, বাংলা ভাষা বললেই ডিটেনশন ক্যাম্পে পোরা হচ্ছে। অপদস্থ হতে হচ্ছে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের। দিল্লির জয় হিন্দ কলোনি, ওডিশা থেকে রাজস্থানের উদাহরণ টেনে এনেছেন। তার পাল্টা দিয়েছেন মোদী। বললেন,'নিজেদের স্বার্থের জন্য পশ্চিমবঙ্গের পরিচয়কে ঝুঁকিতে ফেলেছে তৃণমূল। অনুপ্রবেশকারীদের ভুয়ো নথি তৈরি করে দিচ্ছে। এটা বাংলার সংস্কৃতির জন্য বিপদ। ভালো করে শুনুন ভারতের যারা নাগরিক নয়, যারা অনুপ্রবেশ করে এসেছে, তাদের সঙ্গে ভারতের সংবিধান অনুযায়ী যথাবিহিত পদক্ষেপ করা হবে। বাংলার অস্মিতার সঙ্গে যে কোনও ধরনের ষড়যন্ত্র সফল হতে দেবে না বিজেপি। এটা মোদীর গ্যারান্টি'।

    বাংলার অতীত গৌরবের কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন মোদী। সেই সঙ্গে স্মরণ করিয়েছেন, বাংলার ভূমিপুত্র শ্যামাপ্রসাদের আদর্শেই তৈরি হয়েছে তাঁর দল। ভাষণে উঠে এসেছে, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, বিষ্ণু দে, কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায় এবং বিধানচন্দ্র রায়। বাংলা ভাষা বললেই বাংলাদেশি বলে ধরপাকড় চলছে বলে তৃণমূল যে অভিযোগ করেছে, তা-ও ফুৎকারে উড়িয়েছেন। বললেন,'তৃণমূল ও বামেরা কংগ্রেসের সঙ্গে সরকার চালিয়েছে দিল্লিতে। সেই সময় বাংলা ভাষার কথা মনেও পড়েনি। বিজেপি সরকার বাংলাকে শাস্ত্রীয় ভাষার মর্যাদা দিয়েছে। আমরা বাংলা সাহিত্যে অবদান রাখা বিষ্ণু দে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিয়েছি'।

    ক্লাইম্যাক্স - গোটা ভাষণে একবারও জয় শ্রী রাম শোনা গেল না মোদীর মুখে। 
  • Link to this news (আজ তক)