‘রক্ষকই ভক্ষক’, বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকার খুনে নারকেলডাঙা থানার তৎকালীন ওসি-সহ ৪ জনের জেল হেফাজত
প্রতিদিন | ১৯ জুলাই ২০২৫
অর্ণব আইচ: কাঁকুড়গাছির বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকার খুনে নারকেলডাঙা থানার তৎকালীন ওসি শুভজিৎ সেন, তৎকালীন তদন্তকারী অফিসার রত্না সরকার এবং হোমগার্ড দীপঙ্কর দেবনাথ-সহ চারজনের জামিন খারিজ। আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ আদালতের। বাকি ৬ জনকে শর্তসাপেক্ষে জামিনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অভিজিৎ সরকার হত্যা মামলার অতিরিক্ত চার্জশিটে নাম থাকা নারকেলডাঙার তৎকালীন ওসি, এস আই বিচারভবনে হাজিরা দেন। বিচারক বলেন, “রক্ষকই ভক্ষক হয়ে গেলে সমাজের কী হবে? সমাজ বলতে আমি আমার কথা বলছি।” এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে টানাপোড়েনের মাঝে তৎকালীন ওসির পদোন্নতি হয়। তা নিয়ে এদিন প্রশ্ন করে আদালত। বিচারক বলেন, “ঘটনার ১৯ দিন পরই ওঁর পদোন্নতি হল?” তৎকালীন ওসির আইনজীবী বলেন, “পদোন্নতি নিয়ে কিছু বলার থাকতে পারে না। ওটা প্রশাসনিক বিষয়।” পালটা বিচারকের খোঁচা, “ঠাকুরঘরে কে, আমি তো কলা খাইনি। আমি শুধুমাত্র পদোন্নতির দিনটির কথা বলছি।” তিনি আরও বলেন, “অবশ্যই এটা প্রশাসনিক বিষয়। এটা নিয়ে আমি কিছু বলব না। কিন্তু আমি দেখেছি যে প্রোমোশন হল আসলে পুরস্কার।” এরপর সবদিক খতিয়ে দেখে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
উল্লেখ্য, গত ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর খুন হন কাঁকুড়গাছির বিজেপি নেতা অভিজিৎ সরকার। পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, তাঁকে নৃশংস অত্যাচার করে খুন করা হয়। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে নারকেলডাঙা থানার পুলিশ তদন্তে নামে। পুলিশ ১৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়। পরে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে তদন্তভার নেয় সিবিআই। সেই সময় সিবিআই অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দেয়। তাতে মোট ২০ অভিযুক্তের নাম ছিল। চলতি মাসে দ্বিতীয় অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তাতে মোট ১৮ জনের নাম ছিল। ওই তালিকায় ছিলেন বিধায়ক পরেশ পাল এবং দুই কাউন্সিলরের। তারপরই তড়িঘড়ি কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন তাঁরা। আগাম জামিনের আর্জি জানান। সম্প্রতি কলকাতা হাই কোর্টে ওই মামলার শুনানিতে স্বস্তি পেলেন বিধায়ক পরেশ পাল, কাউন্সিলর স্বপন সমাদ্দার এবং পাপিয়া ঘোষ।