‘জয় শ্রীরাম ছেড়ে কালী-দুর্গার শরণ, আপনারই পরিবর্তন হয়ে গেল’! বাংলায় পরিবর্তনের ডাক নিয়ে মোদীকে বিঁধল তৃণমূল
আনন্দবাজার | ১৮ জুলাই ২০২৫
দুর্গাপুরের সভা থেকে উন্নয়নের বিকল্প মডেলের কথা বলে ২০২৬ সালে বাংলায় পরিবর্তনের ডাক দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতার অব্যবহিত পরেই তৃণমূলের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করে জবাব দিল বাংলার শাসকদল। শুক্রবারের সভায় শুভেন্দু অধিকারী, শমীক ভট্টাচার্য, সুভাষ সরকার, সৌমিত্র খাঁয়েরা তাঁদের বক্তৃতায় একাধিক বার ‘জয় শ্রীরাম’ বললেও মোদীর মুখে সেই শব্দবন্ধ শোনা যায়নি। বরং প্রধানমন্ত্রীর মুখে শোনা গিয়েছে ‘জয় মা কালী’, ‘জয় মা দুর্গা’ ধ্বনি। এটাকেই ‘পরিবর্তন’ বলে কটাক্ষ করল তৃণমূল।
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘পরিবর্তনটা হয়েছে মোদীজির মধ্যে। ‘জয় শ্রীরাম’ থেকে হয়ে গেল ‘জয় মা কালী’! এত পরিবর্তন! ১১ বছরের প্রধানমন্ত্রীকে বদলে দিল বাংলা।’’ বিজেপি-র ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান নিয়ে একটা সময়ে মমতা প্রায়ই বলতেন, ‘‘তোমরা যে রামের কথা বলো সেই রাম অকালবোধন করে দুর্গাপুজো করেছিলেন। আমরা সেই দুর্গার পুজো করি।’’ শনিবার মোদী মঞ্চে ওঠার পরে তাঁকে সম্মান জানাতে দুর্গামূর্তিতেই আস্থা রেখেছে বিজেপি। প্রধানমন্ত্রীর হাতে বাঁকুড়ার টেরাকোটার দুর্গামূর্তি তুলে দেন রাজ্য সভাপতি শমীক। আর বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু দেন ধাতুর দুর্গামূর্তি। রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য মোদীর উদ্দেশে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আজ এক বারও ‘জয় শ্রী রাম’ বলেননি! আর এটাও মনে রাখা দরকার, দুর্গাপুজোকে ইউনেস্কো-র স্বীকৃতি এনে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ আমরা মোদীজির পরিবর্তন লক্ষ করলাম।’’
তৃণমূল ছেড়ে বিজপিতে যাওয়া নেতাদেরও কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। কুণাল বলেন, ‘‘তৃণমূলে থাকার সময়ে যাঁদের বিরুদ্ধে বিজেপি দুর্নীতির অভিযোগ তুলত, আজ তাঁরাই প্রধানমন্ত্রীর পাশে। যাঁরা নিজের দলের প্রতি বিশ্বস্ত নয়, তাঁরা জনগণের প্রতি বিশ্বস্ত থাকবে কী ভাবে? যাঁরা তৃণমূল থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন, তাঁরাই এখন বিজেপির মুখ। আর সেই লোকজনের হাত ধরেই নাকি আপনি ‘পরিবর্তন’ আনবেন?’’ অনেকের মতে, নাম না-করে শুভেন্দু, সৌমিত্রদের কটাক্ষ করেছেন কুণাল।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় কসবা-সহ একাধিক ঘটনার কথা উল্লেখ করে বাংলায় মহিলাদের নিরাপত্তাহীনতার কথা তুলে ধরেন। পাল্টা বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলির উদাহরণ টানে তৃণমূল। চন্দ্রিমা বলেন, ‘‘মহিলাদের প্রতি সহানুভূতির কথা বলছেন? তা হলে ওড়িশার সেই মেয়েটির কথা বললেন না কেন, যিনি আগুনে পুড়ে মারা গেলেন? কলকাতায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্ত ধরা পড়ে, কিন্তু ওড়িশায় এখনও কিছুই হয়নি! যদি ওড়িশা এত উন্নত হয়, তবে কেন এখনও কেউ ধরা পড়েনি?’’