নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি ও সংবাদদাতা, দার্জিলিং: ধসে কার্যত বিধ্বস্ত কালিম্পং! শুক্রবার পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে কালিম্পং ও সিকিমের লাইফ লাইন ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক এবং বিকল্প সড়কে নামে ধস। যার জেরে শিলিগুড়ির সঙ্গে কালিম্পং ও প্রতিবেশী রাজ্য সিকিমের সড়ক যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এদিকে, তিনদিন আগে ধসে ক্ষতিগ্রস্ত দার্জিলিংগামী ১১০ নম্বর জাতীয় সড়কের তিনধরিয়া এলাকা নিয়ে উদ্বিগ্ন স্থানীয়রা। সংশ্লিষ্ট এলাকা মেরামতির পরিকল্পনা নিয়েছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ।
সিকিম ও কালিম্পংগামী ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের ধসপ্রবণ এলাকাগুলির মধ্যে বিরিকদারা অন্যতম। এদিন সকাল ১১টা নাগাদ আচমকাই সেই এলাকায় পাহাড়ের উঁচু অংশ থেকে নেমে আসে ধস। বোল্ডার, মাটি, নুড়ি ও গাছ নেমে আসায় এলাকাটি অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। স্থানীয়রা বলেন, অন্যান্য দিনের মতো এদিন সকাল থেকে রাস্তাটি স্বাভাবিক ছিল। একটি গাড়ি ও লরি যায়। আচমকাই পাহাড় থেকে নেমে আসে পাথর, মাটি, কাদা, নুড়ি ও গাছ। অল্পের জন্য গাড়ি ও লরি দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। সম্ভবত এদিন পাহাড়ের উঁচু অংশে বৃষ্টি হওয়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
ধসের জেরে ঘটনাস্থলের দু’পাশে যান বাহনের লম্বা লাইন পড়ে যায়। পুলিস ও প্রশাসন রাস্তায় নেমে পরিস্থিতির মোকাবিলা করে। আর্থমুভার দিয়ে ধস সরানোর কাজে নামে প্রশাসন। কিন্তু পাহাড়ের উঁচু অংশ থেকে ক্রমাগত পাথর পড়ায় সেই কাজ ব্যহত হচ্ছে। এখন সিকিম, কালিম্পং ও শিলিগুড়ির মধ্যে যানবাহন ঘুরপথে চলাচল করছে।
কালিম্পংয়ের জেলাশাসক বালাসুব্রহ্মণ্যম টি বলেন, বিরিকদারার ওই ধস সরানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু ক্রমাগত পাথর নেমে আসার জেরে সেই কাজ বিলম্বিত হচ্ছে। বর্তমানে রাস্তাটি দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাস্তাটি খুলে দেওয়া হবে বলে আশা করছি। কালিম্পংয়ের পুলিস সুপার শ্রীহরি পাণ্ডে বলেন, পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হয়েছে। সেখানে পুলিস মোতায়েন রয়েছে।
এদিন সন্ধ্যায় লাভা-গোরুবাথান রোডের পাপড়খেতিতে নামে ধস। এটা কালিম্পং ও সিকিমের সঙ্গে শিলিগুড়ির সড়ক যোগাযোগের বিকল্প রাস্তা। ধসের জেরে সেটি বন্ধ হওয়ায় শিলিগুড়ি থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন কালিম্পং ও সিকিম। গোরুবাথানের শোভন দাস অবশ্য বলেন, সংশ্লিষ্ট রাস্তা জিআরইএফের অধীনে। ধস সরানোর জন্য তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা ধস সরানোর কাজে নামছে। ভারী বৃষ্টির কারণে তা ব্যহত হচ্ছে। বৃষ্টি থামলেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে আশা করছি।
এদিকে, তিনদিন আগে দার্জিলিংগামী ১১০ নম্বর জাতীয় সড়কের তিনধরিয়া এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। স্থানীয়দের একাংশ বলেন, সেখানে রাস্তার ১০-১২ মিটার লম্বা অংশ খাদের দিকে ধসে গিয়েছে। যান চলাচল বন্ধ না হলেও জাতীয় সড়কের সেই অংশ বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। জোর বৃষ্টি হলে সংশ্লিষ্ট এলাকার পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শীঘ্রই সেখানে রাস্তা মেরামতির কাজে হাত দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।