সংবাদদাতা, মাথাভাঙা: বিজেপি বিধায়কের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ, কাচ ভাঙা। তার জেরে শুক্রবার ব্যাপক উত্তেজনা ছড়াল মাথাভাঙা-২ ব্লকের ঘোকসাডাঙা স্টেশন চত্বরে। এদিন সকালে ঘোকসাডাঙা স্টেশনে ট্রেনের টিকিট কাটতে এসেছিলেন মাথাভাঙার বিধায়ক সুশীল বর্মন। তিনি স্টেশন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অভিযোগ, সেই সময় বিধায়কের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। পদ্মবিধায়কের গাড়ির চালক ও নিরাপত্তারক্ষীরা নেমে এলে তাঁদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। এমনকী ঢিল ছুড়ে এমএলএ’র গাড়ির পিছনের কাচ ভেঙে দেওয়া হয়।
বিধায়কের অভিযোগ, তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাঁর গাড়িতে হামলা চালিয়েছে। পাল্টা তৃণমূলের দাবি, দেহরক্ষী ও চালককে দিয়ে সাধারণ তৃণমূল কর্মীদের মারধরে উস্কানি দিয়েছেন বিধায়ক। চারজন তৃণমূল কর্মী আহতও হয়েছেন।
স্টেশন থেকে বিধায়ক সাদা গাড়ি নিয়ে বের হতেই একঝাঁক তৃণমূল নেতা-কর্মীরা রে রে করে ওঠেন। তাঁরা বিধায়কের গাড়ি আটকে তর্কাতর্কি শুরু করেন। পরে এলাকা ছেড়ে বিধায়ক গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় গাড়ির পিছনের কাচ ভেঙে দেওয়া হয়। বিজেপি বিধায়ক বলেন, আমি ঘোকসাডাঙা স্টেশনে টিকিট কাটতে গিয়েছিলাম। সেই সময়ে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা আমাকে দেখে স্লোগান দিতে শুরু করেন। পরে তাঁরা গাড়ির সামনে চলে এসে গালাগাল দিতে থাকেন। আমি ওঁদের শান্ত হতে বলি। সেই সময়ে আমাকে গাড়ি থেকে টেনে নামানোর চেষ্টা করে। দেহরক্ষীদেরও হেনস্তা করে। ঢিল মেরে গাড়ির কাচ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের হামলা করে তৃণমূল ভোটে জিততে পারবে না। মানুষই এসবের জবাব দেবে।
এই হামলার ঘটনার সময় সেখানে ছিলেন মাথাভাঙা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সাবলু বর্মন। তিনি বলেন, কলকাতায় শহিদ দিবসে যোগদান করতে আমাদের কর্মীরা স্টেশনে ছিলেন। বিধায়ক তাঁর চালককে পাঠিয়ে আগে টিকিট কাটেন। সাধারণ মানুষ এমএলএ’কে ঘিরে এনআরসি, বাঙালি শ্রমিকদের ভিনরাজ্যে হেনস্তার বিষয়ে প্রশ্ন করেন। এরপর বিধায়ক তাঁর দেহরক্ষী ও চালককে দিয়ে তাঁদের মারধর করান। এতে আমাদের কয়েকজন আহত হয়েছেন। চারজন ঘোকসাডাঙা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা করিয়েছেন। আমরা ঘোকসাডাঙা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি। স্বাভাবিকভাবেই এনিয়ে জেলায় রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়িয়েছে। শাসক দলকে আক্রমণ করে বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ বর্মনের বক্তব্য, সুশীলবাবু শান্ত স্বভাবের মানুষ। এদিন স্টেশনে টিকিট কাটতে গিয়ে তৃণমূল কর্মীদের হামলার শিকার হতে হয়েছে তাঁকে। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। আসলে তৃণমূল পায়ের তলায় মাটি না পেয়ে এ ধরনের কাজ করছে।
পাল্টা তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মন বলেন, মানুষের ভোটে জিতে মানুষের কাজ না করলে প্রশ্ন তো উঠবেই। সুশীল বর্মন এই সাড়ে চার বছরে কী কাজ করেছেন, সেটা সাধারণ মানুষ জানতে চাওয়ায়, তাঁদের দিকে উনি দেহরক্ষীদের লেলিয়ে দিয়েছেন। ভেঙেছে বিধায়কের গাড়ির কাচ। - নিজস্ব চিত্র।