• ঘণ্টা বাজলে খেতে হবে জল, অভিনব ‘ওয়াটার সাইরেন’ মাদারিহাট গার্লসে
    বর্তমান | ১৯ জুলাই ২০২৫
  • সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: একটা মাঝারি মাপের বোতলে করে স্কুলে জল নিয়ে গেলেও তা খালি হয় না। বিকেলে যখন স্কুল থেকে ফেরে শ্রাবন্তী, তখন অর্ধেক বোতলই জলে ভর্তি। এনিয়ে চিন্তার শেষ নেই ওর মায়ের। সারাদিন স্কুলে এই গরমে কাটিয়েও জল আর কিছুতেই খায় না শ্রাবন্তী। মায়ের বকাঝকাই সার।

    বাচ্চাদের এই জল কম খাওয়ার ‘রোগ’টা সর্বত্রই। আর সেই ‘রোগের’ আশ্চর্য ‘দাওয়াই’ বার করেছে মাদারিহাট গার্লস হাইস্কুল। শুক্রবার থেকে সেখানে চালু হয়েছে ‘ওয়াটার সাইরেন’। এই জিনিসটা ঠিক কী? স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখন থেকে প্রতি আধ ঘণ্টায় বেজে উঠবে সেই সাইরেন। আর তা বাজলেই জল খেতে হবে ছাত্রীদের। তবে ছাড় নেই বড়দেরও। ছোটরা যাতে তাঁদের দেখেই শেখে, তাই সাইরেন বাজলে জলপান করতে হবে শিক্ষিকাদেরও।

    কর্তৃপক্ষের দাবি, রাজ্যে এই ওয়াটার সাইরেন সিস্টেম চালুর বিষয়ে মাদারিহাট গার্লস হাইস্কুল দ্বিতীয়। আলিপুরদুয়ার জেলায় প্রথম। রাজ্যে জল খাওয়ার এই ওয়াটার সাইরেন প্রথম চালু করেছে দার্জিলিং জেলার বিধাননগরের মুরালীগঞ্জ হাইস্কুল। মাদারিহাট গার্লস হাইস্কুলে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। পড়ুয়ার সংখ্যা ৫৩৭। শিক্ষিকা ২০ জন। আছেন শিক্ষাকর্মীরাও। প্রত্যেকের জন্য শুক্রবার থেকে চালু হল এই জল খাওয়ার নিয়ম। 

    কিন্তু কেন এভাবে নির্দিষ্ট সময় অন্তর জল খাওয়া বাধ্যতামূলক করা হল? কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পড়ুয়ারা মূলত আসে আশপাশের চা বাগান থেকে। পড়ুয়াদের ত্বকের শুষ্কতা দেখে মনে হয়েছে তাদের জলপানে ঘাটতি আছে। তা ছাড়া পড়ুয়ারা অনেকে পেটের রোগে ও ডিহাইড্রশনে ভুগছে। মাদারিহাট গার্লসের প্রধানশিক্ষিকা কাজী রুনালায়লা খানম বলেন, মুরালীগঞ্জ হাইস্কুলের মতো আমরাও সিদ্ধান্ত নিয়েছি পড়ুয়াদের জলপানের ঘাটতি মেটাব। তারপরই এই উদ্যোগ নেওয়া হল।

    মাদারিহাট হাইস্কুলে জল পরিস্রুত করার জন্য তাই একাধিক মেশিন বসানো হয়েছে। স্কুলে প্রার্থনার পর পড়ুয়াদের বলা হয় বাড়িতে ফিরে গিয়ে তারাও যেন তাদের অভিভাবকদের আধ ঘণ্টা অন্তর জল খেতে বলে। মাদারিহাট গার্লস হাইস্কুল জলপানের এই অভিনব পন্থা চালু করায় খুশি শিক্ষামহলও।
  • Link to this news (বর্তমান)