জাপানি এনসেফেলাইটিসে মৃত্যুর জের শুয়োরের খাটাল বন্ধ করল প্রশাসন
বর্তমান | ১৯ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: জাপানি এনসেফেলাইটিসে (জে ই) মৃত্যুর জের। শুয়োরের খাটাল বন্ধে কড়া অভিযান প্রশাসনের। শুক্রবার জলপাইগুড়ি সদরের গড়ালবাড়ি ও বাহাদুর পঞ্চায়েত এলাকায় দু’টি শুয়োরের খাটাল বন্ধ করা হল। আর কোথাও লোকালয়ে চোরাগোপ্তাভাবে শুয়োরের খাটাল চলছে কি না তা খতিয়ে দেখতে জোর অভিযান চালাচ্ছে প্রশাসন। জাপানি এনসেফেলাইটিসে আক্রান্তের খোঁজ মেলায় সদর ব্লকে কোথাও শুয়োরের খাটাল চলতে দেওয়া যাবে না, রাজ্য প্রশাসনের তরফে এমনটাই নির্দেশ এসেছে বলে জানিয়েছেন জলপাইগুড়ি সদরের ব্লক প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন আধিকারিক শৌভিক বাড়ুই। জলপাইগুড়ি জেলায় এখনও পর্যন্ত জাপানি এনসেফেলাইটিসে আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচজন বলে জানিয়েছেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ অসীম হালদার।
এদিকে, জাপানি এনসেফেলাইটিসের উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হওয়া পাহাড়পুর পঞ্চায়েতের জমিদারপাড়ার ওই বাড়িতে গিয়ে এদিন দেখা যায়, পরিবারের লোকজন যথেষ্ট আতঙ্কিত। মৃতার দেওর বলেন, ১ জুলাই বউদিকে জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের অধীন সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরীক্ষার পর জানানো হয়, বউদির জাপানি এনসেফেলাইটিস হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসা চললেও শেষরক্ষা হয়নি। ১৪ জুলাই মারা গিয়েছেন বউদি। আমরা একই বাড়িতে থাকি। ফলে আতঙ্কে রয়েছি। কীভাবে বউদি আক্রান্ত হলেন বুঝতে পারছি না। পরিবারের অন্য সদস্যরা অবশ্য জানিয়েছেন, ৫৩ বছরের ওই প্রৌঢ়ার জাপানি এনসেফেলাইটিস পজিটিভ রিপোর্ট আসতেই স্বাস্থ্যকর্মীরা তাঁদের বাড়ি এসে স্প্রে করে যান। আশপাশের জঙ্গল কেটে দিয়ে যান। ওই বাড়িতে অবশ্য এই মুহূর্তে কারও জ্বর নেই।
জলপাইগুড়ি সদরের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ প্রীতম বসু বলেন, আমার ব্লকে এখনও পর্যন্ত জাপানি এনসেফেলাইটিসে আক্রান্ত দু’জনের খোঁজ মিলেছে। এর মধ্যে জে ই’র উপসর্গ থাকা একজনের মৃত্যু হয়েছে। বাহাদুর পঞ্চায়েত এলাকার একজন জলপাইগুড়ি মেডিক্যলে চিকিৎসাধীন। কীভাবে তাঁরা জে ই’তে আক্রান্ত হলেন, সেই খোঁজ চলছে।
জলপাইগুড়ি সদরের ব্লক প্রাণিসম্পদক উন্নয়ন আধিকারিক বলেন, গড়ালবাড়ি পঞ্চায়েতের শোবারহাট ও বাহাদুর পঞ্চায়েতের জহুরি এলাকায় দু’টি শুয়োরের খাটালের খোঁজ মিলেছে। দু’টি খাটালই বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শোবারহাটে যে ব্যক্তির শুয়োরের খাটাল রয়েছে, তিনি সেটি বন্ধ করতে চাইছিলেন না। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁকে বিডিও অফিসে ডাকা হয়েছিল। তিনি যদি খাটাল বন্ধ না করেন, তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। শৌভিকবাবুর দাবি, শুক্রবার সকালে ওই খাটালে থাকা শুয়োরের রক্ত পরীক্ষার জন্য আমাদের প্রাণী চিকিৎসক যান। তিনি গিয়ে দেখেন, রাতারাতি সব শুয়োর সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। খাটালের মালিক জানান, তিনি সমস্ত শুয়োর বিক্রি করে দিয়েছেন। বাহাদুর পঞ্চায়েত এলাকার খাটালের মালিকও সমস্ত শুয়োর বিক্রি করে দিয়েছেন।