নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: কিশোরীকে ধর্ষণের ভিডিও প্রথমে মোবাইলে বন্দি। তারপর সেই ভিডিও ফাঁস করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে দুই বন্ধু মিলে ওই কিশোরীকে একাধিকবার ধর্ষণ। বানারহাট থানা এলাকার এ ঘটনায় অভিযুক্তদের একজনকে ২৫ বছর, অন্যজনকে ২০ বছর জেলের নির্দেশ দিল আদালত। শুক্রবার ওই সাজা ঘোষণা করেন জলপাইগুড়ি বিশেষ পকসো আদালতের বিচারক রিণ্টু শূর।
মামলার সরকারপক্ষের আইনজীবী দেবাশিস দত্ত বলেন, ২০২৩ সালের ১০ মে বানারহাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতা নাবালিকার মা। তিনি মেয়ের মধ্যে কিছুদিন ধরে অসুস্থতা লক্ষ্য করছিলেন। তিনি মেয়েকে প্রথমে চা বাগানের চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। চিকিৎসক পরীক্ষা করে জানান, ১৬ বছরের ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা। এরপর নাবালিকার মা তাঁর মেয়েকে মালবাজারে নিয়ে যান। সেখানে একটি ল্যাবে কিশোরীর আল্ট্রাসোনোগ্রাফি হয়। তাতেও ধরা পড়ে মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা। এরপরই নাবালিকার মা মেয়ের কাছে বিষয়টি জানতে চান।
সরকারপক্ষের আইনজীবীর দাবি, মাকে ওই কিশোরী জানায়, ২০২২ সালের জুন মাসে দিদিমার সঙ্গে সে এলাকায় একটি অনুষ্ঠানবাড়িতে গিয়েছিল। সেখানে এক যুবক তাকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। ওই বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগ নিয়ে সেখানে ধর্ষণ করে। ওই ঘটনার ভিডিও মোবাইলে রেকর্ড করে অভিযুক্ত। পরবর্তীতে সেই ভিডিও অভিযুক্ত যুবক তার এক বন্ধুকে পাঠায়। এরপর থেকে ভিডিও ফাঁস করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে দু’জনে মিলে একাধিকবার কিশোরীকে ধর্ষণ করে। এতেই নাবালিকা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে।
মামলার সরকারপক্ষের আইনজীবী বলেন, অভিযোগ পেয়েই পুলিস দু’জনকে গ্রেপ্তার করে। তদন্ত শেষ করে আদালতে মামলার চার্জশিট জমা পড়ে। যেহেতু ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা ছিল, তার ডিএনএ পরীক্ষা হয়। সেই রিপোর্ট পজিটিভ আসে। মামলায় মোট ১২ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন। আদালতে জমা পড়া সমস্ত তথ্যপ্রমাণ ও সাক্ষ্যের ভিত্তিতে বিচারক অভিযুক্ত দু’জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন। এদিন তাদের একজনকে ২৫ বছর, অন্যজনকে ২০ বছর সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় আদালত। একইসঙ্গে নির্যাতিতাকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে পাঁচ লক্ষ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ডিস্ট্রিক্ট লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটিকে। নিজস্ব চিত্র।