নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: রূপনারায়ণ নদে জল আগের থেকে কমলেও এখনও বিপদসীমার উপরেই রয়েছে। জল ছাড়ার পরিমাণ কমিয়ে শুক্রবার ডিসচার্জ করেছে ৫৯ হাজার ১৭৫ কিউসেক হারে। তবে খানাকুল ২ ব্লকের নিচু এলাকাগুলিতে এখনও জল জমে রয়েছে। ফলে বাসিন্দাদের দুর্ভোগ কমেনি। ওই ব্লকের মারোখানা, জগৎপুর, ধান্যঘোরী, রাজহাটি ১ পঞ্চায়েতের নিচু এলাকাগুলি আগেই জল মগ্ন হয়েছিল। সেখানে এখনও জল জমে রয়েছে। তাই বাসিন্দাদের যাতায়াতের জন্য ব্লক প্রশাসন ও খানাকুল থানার তরফে পৃথক নৌকা ও ট্রাক্টর পরিষেবা চালু করা হয়েছে। মারোখানা এলাকায় এদিন থেকে বিনামূল্যে নৌকা পরিষেবা চালু করেছেন খানাকুল ২ বিডিও মহম্মদ জাকারিয়া। অন্যদিকে, মারোখানায় খানাকুল থানার তরফে ট্রাক্টর পরিষেবা শুরু করা হয়। বিডিও বলেন, জল রয়েছে কিছু এলাকায়। আবার কিছু এলাকায় জম নামছেও। কিন্তু জোয়ার হলে ফের জল বেড়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের তরফে ত্রাণ পাঠানো হচ্ছে। মারোখানায় একটি নৌকা ও জগৎপুর পঞ্চায়েত এলাকার জন্য একটি ট্রাক্টর পরিষেবা বিনামূল্যে চালানো হয়েছে।
মারোখানার চাঁদকুণ্ডু এলাকার বাসিন্দা জয়রাম জানা বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে জল একই রকম অবস্থায় রয়েছে। জোয়ারের জন্য জলস্তর একই রকম রয়েছে। তার ফলে যোগাযোগে সমস্যা হচ্ছে। রাস্তাঘাট ডুবে রয়েছে। নৌকায় ও জলের মধ্যে দিয়ে হেঁটে যাতায়াত করতে হচ্ছে। পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। কেউ অসুস্থ হলে সমস্যায় পড়তে হতে পারে। নৌকার অপ্রতুলতাও রয়েছে। তবে এদিন থেকে ট্রাক্টর, নৌকা পরিষেবা চালু হওয়ায় কিছুটা সুবিধা হবে আশা করা যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ডিভিসি জল ছাড়া কমালে তবেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। কিন্তু প্রতিদিন ডিভিসি জল ছাড়ায় উদ্বেগ থেকেই যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার ৬২ হাজার কিউসেক জল ছাড়ে। কিন্তু এদিন কিছুটা কমানো হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকাল পর্যন্ত রূপনারায়ণ নদের জলস্তর ছিল ৭.৩৭ মিটার। ওই নদের চরম বিপদসীমা ধরা হয় ৭.৪৫ মিটার। বৃহস্পতিবারের সামান্য কমেছে জলস্তর। দ্বারকেশ্বর নদেও আগের তুলনায় কিছুটা জল কমেছে। তবে প্রায় একইরকমভাবে এখনও ফুঁসছে মুন্ডেশ্বরী ও দামোদর। ওই দু’টি নদনদীর জলস্তর অবশ্য বিপদসীমা থেকে নীচে রয়েছে। জলমগ্ন এলাকাগুলিতে ইতিমধ্যে মেডিক্যাল ক্যাম্পও শুরু করেছে স্বাস্থ্যদপ্তর। খানাকুল ২ এর বিএমওএইচ রক্তিম চট্টোপাধ্যায় বলেন, ত্রাণ শিবিরগুলিতেই মেডিক্যাল ক্যাম্প করা হচ্ছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেভাবে কোনও অসুস্থতার খবর পাওয়া যায়নি। জল পেরিয়ে কখনও নৌকায়, কখনও হেঁটে পরিষেবা দিচ্ছেন চিকিৎসক ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরা। প্রসূতিদের শারীরিক অবস্থার দিকেও নজর রয়েছে।