• অনাবাসী বাঙালির সঙ্গে সাড়ে ৩ কোটির প্রতারণা, ইন্দোর থেকে গ্রেপ্তার অভিযুক্ত
    বর্তমান | ১৯ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: এক অনাবাসী বাঙালিকে সাড়ে তিন কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার এক ভুয়ো শিল্পপতি। অভিযুক্তের নাম ত্রিভুবন যাদব। মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর থেকে এই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতায় নিয়ে আসছে গড়িয়াহাট থানার পুলিস। তার বিরুদ্ধে  প্রায় ৫০ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে।

    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, গড়িয়াহাটের বাসিন্দা নিশীথ গঙ্গোপাধ্যায় কর্মসূত্রে লন্ডনে থাকেন। মাঝেমধ্যে তিনি কলকাতায় আসেন। ২০২৩ সালের গোড়ায় দেশে ফিরলে এক পার্টিতে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় ত্রিভুবনের। সে নিজেকে ইন্দোরের শিল্পপতি বলে পরিচয় দেয়। কোথায় কোথায় কারখানা রয়েছে, সেই ছবি ও নথি দেখায় তাঁকে। এদিকে, নিশীথবাবু সেই সময় ভারতে বিনিয়োগের কথা চিন্তাভাবনা করছিলেন। তিনি ত্রিভুবনকে শিল্পপতি ভেবে তাঁর কাছে জানতে চান, কোথায় এবং কোন শিল্পে বিনিয়োগ করা লাভজনক হবে। ত্রিভুবন বলে, ইন্দোর হল নতুন শিল্প স্থাপনের আদর্শ জায়গা। এখানে বায়ো ফুয়েল শিল্পের ভবিষ্যৎ খুব ভালো। কয়েক দফা আলোচনার পর ওই অনাবাসী বাঙালি এখানে বিনিয়োগে উৎসাহ দেখান। যৌথভাবে একটি কোম্পানি তৈরি হয়। সে বলে, ইন্দোরে জমি দেখা হয়ে গিয়েছে। এরপর নিশীথবাবুর থেকে সে দফায় দফায় সাড়ে তিন কোটি টাকা নেয় বলে অভিযোগ। টাকা পেমেন্ট হয় ব্যাঙ্কের মাধ্যমে। বিনিয়োগকারী ইন্দোরে যেতে চাইলে ত্রিভুবন বলে, এখন আসার দরকার নেই। এখানে ইডি, সিবিআইয়ের ঝামেলা চলছে। পরে আবার বলে, শুল্ক দপ্তরের কড়াকড়ি চলছে। এভাবে টালবাহানা করায় সন্দেহ হওয়ায় নিশীথবাবুর। তিনি মধ্যপ্রদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারেন, নতুন শিল্প স্থাপনের কোনও আবেদন জমা পড়েনি। এরপর কলকাতায় ফিরে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে অভিযোগ করেন গড়িয়াহাট থানায়। তার ভিত্তিতে পুলিস জালিয়াতি, প্রতারণা সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে। 

    তদন্তে নেমে পুলিস অভিযুক্তের মোবাইল নম্বর জোগাড় করে। কিন্তু দেখা যায়, সে বারে বারে নম্বর পাল্টেছে। ফলে সহজে তার হদিশ মিলছিল না। দিন তিনেক আগে তদন্তকারীরা তার নতুন নম্বর হাতে পান। ওই নম্বরের লোকেশন পাওয়া যায় ইন্দোরে। গড়িয়াহাট থানার ওসি অঞ্জন সেন তড়িঘড়ি একটি টিম সেখানে পাঠিয়ে দেন। সাব ইনসপেক্টর অমর সুব্বার নেতৃত্বে চারজনের একটি টিম ত্রিভুবনকে শুক্রবার সকালে গ্রেপ্তার করে। তাকে শুক্রবার সেখানকার আদালতে তোলা হয়। ট্রানজিট রিমান্ডে তাকে কলকাতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। তদন্তে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত নিজেকে শিল্পপতি পরিচয় দিয়ে একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে প্রতারণা করেছে। যার পরিমাণ ৫০ কোটির বেশি বলে জানা গিয়েছে। কারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন, তাকে জেরা করে তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।
  • Link to this news (বর্তমান)