• প্রচারে গিয়ে সব রাজ্যকেই ‘এক নম্বর’ করার দাবি, মোদির বিকাশ-প্রতিশ্রুতি এবার বাংলায়! পাল্টা তোপ তৃণমূলের
    বর্তমান | ১৯ জুলাই ২০২৫
  • সুমন তেওয়ারি, দুর্গাপুর; ডাবল ইঞ্জিন রাজ্যে বাঙালি হেনস্তা হয়। আর সেই বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়েই ‘বিকশিত বাংলা’র প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি! দাবি করেন, বিজেপির বীজ বপন হয়েছে বাংলা থেকে। কারণ, দলের নেপথ্য চরিত্র শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। তাই বাংলাই প্রেরণা, পরম্পরা বিজেপির কাছে। স্লোগান দেন বাঙালি ‘অস্মিতা’ নিয়ে। কিন্তু বাংলা ভাষায় কথা বললেই বাঙালিকে পুশব্যাক নিয়ে একটি শব্দও উচ্চারণ করেন না। চিরাচরিত চিত্রনাট্য মেনে প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়ে দেন। বলেন, ‘একবার সুযোগ দিন। বাংলাকে এক নম্বর করব।’ ঠিক যেভাবে প্রত্যেক রাজ্যের ভোটের আগে, প্রতিটি প্রচারসভাতেই করে থাকেন নরেন্দ্র মোদি। মহারাষ্ট্র হোক, উত্তরপ্রদেশ, কর্ণাটক বা ওড়িশা। এবার বাংলার পালা। কারণ, ভোট আসছে। তাই বিকাশ-প্রতিশ্রুতির জন্য এবার প্রধানমন্ত্রী বেছে নিয়েছেন এ রাজ্যকে। দুর্গাপুরের সভামঞ্চকে।

    শুক্রবার মোদি এলেন। দেখলেন। চেনা পরিচিত ‘গ্যারান্টি’ দিলেন। কিন্তু জয় করলেন, সেকথা বলা যায় না। কারণ, বাঙালি নিরাপত্তা চায়। যা বিজেপির শাসনে ক্রমশ অধরা হয়ে চলেছে। তৃণমূল ইতিমধ্যেই মোদির ‘বিকাশে’র পাল্টা কটাক্ষ ছুড়ে রেখেছে। অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যর আক্রমণ, ‘হিন্দির বিকসিত ভারত যখন বাংলা হয়ে যায়, বুঝতে হবে চাপ ভালোই পড়েছে। তবে জানতে চাই, কীসের বিকশিত? প্রতিশ্রুতির ২২ কোটি চাকরি ১২ লক্ষ হয়ে গেল। এর ব্যাখ্যা দিলেন না কেন? পরিস্থিতি যা দেখছি, বিজেপির ৪০ আসন পাওয়া নিয়েও সন্দেহ রয়েছে।’ তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘কেন্দ্রের রিপোর্ট বলছে, বাংলার বিকাশ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরেই। আর যে জায়গায় দাঁড়িয়ে মোদি এত কথা বললেন, সেখানকার মানুষ কিন্তু ১০০ দিনের কাজের টাকা পাননি। সেটা আনলেন কী?’ 

    তারপরও মোদির দাবি, ‘যেখানে বিজেপি, সেখানেই বাংলার সম্মান। বাম-তৃণমূল কারও বাংলাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেওয়ার কথা মনে পড়েনি। আমরা সেটা করেছি।’ বাঙালিকে পাশে পাওয়ার মরিয়া চেষ্টায় মোদির মন্তব্য, ‘দেশকে প্রথম ইনভেস্টমেন্ট পলিসি দিয়েছে বাংলা। দ্বারকানাথ ঠাকুর ইংরেজ আমলে দেশে ব্যাঙ্কিং রিফর্ম করেছেন। বীরেন মুখোপাধ্যায়ের ইস্পাত কারখানা ভারী শিল্পে দিশা দেখিয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি বদলেছে। উন্নয়নের সামনে প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়ে আছে তৃণমূল। তাই পরিবর্তন চাই।’ এই পরিবর্তনের দাবি তুলেই ৫৪০০ কোটি টাকার প্রকল্পের ঘোষণা করেছেন মোদি। ঘরে ঘরে পাইপলাইনে গ্যাস পৌঁছনোর আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু কেন্দ্রের ঘরে আটকে থাকা বাংলার প্রাপ্য ১ লক্ষ ৭৫ হাজার কোটি টাকা? প্রতিশ্রুতির ঢক্কানিনাদে সেই বঞ্চনা-মুক্তির শব্দ শোনা যায়নি।
  • Link to this news (বর্তমান)