পুলিশি নোটিস পাঠানো যাবে না ওয়টস্যাপ বা মেল মারফত, নির্দেশ
আনন্দবাজার | ১৯ জুলাই ২০২৫
ওয়টস্যাপ বা ইমেল মারফত কোনও নোটিস পাঠানো যাবে না অভিযুক্ত কিংবা সাক্ষীকে। এমনকি অভিযোগকারীর কাছ থেকে কোনও নথি বা সামগ্রী চাইতে হলে বা অস্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে কাউকে ডেকে পাঠাতে হলে তদন্তকারীকে সে সব করতে হবে প্রথাগত নিয়মে। কোনও ভাবেই বৈদ্যুতিন মাধ্যম ব্যবহার করে নোটিস পাঠানো যাবে না। তা হলে নোটিস কী ভাবে পাঠানো হবে, তা নিয়ে ভবানী ভবনের তরফে তদন্তকারীদের জন্য নির্দেশ জারি করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ভারতীয় কার্যবিধি বা ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার (বিএনএসএস) ধারা উল্লেখ করে ওয়টস্যাপ বা মেলে সাক্ষী বা অভিযুক্তকে নোটিস পাঠালে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে নির্দেশে রয়েছে।
উল্লেখ্য, ওয়টস্যাপে ভুয়ো নোটিস পাঠিয়ে ডিজিটাল গ্রেফতারির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সাইবার প্রতারকেরা। ওয়টস্যাপ বা ইমেল ব্যবহার করে নোটিস পাঠানো না হলে প্রতারকেরা ধাক্কা খাবে বলে মত পুলিশের কর্তাদের।
এ সব দেখার জন্য ভবানী ভবনের তরফে পুলিশ সুপার, সহকারী নগরপাল, এসডিপিও-র মতো সুপারভাইসরি অফিসারদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, সুপ্রিম কোর্টের একটি রায় উল্লেখ করে গত সোমবার ভবানী ভবনের তরফে ওই নির্দেশ জারি হয়েছে। সত্যেন্দ্রকুমার আন্তিল বনাম সিবিআই এবং অন্যান্যদের নিয়ে একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল, ওয়টস্যাপ কিংবা ইমেলের মাধ্যমে কোনও নোটিস পুলিশ দিতে পারবে না। সর্বোচ্চ আদালতের পক্ষ থেকে রাজ্যগুলিকে তা নিয়ে নির্দেশিকা জারি করতে বলা হয়েছিল। সেই মতোই রাজ্য পুলিশের তরফে ওই নির্দেশ জারি হয়েছে।
পুলিশের একটি অংশের মত, বেশ কিছু দিন ধরেই তদন্তকারীদের বেশির ভাগ সাক্ষী কিংবা অভিযুক্তকে হাতে হাতে বা পোস্টের মাধ্যমে নোটিস পাঠান না বলে অভিযোগ। তা না করে তদন্তকারীদের একাংশ ভারতীয় কার্যবিধির ৪১এ (বিএনএসএস ৩৫), ১৬০ (বিএনএসএস ১৭৯) এবং ১৭৫ (বিএনএসএস ১৯৫) ধারা মেনে নোটিস পাঠাতে ব্যবহার করেছেন ওয়টস্যাপ কিংবা ইমেল।
রাজ্য পুলিশের এক কর্তা জানান, সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়েছে, কোনও ভাবেই প্রথাগত পদ্ধতির বাইরে বেরিয়ে কাউকে নোটিস পাঠানো যাবে না। যদি কেউ ওয়টস্যাপ কিংবা ইমেলের মাধ্যমে ওই তিনটি ধারায় নোটিস পাঠান, তবে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ জানিয়েছে, সাত বছরের কম সাজার ক্ষেত্রে অভিযুক্তকে নোটিস পাঠিয়ে হাজির হতে বলার জন্য ভারতীয় কার্যবিধির ৪১এ বা নতুন বিএনএসএস ৩৫ ধারা ব্যবহার হয়। প্রত্যক্ষদর্শী বা সাক্ষীকে তলব করার জন্য ভারতীয় কার্যবিধির ১৬০ বা বিএনএসএস ১৭৯ ধারা ব্যবহার করেন তদন্তকারীরা। আত্মহত্যা বা অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলায় ডেকে পাঠানোর জন্য পুলিশকে ভারতীয় কার্যবিধির ১৭৫ বা বিএনএসএস ১৯৫ ধারা ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। ওই তিনটি ধারার ক্ষেত্রেই ওয়টস্যাপ বা ইমেলের ব্যবহার না করে প্রথাগত পদ্ধতি ব্যবহারকরতে হবে।