কারও স্কুলের ব্যাগ সাইকেলের সিটে, কারও ব্যাগ মাথায়। জল পেরিয়ে স্কুলে যাচ্ছে তারা। কারও সঙ্গে গামছা। কারও সঙ্গে অতিরিক্ত পোশাক। জল পেরিয়ে ভিজে পোশাক পাল্টে বা শুকিয়ে নিচ্ছে তারা। ফি-বর্ষায় লাভপুরের ঠিবা অঞ্চলের জয়চন্দ্রপুর ও চতুর্ভুজপুরের ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ মানুষ এই যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। অভিযোগ, বর্ষায় গ্রাম দু’টি চার-পাঁচ মাস জলবন্দি থাকে।
জয়চন্দ্রপুর ও চতুর্ভুজপুর গ্রামে যাওয়ার একমাত্র রাস্তাটি রয়েছে। সেটি জামনা অঞ্চলের ধ্রুববাটি থেকে বগতোড় বিল হয়ে যায়। রাস্তাটির দৈর্ঘ্য চার কিলোমিটার। সম্প্রতি রাস্তাটি কংক্রিটের হয়েছে। গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিল থেকে তিন কোটি একুশ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে রাস্তাটি তৈরি করতে। কিন্তু জল-যন্ত্রণা মেটেনি। এলাকাবাসী জানান, রাস্তাটির প্রায় দু’কিলোমিটার বগতোড়ের বিল হয়ে যায়। এর মধ্যে সবচেয়ে নিচু প্রায় ৪০০ ফুট অংশ। ফি-বর্ষায় এ অংশে জল জমে যায়। এ বার প্রায় চার ফুট জল জমেছে। এখানে কার্যত প্রাণ হাতে করে যাতায়াত করতে হয় ছোট ছাত্রছাত্রী ও গ্রামবাসীর।
অভিযোগ, যেতে গিয়ে বইয়ের ব্যাগ, সাইকেল এবং পোশাক ঠিক রাখটাই কঠিন ছাত্রছাত্রীদের। নবম শ্রেণির ছাত্রী পায়েল ঘোষ, অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী রিয়াঙ্কা মণ্ডেলরা জানায়, জল পেরিয়ে কখনও ভিজে পোশাক পরিবর্তন করে আবার কখনও শুকিয়ে স্কুলে যেতে হয়।
গ্রামবাসী জানান, রাস্তার একদম নিচু অংশে দেড়শো ফুটের কজ়ওয়ে তৈরি শুরু হয়। অভিযোগ, সে কাজ পাঁচ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। এই কজ়ওয়েটি সম্পূর্ণ হলে সমস্যার কিছুটা সমাধান হতে পারে বলে মনে করছেন চর্তুভুজপুরের সুধাময় মণ্ডল, জয়চন্দ্রপুর সত্যরাম মণ্ডলেরা। তাঁরা জানান, জলের সঙ্গে যুদ্ধ করেই টিকে আছি। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নিয়ে যেতে সমস্যা হয়। কজ়ওয়েটি তৈরি হলে কিছুটা সুরাহা হতে পারে।
লাভপুরের বিডিও শিশুতোষ প্রামাণিক জানান, ‘‘রাস্তার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। কজ়ওয়ের কাজটি বর্ষা ও অতিবৃষ্টির কারণে আপাতত বন্ধ রয়েছে। বর্ষার পরেই কাজটি শুরু হবে। কজ়ওয়েটি সম্পূর্ণ হয়ে গেলে ওই এলাকার সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন।"