গোপন জবানবন্দি নেওয়াই গেল না জোকার ‘ধর্ষিতার’! মানসিক ভাবে হয়তো বিধ্বস্ত: কোর্টে সরকারি আইনজীবী
আনন্দবাজার | ১৯ জুলাই ২০২৫
আদালতে এখনও গোপন জবানবন্দি নেওয়া যায়নি আইআইএম কলকাতা (আইআইএম জোকা বলে যা সমধিক পরিচিত)-র সেই ‘নির্যাতিতা’র। শনিবার আদালতে এ কথা জানান বিচারক। এই নিয়ে সওয়াল করেন অভিযুক্তের আইনজীবী। তিনি জানান, তারিখ নির্ধারণ করা হলেও ‘নির্যাতিতা’ আদালতে আসেননি। তাঁর মেডিকো-লিগাল পরীক্ষাও হয়নি। যেখানে অভিযুক্তের মেডিকো লিগ্যাল পরীক্ষা করানো হয়েছে বলে জানান তিনি। সরকারি আইনজীবী জানান, তরুণীর প্রাথমিক মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হয়েছে, যা তাঁর দাবিকেই সমর্থন করে। মেডিকো লিগ্যাল করানোর দায়িত্ব তদন্তকারী অফিসারের (আইও)। শনিবার আদালতে অভিযুক্তের জামিনের বিরোধিতা করে তাঁকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর জন্য আবেদন করেছেন সরকারি কৌঁসুলি।
আইআইএম জোকায় এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। সেই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন ওই কলেজের এক ছাত্র। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ছাত্রকে কাউন্সেলিং করতে গিয়েছিলেন ‘নির্যাতিতা’। শনিবার আদালতে অভিযুক্তের আইনজীবী সুব্রত সর্দার সওয়াল করে জানান, সমাজমাধ্যমে পরিচয়ের পরে ‘নির্যাতিতা’ কাউন্সেলিং করাতে যান। তাঁর দাবি, আইআইএম জোকায় যে কেউ প্রবেশ করতে পারেন না। তার জন্য নিয়ম মানতে হয়। পরিচয় যাচাই করা হয়। সিসিটিভি ফুটেজ থেকে জানা গিয়েছে, ঘটনার দিনে রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে আইআইএমের হস্টেল থেকে বার হয়েছিলেন নির্যাতিতা। থানায় এফআইআরও হয়েছে ওই সময়েই। এই নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলেন অভিযুক্তের আইনজীবী। তিনি জানান, নির্যাতিতা হস্টেল থেকে বেরিয়ে ৪.৫ কিলোমিটার দূরে হরিদেবপুর থানায় একই সময়ে পৌঁছে গেলেন কী ভাবে?
বিচারক জানান, এখনও ‘নির্যাতিতা’-র গোপন জবানবন্দি নেওয়া যায়নি। এই নিয়ে সওয়াল করেন অভিযুক্তের আইনজীবী। তিনি জানান, বলা হয়েছিল ১৩ জুলাই গোপন জবানবন্দি নেওয়া হবে। নির্যাতিতা কোর্টে আসেননি। এর পরে আবার তারিখ দেওয়া হলেও তিনি আসেননি। তাঁর মেডিকো লিগ্যাল পরীক্ষাও করানো হয়নি। সরকারি আইনজীবী সৌরীন ঘোষাল জানান, নির্যাতিতার মানসিক অবস্থা এখন কী রয়েছে, তা বোঝা যাচ্ছে না। তিনি মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছেন হয়তো। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হতে চাইছেন না। তাঁর মেডিকো লিগ্যাল পরীক্ষা করানোর দায়িত্ব আইওর। ‘নির্যাতিতা’-র প্রাথমিক মেডিক্যাল পরীক্ষা করানো হয়েছে। তার রিপোর্ট তাঁর দাবিকেই সমর্থন করে। সিসিটিভি ফুটেজ, ব্যবহার করা কন্ডোম, রেজিস্টার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
অভিযুক্তের ডিএনএ সংগ্রহ করা হয়েছে। আদালতে পুলিশ দাবি করেছে, ওই ছাত্র নিজের মোবাইলের পাসওয়ার্ড জানাচ্ছেন না। অভিযুক্তের আইনজীবী এই দাবি মানেননি। তাঁর দাবি, ওই ছাত্রের মেডিকো লিগাল পরীক্ষা হয়েছে। তিনি কর্নাটকের মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে পড়াশোনা করতে এসেছেন। কোনও মতেই প্রভাবশালী নন। তাই তাঁকে জামিন দেওয়া হোক। যদিও জামিনের বিরোধিতা করেছের সরকারি আইনজীবী। তিনি জানিয়েছেন, এখন বিচারবিভাগীয় হেফাজতে চাওয়া হচ্ছে অভিযুক্তে। পরে মনে করা হলে আবার পুলিশ হেফাজত চাওয়া হবে।