কিশোরীকে ধর্ষণ বান্ধবীর বাবার! অভিযুক্তের ২৫ বছরের সাজা
বর্তমান | ২০ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: কিশোরীকে ধর্ষণের দায়ে এক ব্যক্তিকে ২৫ বছরের জেলের সাজা শোনাল আদালত। দোষী, ওই নির্যাতিতার বান্ধবীর বাবা। আঝ, শনিবার এই সাজা ঘোষণা করেন জলপাইগুড়ির বিশেষ পকসো আদালতের বিচারক রিণ্টু শূর। এই ঘটনায় ২০২৩ সালের ৮ এপ্রিল জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়। মামলার সরকার পক্ষের আইনজীবী দেবাশিস দত্ত বলেন, ১৪ বছরের ওই কিশোরী তার বাড়ির কাছে এক বান্ধবীর বাড়িতে সন্ধ্যাবেলায় টিভি দেখতে গিয়েছিল। টিভি দেখে সে যখন ফিরছিল, তখন ওই বান্ধবীর বাবা বাড়ির কাছেই অন্ধকারের মধ্যে দাঁড়িয়ে ছিল। বছর পঞ্চাশের ওই ব্যক্তি কিশোরীর মুখ চেপে ধরে। তারপর বাড়ির পিছনে নিয়ে যায়। অভিযোগ ছিল সেখানেই তাকে ধর্ষণ করে। ঘটনার কথা যাতে সে কাউকে না বলে, সেই জন্য কিশোরীকে ভয় দেখাত ওই ব্যক্তি। কিন্তু পরবর্তীতে নির্যাতিতা নাবালিকা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ায় বিষয়টি তার বাড়ির লোকজন জেনে যায়। তখন সে তার বাবা-মাকে গোটা ঘটনাটি খুলে বলে। সরকারপক্ষের আইনজীবী বলেন, নাবালিকার মা তার মেয়ের মধ্যে শারীরিক পরিবর্তন লক্ষ্য করায় বিষয়টি জানতে চান। কিন্তু প্রথমে ওই কিশোরী কিছু বলতে চায়নি। এরপর মেয়েটির পরিবার প্রেগন্যান্সি কিট এনে পরীক্ষা করেন। তাতে দেখা যায়, ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা। তখন মেয়েকে সত্যিটা বলতে চাপ দেয় মা। তখনই ওই কিশোরী জানায়, ২০২৩ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ সে যখন তার বান্ধবীর বাড়ি থেকে টিভি দেখে ফিরছিল, তখনই ওই ব্যক্তি ধর্ষণ করে। শুনানিতে সরকারপক্ষের আইনজীবী বলেন, আইন মেনে মেয়েটির গর্ভপাত করা হয় এবং সেটি সংরক্ষণ করা হয়েছে। পরে সেটি ডিএনএ পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। রাজগঞ্জ থানায় পকসো আইনের ৬ নং ধারায় মামলা রুজু হতেই পুলিস অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পুলিস। মামলায় ১২ জন সাক্ষ্য দেন। আদালতে জমা পড়া সমস্ত তথ্যপ্রমাণ ও সাক্ষ্যের ভিত্তিতে অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন বিচারক। আজ, শনিবার বিচারক দোষীকে ২৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, সঙ্গে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা ধার্য করেছেন। সঙ্গে নির্যাতিতা নাবালিকাকে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ডিস্ট্রিক্ট লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটিকে। সরকারি আইনজীবী বলেন, এদিন রায় ঘোষণা করতে গিয়ে বিচারক বলেন, যে ব্যক্তি ওই ঘটনা ঘটিয়েছে, সে নাবালিকার পরিচিত। তারপরও সে এমন জঘন্য কাণ্ড ঘটিয়েছে। এর জেরে মেয়েটি মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির মেয়ে এবং নির্যাতিতা নাবালিকা একই ক্লাসের পড়ুয়া ছিল বলে জানা গিয়েছে।