জমি-বাড়ি রেজিস্ট্রেশনে চালু হচ্ছে ফেস রেকগনিশন, দেশের মধ্যে প্রথম, শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতি রাজ্যে
বর্তমান | ২০ জুলাই ২০২৫
প্রীতেশ বসু, কলকাতা: জমি-বাড়ি রেজিস্ট্রেশনের প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছতা ও দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করতে উদ্যোগী রাজ্য সরকার। জমি-বাড়ি রেজিস্ট্রেশনের সময় চালু হতে চলেছে ফেস রেকগনিশনের মাধ্যমে ভেরিফিকেশন বা যাচাই পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির ক্রেতা, বিক্রেতা ও সাক্ষীর মুখমণ্ডল ‘স্ক্যান’ করা হবে। রেজিস্ট্রি অফিসে আসা বিক্রেতাই সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির প্রকৃত মালিক কি না, তা এই প্রক্রিয়ায় সহজেই যাচাই করা যাবে। পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে একটি অ্যাপ তৈরি করছে রাজ্য সরকারের অর্থদপ্তরের আওতাধীন ‘ডিরেক্টরেট অব রেজিস্ট্রেশন অ্যান্ড স্ট্যাম্প ডিউটি’। অ্যাপ তৈরির শেষ পর্যায়ের (টেকনোলজি অডিট) কাজ চলছে এখন। শীঘ্রই নয়া ব্যবস্থা চালু হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গেই প্রথম জমি-বাড়ি রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে ফেস রেকগনিশনের মাধ্যমে যাচাই প্রক্রিয়া চালু হবে।
বর্তমান নিয়মে রেজিস্ট্রেশনের সময় ক্রেতা, বিক্রেতা এবং সাক্ষীকে দশ আঙুলের বায়োমেট্রিক দিতে হয়। সেই সঙ্গে তাঁদের ছবি তুলে রাখা হয়। দিতে হয় ই-সিগনেচার। রেজিস্ট্রি অফিসে রেজিস্ট্রারের সামনেই এই ধাপগুলি সারতে হয়। একইভাবে মুখমণ্ডল ‘স্ক্যান’ করে যাচাইয়ের প্রক্রিয়াও সারতে হবে রেজিস্ট্রি অফিসেই। ফলে সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির প্রকৃত মালিকই সেটি বিক্রি করছেন কি না, তা নিশ্চিতভাবে এবং সহজে যাচাই করা সম্ভব হবে। প্রসঙ্গত, ফেস রেকগনিশন হয়ে গেলে ছবি তোলার আর তেমন প্রয়োজন থাকবে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পরবর্তীকালে আইনে বদল আসার পর ক্রেতা-বিক্রেতার পরিচয় যাচাইয়ের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতিই প্রধান অস্ত্র হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন তাঁরা। অনেক সময় আঙুলের বায়োমেট্রিক নেওয়ার ক্ষেত্রে একাধিকবার চেষ্টা করতে হয়। ফেস ভেরিফিকেশন চালু হলে সেই ঝামেলাও মিটবে বলে আশাবাদী তাঁরা।
কীভাবে হবে এই ফেস রেকগনিশন? সূত্রের খবর, সাধারণ মানুষ যাতে সহজেই এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারে, তার জন্য নির্দিষ্ট অ্যাপটি তাঁরা নিজেদের মোবাইলে ডাউনলোড করে নেবেন। অ্যাপের সাহায্যেই মুখমণ্ডল ‘স্ক্যান’ করা যাবে। তবে রেজিস্ট্রি অফিসেই অ্যাপটি ব্যবহার করতে হবে। কারণ, বর্তমানে আইন অনুযায়ী অফিসেই সম্পূর্ণ যাচাই প্রক্রিয়া এবং রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করাটাই নিয়ম। নির্দিষ্ট অ্যাপটির ব্যবহার রেজিস্ট্রি অফিসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে ‘জিও ফেন্সিং’ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। এই প্রযুক্তির সাহায্যে একটি অ্যাপের ব্যবহার নির্দিষ্ট এলাকায় সীমাবদ্ধ রাখা যায়। প্রসঙ্গত, একের জমি অন্য কেউ বিক্রি করে দিয়েছে, এরকম ঘটনা খুব কম হলেও বিরল নয়। সেক্ষেত্রে জমির প্রকৃত মালিক টেরই পান না যে তাঁর সম্পত্তি বেহাত হয়ে গিয়েছে। নয়া ব্যবস্থাপনা চালু হলে এমন জালিয়াতির কোনও জায়গাই থাকবে না বলে দাবি প্রশাসনিক মহলের।