• শ্বশুর, শাশুড়ি ও জামাই মিলে চুরির সিন্ডিকেট, পর্দাফাঁস দত্তপুকুর থানার
    বর্তমান | ২০ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: শ্বশুর দরজার তালা ভাঙে। জামাই ভাঙে সিন্দুক। আর শাশুড়ি চোরাই মাল ব্যাগে পুরে গুটিগুটি পায়ে এলাকা ছাড়ে। শ্বশুর-শাশুড়ি-জামাইয়ের এ হেন কীর্তি সচরাচর শোনা যায় না। এমনকি গল্প-উপন্যাসেও রয়েছে কি না মনে পড়ে না। শ্বশুর সফিকুল মণ্ডল, শাশুড়ি রুমা বিবি ও জামাই সরিকুল গাজির কীর্তিকলাপ যে কোনও গল্পকে হার মানায়। এই সিন্ডিকেটে ঢোকেননি জামাইয়ের স্ত্রী বা শ্বশুর-শাশুড়ির মেয়ে। তিনি এসব থেকে গা বাঁচিয়ে চলেন।

    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, জামাইকে সঙ্গে নিয়ে চুরির একটি র‍্যাকেট তৈরি করে ফেলেছিল শ্বশুর-শাশুড়ি। তিনজনে কাঁধে বস্তা ঝুলিয়ে বোতল কুড়তো। সেটি আসলে গৌণ। আসলে তারা বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে দেখত কোথায় সহজে চুরি করা যায়। দিনের বেলা দেখেটেখে গিয়ে রাতে খাওয়াদাওয়া করে বেরত বাড়ি থেকে। চুরি করত। আর পালাত এলাকা ছেড়ে। আট জুলাই দত্তপুকুরের নিবাদুই ঘোষপাড়ায় একটি শিব-কালীমন্দিরে দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা ঘটে। সোনা, রুপোর গয়না, পিতলের ঘণ্টা, বাসনপত্র সব খোয়া যায়। সেই চুরির তদন্তে নেমে শ্বশুর, শাশুড়ি, জামাইকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। ধৃতদের বাড়ি বারাসতের পাল পাকুড়িয়ায়। কিন্তু চুরি করবে বলে বিভিন্ন জায়গায় ঘর ভাড়া নিয়ে থাকত তিনজন। যেমন মন্দিরে চুরির আগে আমডাঙার আওয়ালসিদ্ধি এলাকায় ভাড়া নিয়েছিল ঘর।

    তিনজন বাহন হিসেবে ব্যবহার করত ভ্যান। সঙ্গে থাকত একগাদা পুরনো বোতল। ওদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে মন্দিরে চুরির সামগ্রী। শনিবার আদালতে যাওয়ার পথে জামাই সরিকুল জানায়, বোতল কুড়নোর সময় বুঝে নিত কোন এলাকায় চুরি করলে ধরা পড়বে না। তারপর আরও দু-তিনদিন ওই এলাকা ঘুরে ঘুরে দেখত। তারপর প্ল্যান করে নামত রাতে। অন্ধকারে চুরি সেরে দিত চম্পট। বাবা-মা-স্বামীকে পুলিস তুলে নিয়েছে, এই খবর পাওয়ার পর সরিকুলের স্ত্রী পলাতক বলে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)