আইআইএম কলকাতায় তরুণীকে ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্তের শর্তাধীন জামিন মঞ্জুর করলেন আলিপুরের অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট। তবে আইআইএমে এমবিএ দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্র পরমানন্দ জৈন ওরফে পরমানন্দ মহাবীর টোপ্পানাভারের ৫০ হাজার টাকা ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে বলে আদালত সূত্রে খবর। সেই সঙ্গে তাঁর পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে এবং কর্নাটকের বাসিন্দা ওই যুবক পশ্চিমবঙ্গ ছাড়তে পারবেন না বলেও জানানো হয়েছে। তদন্তকারী অফিসারের সঙ্গেও তিনি যখন বলবেন তখনই অভিযুক্তকে দেখা করতে হবে বলে জানিয়েছে আদালত।
তবে অভিযুক্ত ছাত্রকে আইআইএমে ফিরতে না দিলে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হতে পারে বলেও জানান তাঁর আইনজীবী।
শনিবার অভিযুক্তকে আদালতে পেশ করা হয়। সরকারি আইনজীবী সৌরীন ঘোষাল জেল হেফাজতের আবেদন জানিয়ে বলেন, ‘‘অভিযুক্ত তদন্তে সহযোগিতা করছেন না। বর্তমান পরিস্থিতিতে অভিযুক্তের জেল হেফাজতের আবেদন করা হচ্ছে। অভিযুক্তের মোবাইল ফোনের পাসওয়ার্ড এখনও পাওয়া যায় নি। ওই মোবাইল ফোন যাচাই করা প্রয়োজন।’’
অভিযুক্তের আইনজীবী সুব্রত সর্দার বলেন, ‘‘আদালতের তরফে পর পর তিন দিন গোপন জবানবন্দি গ্রহণ করার তারিখ ধার্য করা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দি গ্রহণের ব্যবস্থা করতে পারে নি।’’
তিনি প্রশ্ন তোলেন, তদন্তকারীরা নির্যাতিতা অসুস্থ বললেও তিনি কোনও হাসপাতালে ভর্তি কি না জানিয়ে তাঁর শারীরিক অবস্থার কোনও রিপোর্ট কেন আদালতে পেশ করা হচ্ছে না? সুব্রত আরও বলেন, ‘‘নির্যাতিতার মেডিকো-লিগ্যাল পরীক্ষাও করা হয় নি। যদি এই মুহূর্তে নির্যাতিতা কোনও ভাবে জখম হন, তা হলে নানা আইনি জটিলতা তৈরি হবে। তদন্তে তেমন কোনও অগ্রগতি হয় নি। শুধু এফআইআরের ভিত্তিতে নানা তথ্য পেশ করা হচ্ছে।’’
সরকারি আইনজীবী বলেন, ‘‘সব ক্ষেত্রে গোপন জবানবন্দির প্রয়োজন পড়ে না। নির্যাতিতা প্রচারমাধ্যম নিয়ে ভীত। তিনি অসুস্থ। খুব শীঘ্রই গোপন জবানবন্দি নেওয়া যাবে। এফআইআর এবং নির্যাতিতার অভিযোগের বয়ানের ভিত্তিতেও তদন্ত করা যায়। ঘটনাস্থল থেকে সমস্ত নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ওই সব নমুনা ধর্ষণের ইঙ্গিত দিচ্ছে। নির্যাতিতার প্রাথমিক মেডিক্যাল পরীক্ষা হয়েছে। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসককে নির্যাতিতা যে বয়ান দিয়েছেন, তা ধর্ষণ-কাণ্ডকে সমর্থন করে।’’
অভিযুক্ত অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র এবং তাঁর ভবিষ্যতের বিষয়টি নজর রেখে শর্তসাপেক্ষে জামিন মঞ্জুর করার দাবি জানান অভিযুক্তের আইনজীবী। শুনানির মাঝে বিচারক প্রশ্ন করেন, ‘‘এখনও গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয় নি?’’ এ দিন রাত ন’টা নাগাদ বিচারক শেষ পর্যন্ত অভিযুক্তের জামিনের নির্দেশ জারি করেন বলে আদালত সূত্রে খবর।