• ২১ জুলাইয়ের আবেগে শান, ঘটনার দিনের AI ভিডিয়ো বানিয়ে প্রচার তৃণমূলের
    এই সময় | ২০ জুলাই ২০২৫
  • ৩২ বছর আগের কথা। কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাওয়ের সরকার। রাজীব গান্ধীর হত্যাকাণ্ডের পরে দেশ জুড়ে ফের ভিত শক্ত করার কাজ করছে কংগ্রেস। ১৯৯১ সালে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয় বামফ্রন্ট সরকার। বিরোধীরা আওয়াজ তোলে, ভোটে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে। অভিযোগ ছিল, কোনও সচিত্র পরিচয় পত্র না থাকায় ছাপ্পা, বুথ দখলের বন্যা বয়ে গিয়েছে প্রতিটি কেন্দ্রে।

    ‘নো এপিক, নো ভোট’ স্লোগান তুলে আন্দোলনে নামেন তৎকালীন যুব কংগ্রেসের সভাপতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২১ জুলাই মহাকরণ অভিযানের ডাক দেওয়া হয়। সেই অভিযানেই ১৩ জন কংগ্রেস কর্মীকে গুলি করে হত্যা করার অভিযোগ ওঠে সরকারের বিরুদ্ধে। কিছু স্থির চিত্র ছাড়া যে ঘটনার কোনও ভিডিয়ো রেকর্ড বুকে নেই। প্রযুক্তির হাত ধরে এ বার সে দিনের ঘটনার AI ভিডিয়ো তৈরি করল তৃণমূল কংগ্রেস।

    রাত পোহালেই শাসকদলের সর্ববৃহৎ সমাবেশের আয়োজন কলকাতায়। ২১ জুলাইয়ের শহিদ তর্পণের মাঝেই দলের কর্মী, সমর্থকদের রাজনৈতিক বার্তা দেবেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সমাবেশ থেকেই ভোটের ময়দানে লড়াইয়ের পুঁজি সংগ্রহ করেন তৃণমূল কর্মীরা। তৃণমূলের দাবি, এটা শুধু শহিদ তর্পণের আয়োজন নয়, আবেগ ও শ্রদ্ধার মোড়কে শপথ নেওয়ার দিন। সেই ‘ঐতিহাসিক দিন’-এর আবেগে শান দিতেই এ বার ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা’র সাহায্য নিল তৃণমূল কংগ্রেস।

    তৃণমূলের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে AI নির্ভর একটি তথ্যচিত্র তুলে ধরা হয়েছে। যেখানে ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাইয়ের ঘটনার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। লেখা হয়েছে, ‘অগ্নিকন্যার অগ্নিপথ, বাংলা রক্ষাই তাঁর শপথ। আগামিকাল জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্ত করতে এবং শহিদ তর্পণে সামিল হতে, সদলবলে আসুন ধর্মতলায়।’ তৃণমূলের রীতি অনুযায়ী, ২১ জুলাইয়ের একমাস আগে থেকেই জেলায় জেলায়, ব্লকে ব্লকে শহিদ সমাবেশের প্রস্তুতি সভার আয়োজন করা হয়। গত কয়েক বছরে সমান তালে প্রচার চলে সমাজমাধ্যমেও। প্রচার এ বারেও তার অন্যথা হয়নি। তবে, প্রযুক্তি নির্ভর এই ভিডিয়ো প্রচারে নতুনত্ব যোগ করেছে বলেই ধারণা রাজনৈতিক মহলের একাংশের।

    যদিও সোমবার ২১ জুলাইয়ের এই সভাকে চরম কটাক্ষ করেছে রাজ্যের বিরোধী দলগুলি। একই দিনে ‘উত্তরকন্যা অভিযান’-এর ডাক দিয়েছে বিজেপি। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কথায়, ‘২১ জুলাই চোরেরা ডিম্ভাত খেতে কলকাতায় আসবে। আমরা শিলিগুড়িতে গিয়ে উত্তরকন্যা নড়িয়ে দিয়ে আসব।’

    ২১ জুলাইয়ের আবেগে মিশে রয়েছে প্রদেশ কংগ্রেসও। সেই আবেগকে বর্তমান শাসকদল ‘হাইজ্যাক’ করেছে বলে অভিযোগ করেন বর্তমান প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারের কথায়, ‘২১ জুলাই শোকের দিন, মোচ্ছবের দিন নয়। সে দিন আন্দোলনকারীদের হাতে কংগ্রেসের পতাকা ছিল, মনে ছিল কংগ্রেসের আদর্শ। তৃণমূলের তখন জন্মই হয়নি।’

  • Link to this news (এই সময়)