তৃতীয় বার ক্ষমতায় ফিরে কিছু ‘ধাক্কা’ খেতে হয়েছে তৃণমূলকে, সোম-সমাবেশ মমতার কাছে চ্যালেঞ্জ নেওয়ার, বার্তা দেওয়ার
আনন্দবাজার | ২০ জুলাই ২০২৫
২০২১ সালে তৃতীয় বার ক্ষমতায় ফেরার পরে গত চার বছরে উপর্যুপরি ‘ধাক্কা’ সামলাতে হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তথা শাসক তৃণমূলকে। আগামী বছর বিধানসভা ভোটের আগে সোমবার তৃণমূলের বার্ষিক ২১ জুলাইয়ের সভা। অর্থাৎ, ২০২৫ সালের ২১ জুলাই ধর্মতলার মঞ্চ থেকে ২০২৬ সালের ভোটের অভিমুখ ঠিক করে দেওয়ার অবকাশ পাচ্ছেন তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী মমতা। নিঃসন্দেহে তিনি সেই পথেই হাঁটবেন। ওই মঞ্চ থেকে মমতা কী বার্তা দেবেন, সে দিকে যেমন তাকিয়ে গোটা তৃণমূল, তেমনই বিরোধীদেরও নজর থাকবে শাসকদলের পরিকল্পনা বা স্লোগানের দিকে।
তবে সোমবার মমতার সুর যে চড়াতেই বাঁধা থাকবে তার ইঙ্গিত মিলল রবিবার মঞ্চ পরিদর্শনের সময়। ধর্মতলায় ‘রাস্তা আটকে’ সভা নিয়ে কড়া পর্যবেক্ষণ রেখেছে কলকাতা হাই কোর্ট। তা নিয়ে বিতর্কের আবহে মমতার মন্তব্য, ‘‘পুলিশের অনুমতি ছাড়া নবান্ন অভিযান হলে আপত্তি কোথায় থাকে?’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের আন্দোলন দমানোর ক্ষমতা ছিল না সিপিএমের। গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করতে গিয়ে ওরা এমন ভাবে গুলি চালিয়েছিল যে, ১৩ জন ঘটনাস্থলেই মারা যান। দেড়শো জন পুলিশের গুলিতে আহত হন। প্রায় ৩৩ বছর ধরে এই প্রোগ্রাম এখানে হয়, তার কারণ এখানে অনেকগুলো প্রাণ লুটিয়ে পড়েছিল। তাই বছরে একটা শহিদ স্মরণে প্রোগ্রাম আমরা এখানেই করি।’’
১৯৯৩ সালের সেই ঘটনার ১৮ বছর পর সিপিএম-কে সরিয়ে বাংলার ক্ষমতায় আসেন মমতা। তার পর ১৪ বছর কেটে গিয়েছে। অর্থাৎ ১৫ বছরের প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা সঙ্গে নিয়েই তৃণমূলকে পরের বছর বিধানসভা ভোটে যেতে হবে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় টানা একটি দল ক্ষমতায় থাকলে স্বাভাবিক নিয়মেই প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা তৈরি হয়। তৃণমূলও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে জেতার পরে তৃণমূল তথা মমতাকে উপর্যুপরি ধাক্কা সামলাতে হয়েছে। যা আগের দুই মেয়াদে ততটা হয়নি।
নেতা-মন্ত্রীদের গ্রেফতারি
২০২২ সালের ২১ জুলাইয়ের সভার পর দিনই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তৎকালীন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে হানা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। রাতভর জেরার পরে ২৩ জুলাই সকালে ইডি গ্রেফতার করেছিল পার্থকে। তিন বছর হয়ে গেল তিনি জেলে। এর মধ্যে রাজ্যের আরও এক মন্ত্রী জেলে গিয়েছিলেন। তিনি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (বালু)। যদিও রেশন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়া বালু এখন জামিনে মুক্ত। জেলযাত্রার তালিকায় নাম রয়েছে তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য, জীবনকৃষ্ণ সাহারও। গরু পাচার মামলায় জেলে গিয়েছিলেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তাঁরাও আপাতত জামিনে মুক্ত। তবে পার্থ-কাণ্ডেই সবচেয়ে বেশি বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছিল তৃণমূলকে। পার্থের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছিল তাঁর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের নাম এবং দু’টি ফ্ল্যাটের খাটের নীচে নোটের পাহাড়। পার্থকে সাসপেন্ড করেছিল তৃণমূল। অনুব্রত, বালুদের ক্ষেত্রে তেমন কোনও ‘ছবি’ না-থাকায় সেই পথে শাসকদল হাঁটেনি।
সামলে লোকসভায় জয়
লোকসভা ভোটের প্রচারে পার্থ-অনুব্রতদের গ্রেফতারি তথা শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে সরব ছিল বিরোধীরা। কিন্তু তাতেও নির্বাচনে হারানো যায়নি বাংলার শাসকদলকে। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে তৃণমূল হাসতে হাসতে জিতেছে। বস্তুত, ২২ থেকে বেড়ে তৃণমূলের আসন পৌঁছেছে ২৯-এ। অন্য দিকে প্রধান বিরোধীদল বিজেপি ১৮ থেকে নেমে গিয়েছে ১২-তে। পার্থ সেই অর্থে ‘ভোট করার’ নেতা না-হলেও অনুব্রত ছিলেন বীরভূমে তৃণমূলের সংগঠনে ‘শেষ কথা’। সেই জেলবন্দি অনুব্রতের জেলায় তৃণমূলের কী হবে, তা নিয়ে কৌতূহল ছিল। দেখা গিয়েছে, অনুব্রত জেলে থাকলেও বীরভূমের দু’টি লোকসভা আসনেই আগের বারের থেকে ভোট এবং ব্যবধান বাড়িয়ে জিতেছে তৃণমূল।
তবে অনুব্রতকে ঘিরে সম্প্রতি নতুন বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে শাসকদলকে। তার সঙ্গে দুর্নীতির কোনও সম্পর্ক নেই। রয়েছে একটি অডিয়ো ক্লিপ ভাইরাল হওয়ার ঘটনা। বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারকে অশ্রাব্য গালাগাল করেন অনুব্রত। দাবানলের মতো তা ছড়িয়ে পড়তে প্রাথমিক ভাবে কেষ্ট অস্বীকার করলেও পরে দলের চাপে তাঁকে ক্ষমা চাইতে হয়েছে। যদিও দু’বার নোটিস দিয়ে পাঠানোর পর অনুব্রত হাজিরা দেন পুলিশের কাছে। কেন অনুব্রতকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না, তা নিয়ে শাসকদলের উপর চাপ তৈরি করে বিরোধীরা। তবে সেই বিতর্ক স্তিমিত হয়েছে।
আরজি করকাণ্ড
কিন্তু লোকসভা ভোটে বিপুল জয়ের পরেও গত বছর অগস্ট মাসে আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার পরে টানা নাগরিক আন্দোলনে ‘চাপ’ তৈরি হয়েছিল সরকার তথা শাসকদলের উপর। আরজি কর পর্বে যে ‘স্বতঃস্ফূর্ত’ নাগরিক আন্দোলন দেখেছিল বাংলা, তা নজিরবিহীন। মমতার সমর্থনের ভিত্তির অন্যতম শক্তি মহিলারা। আরজি কর-কাণ্ডের পরে সরকার-বিরোধিতায় সেই মহিলাদেরই রাস্তায় নেমে আসার ফলে সার্বিক ভাবে শাসকদলও কিছুটা ‘কোণঠাসা’ হয়ে পড়েছিল। প্রশাসনের উপর তৈরি হওয়া ‘চাপ’ গড়িয়ে যায় তৃণমূলের সংগঠনেও। মমতা নিজে এবং দু’তিন জন ছাড়া সমস্ত নেতানেত্রীই অন্তরালে চলে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। তবে একইসঙ্গে এ-ও দেখা গিয়েছিল যে, আরজি কর-পর্বে যে নাগরিক আন্দোলন তৈরি হয়েছিল, তা সীমাবদ্ধ ছিল মূলত শহর এবং মফস্সল শহরগুলির মধ্যেই। গ্রামাঞ্চলে তার বিশেষ প্রভাব পড়েনি। লোকসভা ভোটে সেই গ্রামই উজাড় করে ভোট দিয়েছিল তৃণমূলকে। লোকসভার ফলাফলে দেখা গিয়েছিল, শহর-মফস্সলের বহুলাংশে বিজেপি ভাল ফল করলেও গ্রাম দখলে রেখেছিল তৃণমূলই। প্রসঙ্গত, বিধানসভা কেন্দ্রিক হিসাব কষলে দেখা যাবে ৭০ শতাংশ কেন্দ্র গ্রামীণ এলাকায়। যা তৃণমূলের দখলে রয়েছে। ফলে আরজি কর কাণ্ডের ‘প্রভাব’ গ্রামে না-পড়ার বিষয়টি একেবারে অপ্রত্যাশিতও ছিল না। যএ ভাবে শুরু হয়েছিল, সে বাবে অবশ্য জিইয়ে থাকেনি আন্দোলন। প্রশাসক মমতা এক পা পিছিয়ে দু’পা এগোনর নীতি নিয়েছিলেন। যা তাঁর পক্ষে ফলদায়ী হয়েছিল। নাগরিক আন্দোলন পুজো পর্যন্ত চললেও শেষে তা স্তিমিত হয়ে যায়। হাঁফ ছেড়ে বাঁচে শাসকদল এবং রাজ্য প্রশাসন।
আরজি করের পরে উপনির্বাচনে জয়
আরজি কর পর্বের পরে তিনটি বিধানসভায় উপনির্বাচন হয়েছিল রাজ্যে। নাগরিক আন্দোলনের ছাপ ভোটে প্রতিফলিত হয় কি না, সে দিকে নজর ছিল রাজনৈতিক মহলের। কিন্তু দেখা যায়, নৈহাটি এবং বাঁকুড়ার তালড্যাংড়া আসন ধরে রাখার পাশাপাশি আলিপুরদুয়ারের মাদারিহাট আসনটি বিজেপি-র থেকে ছিনিয়ে নেয় তৃণমূল। কলকাতা লাগোয়া নৈহাটির ভোটেও নাগরিক আন্দোলনের কোনও ছাপ পড়েনি।
বাঙালি অস্মিতায় শান
২০২১ সালের নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে বাঙালি জাত্যাভিমানকে ‘অস্ত্র’ করেছিল তৃণমূল। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটেও তা জারি ছিল। গত এক-দেড় মাস ধরে দেশের বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলাভাষীদের উপর ‘আক্রমণের’ প্রতিবাদে তৃণমূলের প্রচার, কর্মসূচি, মমতা এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাস্তায় নেমে মিছিল স্পষ্ট করে দিয়েছে, পরের বছরের বিধানসভা ভোটেও ‘বাংলা ও বাঙালি লাইন’ ধরে রাখবে তৃণমূল। তৃণমূলের একাংশ মনে করছেন, সোমবার সেই অভিমুখেও বার্তা দিতে পারেন মমতা।
মেরুকরণের আবহ
বিজেপি তাদের নিজস্ব পাঠ্যক্রম অনুযায়ী গত লোকসভা ভোটেও মেরুকরণকে তীব্র করার চেষ্টা করেছিল। বাংলাদেশের পরিস্থিতি, মুর্শিদাবাদ-কাণ্ডের ফলে তৈরি আবহকে কাজে লাগিয়ে বিধানসভা ভোটের আগে তাকে আরও চড়া দাগে তুলতে মরিয়া পদ্মশিবির। পাল্টা তৃণমূল বাঙালিয়ানার সঙ্গে প্রচারে মিশিয়ে দিচ্ছে দিঘায় জগন্নাথ মন্দির নির্মাণ। আবার বিজেপি-ও ‘বাংলা বিরোধী’ তকমা মুছতে কৌশল নিচ্ছে। দুর্গাপুরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রী মোদীর মুখে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি শোনা যায়নি। বরং মোদী বক্তৃতার শুরুতে বলেন, ‘‘জয় মা কালী, জয় মা দুর্গা।’’ যাকে তৃণমূল ‘মোদীর পরিবর্তন’ বলে অভিহিত করেছে। যা থেকে স্পষ্ট যে, ‘বাঙালিয়ানা’র সত্ত্ব নিজেদের কাছেই রাখতে চায় জোড়াফুল শিবির।
বঞ্চনার আখ্যান
ইতিমধ্যেই তৃণমূলের প্রচারে ‘কেন্দ্রের বঞ্চনা’র বিষয়টি জোরাল ভাবে রয়েছে। দুর্গাপুরে প্রধানমন্ত্রীর সভার পরেও বিভিন্ন প্রকল্পে রাজ্যের প্রাপ্য না-দেওয়ার প্রসঙ্গ তুলে সরব হয়েছে শাসকদল। বকেয়া না-পেলে আগামী বছর ভোট পর্যন্ত মমতা যে সেই বিষয়কে প্রচারে রাখবেন, তা বলাই বাহুল্য। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের প্রচারেও ‘কেন্দ্রের বঞ্চনা’র কথা তুলে ধরেছিল তৃণমূল। যার প্রেক্ষাপট লেখা শুরু হয়েছিল ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে অভিষেকের দিল্লি অভিযান এবং ফিরে এসে রাজভবনের সামনের ধর্না কর্মসূচি থেকে।
বাংলার টাকায় ‘বাংলার বাড়ি’
২০২১ সালের পর থেকে আবাস যোজনায় কেন্দ্রীয় বরাদ্দ পাচ্ছে না পশ্চিমবঙ্গ। দিল্লির মুখাপেক্ষী হয়ে না-থেকে রাজ্য নিজেদের তহবিল থেকেই তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নবান্ন। ইতিমধ্যে ১২ লক্ষ পরিবারকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরে আরও ১৬ লক্ষ পরিবার পাবে বাড়ি তৈরির ৬০ হাজার টাকা (প্রথম কিস্তি)। অর্থাৎ বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যের টাকায় ২৮ লক্ষ পরিবারের মাথায় তৈরি হবে পাকা ছাদ। যাকে প্রচারের অভিমুখ করবে তৃণমূল। অর্থাৎ শুধু কেন্দ্রের বিরুদ্ধে দোষারোপ নয়, রাজ্য সরকার কী করছে, তা-ও প্রচারে রাখার পরিকল্পনা রয়েছে তৃণমূলের। মমতার বক্তৃতায় তারও প্রতিফলন থাকতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।
ভোটার তালিকার সমীক্ষা
ভোটার তালিকা সংশোধন ঘিরে নির্বাচন কমিশনের সমীক্ষা প্রক্রিয়াও উঠে আসতে পারে মমতার কথায়। চলতি বছরের শেষে বিহারে বিধানসভা ভোট। সেখানে ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রক্রিয়া চালু নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব বিরোধীরা। জুলাই মাসের গোড়া থেকে মমতাও এ নিয়ে সরব। ফলে ২১ জুলাইয়ের সভা থেকে ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রক্রিয়ায় সংগঠনকে কী ভাবে ব্যবহার করতে হবে, সেই সম্পর্কেও মমতা বার্তা দিতে পারেন বলে অনেকে মনে করছেন। কারণ, ইতিমধ্যেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, বিহারের পর বাংলাতেও বৈধ ভোটারদের বাদ দেওয়ার ‘ষড়যন্ত্র’ হতে পারে।
দলের মধ্যে বিতর্ক
২০২১ সালের পর থেকে বহু বার তৃণমূলের অভ্যন্তরের বিতর্ক প্রকাশ্যে এসে পড়েছে। কখনও তা সর্বোচ্চ নেতৃত্বের দূরত্ব, কখনও নবীন-প্রবীণে আড়াআড়ি বিভাজন, কখনও ‘স্পর্শকাতর’ ঘটনায় কোনও কোনও নেতার আলটপকা মন্তব্য আবার কখনও জেলায় জেলায় গোষ্ঠীকোন্দলে খুনোখুনির মতো ঘটনা। সেই প্রেক্ষিতেই বিধানসভা ভোটের আট মাস আগে ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে দলে ঐক্যের বার্তা এবং কড়া হুঁশিয়ারিও দিতে পারেন সর্বময় নেত্রী মমতা।
কসবা অস্বস্তি
আরজি করের পরে কসবার কলেজে ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় ফের অস্বস্তিতে পড়তে হয় তৃণমূলকে। কসবার ঘটনায় অভিযুক্তরাও সরাসরি তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত। যা বিড়ম্বনা বাড়ায় শাসকদলের। তবে এ-ও বাস্তব, কসবার ঘটনা জানাজানি হয়েছিল অভিযুক্তদের পুলিশ গ্রেফতার করার পরে। তৃণমূলের তরফে এই ভাষ্য তৈরি করা হয় যে, প্রশাসন সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ করেছে। যা বিজেপিশাসিত রাজ্যে দেখা যায় না।
জোড়া চ্যালেঞ্জের ২১ জুলাই
সোমবারের ২১ জুলাই তৃণমূলের বার্ষিক সভা জোড়া চ্যালেঞ্জের মুখে। এমনিতেই ২১ জুলাইয়ের বার্ষিক সভা তৃণমূলের সম্বৎসরের শক্তি প্রদর্শনের মঞ্চ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। পাশাপাশিই, দলীয় সংগঠনকে আরও এক বার ঝালিয়ে নেওয়ার কারণেও ওই সভার প্রয়োজনীয়তা থাকে। তবে বিধানসভা ভোটের আগে ২১ জুলাইয়ের সভার সাংগঠনিক তাৎপর্যের মতোই রাজনৈতিক তাৎপর্যও রয়েছে। শাসকদলের চ্যালেঞ্জ বিধানসভা ভোটের আগে ২১ জুলাইয়ের সভায় ‘বিপুলতম’ জমায়েত করা। যার জন্য গত এক মাস ধরে বুথ এবং ব্লক স্তরে ধারাবাহিক প্রচার করেছেন শাসকদলের নেতানেত্রীরা। আর তার পাশাপাশিই প্রশাসনের চ্যালেঞ্জ আদালতের নির্দেশ মেনে সপ্তাহের প্রথ কাজের দিনটিতে জনজীবন ‘স্বাভাবিক’ রাখা এবং ভিড় সামলানো।