একুশে জুলাই উপলক্ষে ধর্মতলা চত্বরে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা, থাকবে ৪ হাজার পুলিশ
প্রতিদিন | ২১ জুলাই ২০২৫
নিরুফা খাতুন: এবার একুশে জুলাই রেকর্ড ভিড় হবে ধরে নিয়ে প্রশাসনিক প্রস্তুতি তুঙ্গে। তৎপর কলকাতা পুলিশ ও পুরসভা। আদালতের নির্দেশ মেনেই একুশে জুলাইয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে পুলিশের তরফে।
একুশে জুলাই তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের কাছে একটা বড় আবেগ। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কর্মী-সমর্থকরা হাজির হন ধর্মতলায়। আগামিকাল, সোমবার কোন সময় কত মানুষ ঢুকবে তা ভাবাচ্ছে পুলিশকে। আজ পর্যন্ত শহিদ দিবসের সমাবেশ ঘিরে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা বা গণ্ডগোল হয়নি। শহরে নিরাপত্তাও বিঘ্নিত হয়নি। তবুও পুলিশ নিরাপত্তা নিয়ে কোনও খামতি রাখতে চাইছে না। আজ রাস্তায় থাকছে সাড়ে চার হাজার পুলিশ। শহরে ত্রিস্তুরীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে পুলিশ। মঞ্চ এবং সংলগ্ন চত্ত্বর জুড়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন থাকবে। পুলিশ সূত্রে খবর, মূল মঞ্চ ভিভিআইপি জোনের মধ্যে থাকবে। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও যুগ্ম পুলিশ কমিশনার পদমর্যাদার আধিকারিকরা থাকবেন। এছাড়া ৩০ জন ডিসি পদমর্যাদার অফিসাররা থাকবেন। এছড়া ৭০জন এসি, ১৫০ জন ইন্সপেক্টর থাকছেন ধর্মতলা চত্বর জুড়ে।
শিয়ালদহ, হাওড়া, শ্যামবাজার, গিরিশপার্ক, পার্ক সার্কাস সেভেন পয়েন্ট থেকে বেশ কয়েকটি বড় মিছিল ধর্মতলা মঞ্চের দিকে আসবে। মিছিলে যাতে সুষ্ঠভাবে আসতে পারে তার জন্য পুলিশের নজরদারি থাকছে। সমাবেশে যোগ দিতে আসা সমস্ত মিছিলকে এসকর্ট করবেন একজন করে এসি এবং ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার আধিকারিক। শহরজুড়ে থাকছে ৩২টি হেল্প ডেস্ক। ধর্মতলা চত্বর মুড়ে ফেলা হচ্ছে একাধিক ওয়াচ টাওয়ারে। রাখা হয়েছে কুইক রেসপন্স টিম। ধর্মতলা চত্বরে পুলিশের সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। সভা ঘিরে অতিরিক্ত সিসিটিভির ক্যামেরাও লাগানো হয়েছে। অস্থায়ী কন্ট্রোল রুম থেকে নজরদারি চালাবে লালবাজার। বিভিন্ন পয়েন্টে থাকবে মেডিক্যাল ক্যাম্প। কলকাতা পুলিশের বেশকিছু অ্যাম্বুলেন্সও থাকছে। শহিদ দিবসের দিন নিত্যযাত্রীদের সহায়তরা জন্য পুলিশের দুটি মোবাইল নম্বর চালু করা হয়েছে। রাস্তায় বেড়িয়ে কোথাও কোনও সমস্যায় পড়লে নিত্যযাত্রীরা ৯৮৩০৮১১১১১/৯৮৩০০১০০০০ এই নম্বরে ফোন করতে পারবেন। এছাড়া রয়েছে টোল ফ্রি নম্বর ১০৭৩। এছাড়া ১২টি রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াড ও পর্যাপ্ত সংখ্যাক পিসিআর ভ্যান থাকছে। জলপথেও নজরদারি থাকছে। কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা টিম ও ডুবুরিরা থাকছে।
একুশে জুলাই বৃষ্টির ভ্রুকুটি দিয়ে রেখেছে আবহাওয়া অফিস।কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা ও মাঝারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। বৃষ্টির জল নামাতে প্রস্তুত রয়েছে কলকাতা পুরসভার নিকাশি দপ্তর। সভাস্থল ও তার আশপাশে ১০টি ওয়াটার পকেট চিহ্নিত করা হয়েছে। সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের উপর গিরিশ পার্ক মোড়, মহম্মদ আলি পার্ক, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ ও এমজি রোডের সংযোগস্থল, কোলুটোলা মোড়, ইডেন হাসপাতালে থাকছে গালিপিট এমটিয়ার, জেড কাম সাকশান মেশিন। বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট, সিআর এভিনিউয়ে সংযোগস্থলে থাকছে গালিপিট এমটিয়ার মেশিন, ব্লো ভ্যাক মেশিন। যোগাযোগ ভবনের কাছে চাঁদনি মেট্রো স্টেশনের বাইরে, ভিক্টোরিয়া হাউজের কাছে থাকছে গালিপিট এমটিয়ার মেশিন। ভারতীয় জাদুঘর, পিটিএসের কাছেও রাখা হয়েছে জেড কাম সাকশন মেশিন,গালিপিট এমটিয়ার, ব্লো ভ্যাক মেশিন। যাতে বৃষ্টি হলে দ্রুত জল নামানো যায়। সভা শেষ হলে পুরসভার কর্মীরা দ্রুত শহরকে জঞ্জালমুক্ত করে তুলবে।