অনলাইনে বন্ধুত্ব করার টোপ, ৯০ হাজার টাকা খোয়ালেন ক্রান্তির বধূ, পুলিসের দ্বারস্থ
বর্তমান | ২১ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: প্রথমে অনলাইনে বন্ধুত্ব তৈরির প্ল্যাটফর্মে যোগ দেওয়ার আবেদন। সেই আবেদনে সাড়া দিতেই ভিডিও কল। বিনিময়ে মোটা টাকা দেওয়ার টোপ। বন্ধুত্ব গাঢ় হতেই শুরু ব্ল্যাকমেল। আর তারপর সবটা ফাঁস করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা হাতানো শুরু। সাইবার প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে ৯০ হাজার টাকা খুইয়ে জলপাইগুড়িতে সাইবার পুলিসের দ্বারস্থ হলেন ডুয়ার্সের ক্রান্তি এলাকার এক বধূ।
রবিবার ওই বধূ বলেন, অবসর সময় কাটাতে মোবাইলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও দেখছিলাম। সেখানেই একটা ভিডিওতে দেখি, বন্ধুত্ব করে টাকা আয় করা যাবে। কৌতুহলবশত ক্লিক করতেই কিছুক্ষণ পর আমার কাছে ফোন আসে। প্রথমে ভয়েস কল দিয়ে শুরু হলেও পরে ভিডিও কল আসতে থাকে। হিন্দি ভাষায় আমার সঙ্গে একজন পুরুষ কথা বলেন। তার সঙ্গে বন্ধুত্ব চালিয়ে গেলে আমার অ্যাকাউন্টে ৫০ লক্ষ টাকা ঢুকবে বলে টোপ দেন ওই ব্যক্তি। টাকার অঙ্ক শুনে কিছুটা লোভে পড়ে গিয়েছিলাম। আর তাতেই আমার সর্বনাশটা হল।
ওই বধূর দাবি, কয়েকদিন ভিডিও কলে কথা বলার পর আচমকা তা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ভয়েসকলে তাঁকে চাপ দেওয়া হতে থাকে।
ভিডিও এবং কথোপকথন ফাঁস করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাঁর কাছে টাকা চাওয়া হয়। তাঁর স্বামী ভিনরাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন। দুই সন্তান নিয়ে বাড়িতে একা থাকেন বধূ। তিনি বলেন, ভয় পেয়ে আমি ফোনের অপরপ্রান্তে থাকা ব্যক্তির চাহিদামতো টাকা দিতে থাকি। বধূর দাবি, ‘স্বামী বাইরে যাওয়ার আগে বাড়িতে টাকা রেখে গিয়েছিল। সেই টাকা নিয়ে সাইবার কাফেতে যাই। সেখান থেকে অনলাইনে ওই ব্যক্তিকে টাকা পাঠাই। ছ’বারে আমি মোট ৯০ হাজার টাকা দিই।’
বধূর স্বামী বলেন, ‘আমি পুনেতে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করতে গিয়েছিলাম। স্ত্রীর সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার কথা জানতে পেরে বাড়ি ফিরেছি। টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করে সাইবার ক্রাইমে ইতিমধ্যেই অভিযোগ দায়ের করেছি। আমাদের অভিযোগ নথিভুক্ত হয়েছে বলে মোবাইলে মেসেজ এসেছে। এদিন জলপাইগুড়ি সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। পুলিস বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
জলপাইগুড়ি সাইবার থানায় দায়ের করা লিখিত অভিযোগে ওই বধূ জানিয়েছেন, গত ৫ জুলাই সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিওতে ক্লিক হয়ে যেতেই তাঁর মোবাইলে ফোন আসে। একজনের সঙ্গে কথা হয়। কিছুদিন কথা হওয়ার পর কিছুটা বিশ্বাস অর্জন হতেই ওই ব্যক্তি বধূকে ৫০ লক্ষ টাকা দেওয়ার টোপ দেন। এজন্য বধূকে ৯০ হাজার টাকা পাঠাতে বলেন। ওই ব্যক্তির কথায় বিশ্বাস করে ক্রান্তির বধূ ১০ জুলাই ৪০ হাজার টাকা, ১১ জুলাই আরও ৪০ হাজার টাকা এবং ১৩ জুলাই ১০ হাজার টাকা অনলাইনে পাঠান। বধূ বলেন, এরপর যখন ওই ব্যক্তি আরও টাকা চায়, তখন বুঝতে পারি, আমি প্রতারণার শিকার হয়েছি। এরপরই আমি বিষয়টি স্বামীকে জানাই। স্বামী এলে এনিয়ে পুলিসের দ্বারস্থ হই।