• বৃষ্টির জেরে পাহাড়ের বহু জায়গায় ধস নামল, বিঘ্নিত বিদ্যুৎ পরিষেবা, দু’দিন পর খুলল সিকিমগামী জাতীয় সড়ক
    বর্তমান | ২১ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: দু’দিন পর খুলল ধস বিধ্বস্ত ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। রবিবার বিকেলে বিরিকদারা থেকে ধস সরানো হয়েছে। তা হলেও ওই জাতীয় সড়ক দিয়ে শিলিগুড়ির সঙ্গে কালিম্পং ও সিকিমের সড়ক যোগাযোগ পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। এদিকে রাতভর বৃষ্টির জেরে দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ের বেশকিছু জায়গায় নতুন করে ধস নেমেছে। এতে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়েছে। কিছু বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরিস্থিতির মোকাবিলায় নেমেছে প্রশাসন।

    শুক্রবার সকালে ধসে বিধ্বস্ত হয় কালিম্পং ও সিকিমের লাইফ লাইন ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের বিরিকদারা। সেখানে পাহাড়ের উঁচু উপত্যকা থেকে মাটি, নুড়ি, বোল্ডার হুড়মুড়িয়ে নেমে আসে। ওইদিন থেকেই রাস্তাটি বন্ধ হয়ে যায়। শনিবার ফের সেখানেই নামে ধস। ওইদিন কালীঝোরার কাছেও জাতীয় সড়কের উপর ধসে পড়ে মাটি। এরজেরে শিলিগুড়ির সঙ্গে কালিম্পং ও সিকিমের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তবে রবিবার সড়কের উপর নতুন করে ধস নামেনি। দিনভর সড়কের ধস সরিয়েছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। এদিন বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ রাস্তাটি খুলে দেওয়া হয়েছে।

    স্থানীয়দের একাংশ বলেন, ধসে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাটি খুললেও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। ধস বিধ্বস্ত এলাকা দিয়ে একটি করে যানবাহন ধীরগতিতে পাস করানো হচ্ছে। কালিম্পংয়ের জেলাশাসক বালাসুব্রহ্মণ্যম টি বলেন, ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের বিরিকদারা থেকে ধস সরানো হয়েছে। সেখানে একমুখী যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে। কালিম্পংয়ের পুলিস সুপার শ্রীহরি পাণ্ডে বলেন, যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে পুলিস মোতায়েন করা হয়েছে।

    এদিকে, শনিবার রাতে কালিম্পং ও দার্জিলিং পাহাড়ে বিক্ষিপ্তভাবে জোর বৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দার্জিলিংয়ে ৪০ এবং কালিম্পংয়ে ৩৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এরজেরে দুই পাহাড়েই নতুন করে ধসের জেরে কিছু এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফের ধস বিধ্বস্ত হয় লাভা-গোরুবাথান রাস্তার পাপড়খেতি। কালিম্পংয়ের জেলাশাসক বলেন, জেলায় ছোট ছোট কিছু ধস নামার ঘটনা ঘটেছে। এতে কয়েকটি বাড়ি আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই তালিকা তৈরির কাজ চলছে। ধস কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক করা হয়েছে। তবে রাস্তা কোথাও বন্ধ নেই। সমস্ত রাস্তা থেকেই ধস সরানো হয়েছে।

    দার্জিলিং ও কার্শিয়াং পাহাড়ের একাধিক গ্রামও ধসে বিধ্বস্ত। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃষ্টির জেরে এদিন সকালে দার্জিলিংয়ের চৌরাস্তায় একটি গাছ পড়ে যায়। এরজেরে কিছুক্ষণ রাস্তা বন্ধ ছিল। এরবাইরে রংলিরংলিয়ট, তাগদা, সুখিয়াপোখরি, কার্শিয়াংয়ের লংভিউ, পাঙ্খাবাড়ি প্রভৃতি এলাকায় একাধিক গাছ পড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হয়েছে। কোথাও বিদ্যুতের খুঁটি বিপজ্জনকভাবে হেলে গিয়েছে। আবার কোথাও বিদ্যুতের তার ছিড়ে গিয়েছে। দিনভর এলাকাগুলিতে বিদ্যুৎ ছিল না। দার্জিলিংয়ের মহকুমা শাসক রিচার্ড লেপচা বলেন, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পরিস্থিতির মোকাবিলা করছে বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি। অধিকাংশ জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে। কার্শিয়াং মহকুমা প্রশাসনেরও একই দাবি।  ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে পাথর সরানোর কাজ চলছে।-ফাইল চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)