• টানা বৃষ্টির জেরে জেলায় আমন ধান চাষের জমির পরিমাণ বাড়ছে, রিপোর্ট
    বর্তমান | ২১ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির জেরে নদীয়া জেলায় আমন ধানের চাষ বাড়তে চলেছে। এমনটাই মনে করছে কৃষিদপ্তর। গত ২৪ঘণ্টায় জেলাজুড়ে রেকর্ড প্রায় ৪৫মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। একাধিক নিচু কৃষিজমি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ধানচাষিদের মুখে এখন স্বস্তির হাসি।

    তবে এবার বর্ষায় ইতিমধ্যেই জেলায় ১০০০মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। বর্ষাকালে গড় বৃষ্টি হয় ১২৫০মিলিমিটার। তাই আগামী আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে বৃষ্টি হলে এবার জেলার গড় বৃষ্টিপাতকে ছাড়িয়ে যাবে।

    কৃষিদপ্তর জানিয়েছে, এখন জেলার আবহাওয়া আমন ধান চাষের পক্ষে খুব অনুকূল। জেলায় অতিরিক্ত কয়েকহাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হবে বলে দপ্তরের অনুমান। বিশেষত তেহট্ট মহকুমায় ধান চাষ অনেকটাই বাড়তে পারে।

    জেলা সহ-কৃষি অধিকর্তা জয়দীপ মজুমদার বলেন, এমন আবহাওয়া বজায় থাকলে এবছর আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। তেহট্ট মহকুমায় অতিরিক্ত জমিতে ধান রোপণের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

    খারিফ মরশুমে নদীয়া জেলায় প্রায় ১ লক্ষ ২৩ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে। তার মধ্যে ২৪ হাজার ৪০০হেক্টর জমিতে আউশ ধান চাষের পরিকল্পনা ছিল। ইতিমধ্যে ২৪ হাজার ২০০হেক্টর জমিতে আউশ চাষ সম্পন্ন হয়েছে। ৯৮ হাজার ৪০০হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। জুলাইয়ের মাঝামাঝি অবধি ১২০০হেক্টর জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ করা হয়েছে। আগস্ট মাসের মাঝামাঝি অবধি আমন ধান চাষ হতে পারে। কৃষিদপ্তর আশা করছে, অনুকূল পরিস্থিতি বজায় থাকলে এবার ১ লক্ষ ১০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হতে পারে। বৃষ্টির কারণে পাটচাষেও আশার আলো দেখা গিয়েছে। চলতি বছর নদীয়ায় প্রায় ৯০হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। অতিবৃষ্টির কারণে নয়ানজুলি, পুকুরে জল জমেছে। ফলে চাষিদের পাট পচাতে সুবিধা হবে। অতীতে নদীয়া জেলায় বৃষ্টির ঘাটতির কারণে পাট চাষ ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছিল। সেজন্য এবার ৭০০০হেক্টরের বেশি জমিতে কৃষকরা পাটচাষ করেননি।

    পাট তোলার পর তেহট্ট মহকুমায় সাধারণত কলাই চাষ করা হয়। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি কলাই চাষের পক্ষে অনুকূল নয়। তাই ওই জমিতেই ধান চাষের দিকে ঝুঁকছেন কৃষকরা।‌ তবে কৃষি বিশেষজ্ঞরা জানান, লাগাতার অতিবৃষ্টি চলতে থাকলে জমির ক্ষতি হতে পারে। তাই এখন থেকেই উপযুক্ত জলনিকাশির ব্যবস্থা রাখা জরুরি।তেহট্টর চাষি মঞ্জুর শেখ বলেন, প্রতি বছর পাট পচানো নিয়ে আমাদের উদ্বেগে থাকতে হয়। তবে এবার বৃষ্টি হওয়ায় পাট পচাতে সুবিধা হবে। তারপর সেই জমিতে ধান চাষ করব।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)