বালকের মূত্রথলিতে জোঁক মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে সফল অস্ত্রোপচার
বর্তমান | ২১ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে সফল অস্ত্রোপচার করে এক বালকের প্রাণ বাঁচালেন চিকিৎসকেরা। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ১১ বছরের এক বালক পেটের নীচের অংশে অসম্ভব যন্ত্রণা নিয়ে মেডিক্যাল কলেজের ইমার্জেন্সিতে আসে। চিকিৎসকরা যন্ত্রণার সম্ভাব্য কারণ খুঁজে চিকিৎসা শুরু করেন। তবে কিছুতেই যন্ত্রণা কমছিল না। সঠিক কারণ জানতে চিকিৎসক দ্রুত ইউএসজি করতে বলেন। ইউএসজি করতেই চিকিৎসকদের চোখ কপালে ওঠে। দেখা যায়, ওই বালকের মূত্রথলির ভিতরে রয়েছে আস্ত একটি জোঁক! সেটি জীবন্ত এবং নড়াচড়া করছে। ক্রমশ সেটি রক্ত শুষে আকারে বড় হতে থাকে। এরপরই দ্রুত অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। ঘণ্টাখানেকের অস্ত্রোপচারের পর জোঁকটিকে বের করা হয়। বর্তমানে ওই বালক সম্পূর্ণ সুস্থ ও স্বাভাবিক আছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
জানা গিয়েছে, খড়গ্রামের শাদলের রানিগ্রামের বাসিন্দা ওই বালক গত বৃহস্পতিবার দুপুরে পুকুরে নেমে স্নান করে। তার কিছুক্ষণ পর থেকেই তলপেটের নীচের দিকে তীব্র যন্ত্রণা শুরু হয়। স্নানের সময় মূত্রনালির খোলা অংশ দিয়ে কোনওভাবে জোঁকটি প্রবেশ করেছিল ইউরিনারি ব্লাডারের ভিতরে। এটি ক্রমশ রক্ত শুষে বড় হয়ে যাচ্ছিল। চিকিৎসকেরা একদম সময় নষ্ট না করে দ্রুত ওইদিন মধ্যরাতে ফ্যানেনস্টিয়েল ইনসিশনের মাধ্যমে ওপেন সিস্টোস্টমি কৌশলে দ্রুত সেটি বের করে আনেন। তারপর ওই বালক দু’দিন অবজার্ভেশনে ছিল। এখন সে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক আছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক অমিত বড়ুয়া বলেন, লোয়ার অ্যাবডোমেনে তীব্র যন্ত্রণা নিয়ে ওই বালককে তার মা-বাবা ইমার্জেন্সিতে নিয়ে আসেন। জোঁকটিকে দ্রুত বের করার জন্য ওপেন সিস্টোস্টমি পদ্ধতিতে অস্ত্রোপচার করা হয়। সেটি আকারে বড় হয়ে যাচ্ছিল। ঘণ্টাখানেক ধরে অস্ত্রোপচার চলে। এখন ও সম্পূর্ণ সুস্থ আছে। ইউরিন ক্লিয়ার হচ্ছে। পুকুরে স্নান করতে গিয়ে জোঁকটি গোপনাঙ্গ দিয়ে ভিতরে ঢুকে যায়। বর্ষার সময় পুকুরে এবং জলাশয়ে স্নান করার সময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। মেডিক্যালের অন্যান্য চিকিৎসকরা বলেন, খুব বড় বিপদ থেকে ওই বালককে রক্ষা করা গিয়েছে। ওপেন সিস্টোস্টমি হল এমন এক পদ্ধতি যার মাধ্যমে মূত্রাশয়ে একটি খোলা অংশ তৈরি করা হয়। এখানেও সেই একইভাবে জোঁকটিকে বের করে আনা হয়। মেডিক্যাল কলেজের সুপার অনাদি রায়চৌধুরী বলেন, সকলের ঐকান্তিক চেষ্টায় সফলভাবে অস্ত্রোপচার হয়েছে। বালকটির অবস্থা এখন স্থিতিশীল। তাকে আমরা এখনও নজরদারিতে রেখেছি। -নিজস্ব চিত্র