• কলেজের ছাত্র অস্থায়ী কর্মী কি হতে পারেন? জানতে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি
    বর্তমান | ২১ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: কলেজের ছাত্র কি সেই কলেজে অস্থায়ী কর্মী হতে পারেন? এই প্রশ্নের উত্তর চেয়ে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি দিল নন্দীগ্রাম সীতানন্দ কলেজের গভর্নিং বডি। ওই কলেজের টিএমসিপির ইউনিট প্রেসিডেন্ট সুমিত মণ্ডল ২০২২সাল থেকে ফার্স্ট সেমেস্টারের ছাত্র। তিনি আবার কলেজের অস্থায়ী কর্মীও। যদিও প্রিন্সিপাল সামু মাহালির বক্তব্য, দিনে দু’বার দলবল নিয়ে তাঁর অফিসে চড়াও হয়ে প্রাণের ভয় দেখিয়ে নিয়োগপত্র নেওয়া হয়েছিল। কসবা ল’কলেজের মনোজিৎ কাণ্ড সামনে আসার পরই পূর্ব মেদিনীপুরের একাধিক কলেজে ইউনিয়ন নেতাদের চাকরির পাওয়ার গোপন রহস্য সামনে আসে। সেইসঙ্গে ছাত্রনেতা সুমিতের কাহিনিও সর্বসমক্ষে চলে আসে। প্রিন্সিপাল হাটে হাঁড়ি ভেঙে দেন। এরপরই ১৭জুলাই কলেজের গভর্নিং বডির মিটিং বসেছিল। সেখানে ঠিক হয়েছে, কলেজের ছাত্র সংশ্লিষ্ট কলেজের কর্মী হতে পারেন কি না এনিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উত্তর চাওয়া হবে। সেই উত্তর মতো পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

    গভর্নিং বডির প্রেসিডেন্ট আবু তাহের বলেন, আমি একটি ফৌজদারি মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশে প্রায় দু’বছর জেলার বা‌ই঩রে ছিলাম। সেইসময় প্রিন্সিপালের উপর চাপ তৈরি করে দু’জন অস্থায়ী কর্মী হিসেবে নিয়োগপত্র নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সুমিত আবার কলেজে পড়াশোনা করেন। কলেজের ছাত্র সেই প্রতিষ্ঠানে কর্মী থাকতে পারেন কি না, তা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছি।

    কসবা ল’কলেজের ঘটনার পরই পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় একের পর এক কলেজে ইউনিয়নের নেতাদের ঢালাও নিয়োগের ঘটনা সামনে আসে। রামনগর থেকে মুগবেড়িয়া, এগরা থেকে বাজকুল সর্বত্র কলেজে কর্মী নিয়োগে চূড়ান্ত স্বজনপোষণের অভিযোগ ওঠে। কিন্তু, সব ঘটনাকে ছাপিয়ে গিয়েছে নন্দীগ্রাম সীতানন্দ কলেজের ঘটনা। এখানে প্রিন্সিপালের অফিসে সিসি ক্যামেরা ভেঙে তাঁকে প্রাণের ভয় দেখিয়ে নিয়োগপত্র আদায় করা হয়েছে। ২০২২সালে থেকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা সুমিত একই সেমেস্টারে পড়াশোনা করছেন। চারবার রেজিস্ট্রেশন করিয়েছেন। এছাড়া আরও বেশ কয়েকজন ছাত্রনেতা পাঁচ-ছ’বছর আগে কলেজ পাশ করার পর ফের ভোকেশনাল কোর্সে ভর্তি হয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দাদাগিরি করে যাচ্ছেন।

    সুমিতের ঘটনা সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরই অস্বস্তিতে পড়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ। তড়িঘড়ি গভর্নিং বডির সভা ডাকা হয়। সেখানে সুমিত সহ আরও এক ছাত্রনেতার নিয়োগ নিয়ে আলোচনা হয়। কারণ, তাঁদের নিয়োগপত্র দেওয়া হলেও গভর্নিং বডির অনুমোদন ছিল না। সুতরাং গভর্নিং বডি অনুমোদন দেবে কি না, তা নিয়ে বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে ঠিক হয়, গভর্নিং বডি স্বতঃপ্রণোদিত কোনও পদক্ষেপ নেবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি চিঠি পাঠানো হবে। তারভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সেইমতো ইউনিভার্সিটিতে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

    এনিয়ে সুমিত বলেন, জোর করে নিয়োগপত্র নেওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়। আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া এক ছাত্রের পাশে দাঁড়াতে কলেজ কর্তৃপক্ষ নিয়োগপত্র দিয়েছিল। গভর্নিং বডি সেই নিয়োগে অনুমোদন দেবে কি না, সেটা তাদের নিজস্ব বিষয়।
  • Link to this news (বর্তমান)