• সেদিন মাকে বলেছিলাম, নতুন বাংলা গড়বে দিদি
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ২১ জুলাই ২০২৫
  • স্বপন ব্যানার্জি, মুখ্যমন্ত্রীর ছোটভাই

    যুবনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহ্বানে ‘মহাকরণ চলো’ ডাকে সেদিন গর্জে উঠেছিল যুব ব্রিগেড। মৃত্যুকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে পথে নেমেছিল যুব সমাজ। অত্যাচারী-হিংস্র শাসকগোষ্ঠীকে উৎখাত করতে মিছিলে সাবধান হয়েছিলেন সেদিন বাংলার মানুষ। সবাই জানতেন নতুন বাংলাকে উপহার দিতে পারবেন আজকের মুখ্যমন্ত্রী, সেই সময়ের যুবনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেদিনটা ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই। গণ অভ্যুত্থানের দিনটা। সকাল থেকেই কলকাতায় বিভিন্ন জায়গা থেকে মহাকরণের উদ্দেশ্যে মিছিল এগিয়ে চলে। বর্বর শাসকগোষ্ঠীকে উপড়ে ফেলে দিতে হবে। প্রহসনে পরিণত করা চলবে না। জন কল্লোলে উত্তাল কলকাতার রাজপথ। আমরা তরুণ ব্রিগেড কালীঘাট থেকে রওনা দিলাম। একটু বেলা হতেই সেই মিছিলে মানুষের ভিড়।

    পায়ে হেঁটে এগিয়ে চলেছি আমরা সবাই। মেয়ো রেডের মুখে আমাদের মিছিলকে আটকিয়ে দিল পুলিশ। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যায়োর চেষ্টা করতে থাকি। পুলিশ লাঠি উচিয়ে তাড়া করার নাম করে বেধড়ক মারতে শুরু করে। তবুও আমরা পিছিয়ে থাকিনি আন্দোলন থেকে। আবার মহাকরণের দিকে এগিয়ে যাওয়ার মুখে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে থাকে। কাঁদানে গ্যাসে চোখ ধোয়াশা হয়ে যায়। জলে রুমাল ভিজিয়ে চোখ মুছে আমরা আবার এগিয়ে যাই। ঠিক সেই সময়ে আমার বুকে একটা ইট লাগে। পথেই বসে পড়ি। সেখান থেকে বন্ধুরা তুলে নিয়ে এসে সুস্থ করতে চেষ্টা করে। আর তখনই শুনলাম পুলিশের গুলিতে বেশ কয়েকজন বন্ধু প্রাণ হারিয়েছেন। ছুটে যাই হাসপাতালে। কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরতেই মা আমাকে জড়িয়ে ধরে বুকে মাথা দিয়ে মাকে বলেছিলাম, দিদির এই আন্দোলনই নতুন বাংলা গড়বে।

    সত্যিই তাই। ২০১১ সালে মা-মাটি-মানুষের নতুন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলার মানুষ নতুন আলো দেখেছে। কোনও শক্তি বংলার মানুষকে ভয় দেখাতে পারবে না। মা-মাটি-মানুষ আমাদের শক্তি। আমাদের হাতিয়ার। আমাদের আত্মবিশ্বাস।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)