এলাকা ছেয়ে যাক সবুজে। তাদের বোনা বীজ থেকে জাত গাছে ভরে উঠুক প্রকৃতি। সেই স্বপ্নে বুঁদ থেকে বীজ সংগ্রহ করেছিল চার বন্ধু। একটা দুটো নয়, প্রায় দশ হাজার বীজ। মাল আদর্শ বিদ্যাভবনের পঞ্চম শ্রেণির চার ছাত্র— শ্রেয়ান দত্ত, মহম্মদ আসিফ, সৌম্যদীপ পাল ও দেবাংশু বণিকের ওই কীর্তি তারিফ কুড়িয়েছে সকলের। পরে সেই বীজ যখন নদীপারে, বনাঞ্চলে ছড়িয়ে দেওয়া হল, তখন তৃপ্তি ঝরে পড়েছে চার বন্ধুর চোখেমুখে।
রবিবার মালবাজার অভিভাবক মঞ্চের বীজ ছড়ানোর কর্মসূচি ছিল। অভিভাবক মঞ্চ এ বার বার্তা দিয়েছিল সকলকে ফলের বীজ সংগ্রহ করতে। স্কুলের মাধ্যমে চার বন্ধু শুনেছিল সে কথা। তার পরে আর থামেনি ওরা। চার বন্ধু মিলে সংগ্রহ করে আম, লিচু, কাঁঠাল, জাম ইত্যাদি ফলের প্রায় দশ হাজার বীজ। তাদের মতো আরও অনেক পড়ুয়া বীজ সংগ্রহ করে। জলপাইগুড়ি বন দফতরের চালসা রেঞ্জ তত্ত্বাবধানে সেই বীজ মেটিলি ব্লকের খড়িয়ার বন্দর বনাঞ্চল, নেওড়া নদী তীরে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এ দিনের কর্মসূচিতে মাল আদর্শ বিদ্যাভবন ছাড়াও সিজার স্কুল, উপর চালসার সরিফুল পাবলিক অ্যাকাডেমি স্কুল, সুভাষিণী উচ্চতর বালিকা বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা যোগ দিয়েছিল। প্রথমে চালসা রেঞ্জ কার্যালয়ে থেকে চালসা বাজার পর্যন্ত সচেতনতামূলক পদযাত্রা হয়। তার পরে বীজ ছড়ানোর কর্মসূচি চলে।
শ্রেয়ান, আসিফ, সৌম্যদীপ ও দেবাংশুরা বলে, ‘‘বীজ জোগাড় করতে পেরে খুব খুশি। আমরা সেগুলি ছড়িয়েও দিলাম। পরে গাছ বড় হলে দেখব।’’ দৈবায়ত্ত সরকার, অরিন বন্দোপাধ্যায়ের মতো খুদেরা বলে, ‘‘আমরা গোটা বছরই ফলের বীজ সংগ্রহ করে রাখার চেষ্টা করব।’’
মালবাজার অভিভাবক মঞ্চের সম্পাদক দীপঙ্কর সরকারের কথায়, ‘‘বনাঞ্চলে বন্যপ্রাণীদের খাবারের উপযোগী গাছ বেশি প্রয়োজন। তা হলে ওরাও হয়তো লোকালয়ের দিকে বেশি আসবে না।’’
পরিবেশ কর্মী মানবেন্দ্র দে সরকার বলেন, ‘‘স্কুল পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের এমন অভিনব উদ্যোগকে কুর্নিশ জানাই।’’